Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভোটের এজেন্টের নাম আগাম জানানো নিয়ে আপত্তি

পুরভোটে নির্বাচনের দিন বিভিন্ন বুথে প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট কারা হবেন তা ভোটের ৮ দিন আগে জানাতে বলায় আপত্তি তুলল বিরোধী দলগুলি। সোমবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে পুর নির্বাচনের প্রার্থী এবং তাঁদের এজেন্টদের বিভিন্ন তথ্য জানাতে মহকুমাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসারের দফতরের তরফে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানেই জানানো হয়, বুথে কোনও প্রার্থীর ১ জন এজেন্ট থাকবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ০৩:১৮
Share: Save:

পুরভোটে নির্বাচনের দিন বিভিন্ন বুথে প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট কারা হবেন তা ভোটের ৮ দিন আগে জানাতে বলায় আপত্তি তুলল বিরোধী দলগুলি।

সোমবার শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চে পুর নির্বাচনের প্রার্থী এবং তাঁদের এজেন্টদের বিভিন্ন তথ্য জানাতে মহকুমাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসারের দফতরের তরফে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানেই জানানো হয়, বুথে কোনও প্রার্থীর ১ জন এজেন্ট থাকবেন। তিনি কোথাও গেলে তার পরিবর্তে থাকার জন্য আরও দুই জন ‘রিলিফ এজেন্ট’ থাকবেন। তাঁদের মধ্যে কেউ সে সময় থাকবেন। প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট কারা হবেন ১৭ এপ্রিল তা নির্দিষ্ট ফর্মে (ফর্ম-১১) জানাতে হবে। সেই মতো ২০ এপ্রিল তাদের রিটার্নিং অফিসারের দফতর থেকে অথবা দায়িত্বে থাকা ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের থেকে তাদের কার্ড নিতে হবে। তা নিয়েই আপত্তি তোলেন শঙ্কর ঘোষ, মুকুল সেনগুপ্ত-সহ অনেক প্রার্থী এবং তাদের লোকজনরা। তাঁদের অভিযোগ, আগাম পোলিং এজেন্টদের নাম জানানো হলে তাঁরা বিপাকে পড়বেন। অনেকে এলাকায় থাকতে পারবেন না। তাঁদের উপর হামলা হতে পারে। তাই তাঁরা কেউই আগাম নাম জানাতে চান না। এতদিন পোলিং এজেন্ট কারা হবেন ভোটের দিন ‘মক পোল’-এর আগে প্রিসাইডিং অফিসারকে তা দেওয়া হত। তিনি তা অনুমোদন করে দিতেন। সেই নিয়ম কার্যকর রাখার দাবি তোলা হয়।

মহকুমাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসার দীপাপ প্রিয়া বলেন, “প্রাথমিক কিছু তথ্য জানাতে এ দিন বৈঠক ডাকা হয়েছে। এই নিয়ে ৩টি বৈঠক হল। আজ, যে নির্বাচনের দিন যাতে পোলিং এজেন্টের নাম দেওয়া যায় ওই দাবি এবং তা নিয়ে যে সমস্যার কথা প্রার্থী এবং তাদের লোকেরা জানালেন তা নির্বাচন কমিশনে জানানো হবে। সেখান থেকে সে নির্দেশ আসবে তা সকলকেই যথাযথভাবে জানানো হবে।”

নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক তথা প্রদীপ দাস, বীরুপাক্ষ মিত্ররা বোঝাতে চেষ্টা করেন নির্বাচন দফতর থেকে যে নিয়ম বলা হয়েছে তা তাঁরা প্রার্থীদের জানাচ্ছেন। তবে প্রার্থীদের যাতে সমস্যা না হয় তা দেখা হবে। কিন্তু সমস্যা মেটাতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে নিশ্চিত করে তারা তা জানাতে পারেননি। প্রশ্ন ওঠে কাউন্টিং এজেন্ট থাকা নিয়েও। এ দিন জানানো হয়, গণনার সময় কোনও দলের একজন প্রার্থী অথবা তার ইলেকশন এজেন্ট অথবা কাউন্টিং এজেন্ট থাকতে পারবে। তা নিয়েও আপত্তি তোলেন প্রার্থীদের একাংশ-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। তাদের দাবি, প্রার্থী, তাঁর ইলেকশন এজেন্ট এবং কাউন্টিং এজেন্ট তিন জনেই এতদিন থাকতেন। সেই নিয়ম কী বদলানো হল। প্রতীপবাবু জানান, গণনা কেন্দ্রে বেশি জায়গা থাকবে না। সে জন্য এক জনকে থাকার কথা বলা হচ্ছে। তবে ইলেকশন এজেন্ট বা কাউন্টিং এজেন্ট থাকলেও তাঁর সঙ্গে প্রার্থী যাতে থাকতে পারেন তা দেখা হবে। প্রার্থীদের কয়েক জন জানান, ‘দেখা হবে, হতেও পারে বললে চলবে না। কী হবে তা স্পষ্ট করে বলতে হবে।’ আধিকারিকরা জানান, গণনা কেন্দ্র কোথায় হবে তা এখনএও চূড়ান্ত হয়নি। বয়েজ হাই স্কুলে প্রাথমিক ভাবে করার কথা হলেও সেখানে যাতায়াতের রাস্তা সরু বলে ট্রাফিক সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর পর প্রধাননগরে মার্গারেট স্কুলে গণনা কেন্দ্র করার চিন্তা ভাবনা হয়েছে। তবে তা এখনএও চূড়ান্ত হয়নি।

সিপিএম প্রার্থী শঙ্করবাবু-সহ কয়েকজন আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে জানান আপনারা নিজেরাই ঠিক মতো জানেন না তা হলে কেন বৈঠক ডাকা হয়েছে। শঙ্করবাবু বলেন, “আমি প্রথম বার প্রার্থী হয়েছি। আমনাদের সভায় এসেছি আপনারা বিষয়গুলি জানাবেন।কিন্তু আপনারা পরিষ্কার উত্তর না দিনে কৌশল করছেন। তা হলে কেন বৈঠক ডাকা হয়েছে?” অনেকের অভিযোগ, প্রার্থীদের যাতে সমস্যা না হয় তা দেখা হবে বলা হচ্ছে। অথচ ভোটের দিন আগের মতো পোলিং এজেন্টের নাম দিতে গেলে তখন ওই আধিকারিকরাই বলবেন প্রার্থীদের ডেকে নিয়ম আগেই জানানো হয়েছে। এখন পোলিং এজেন্ট দেওয়া যাবে না। তখন কী হবে? তাই বিষয়টি স্পষ্ট করে অবিলম্বে জানানো হোক।

এ দিন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকরা জানিয়ে দেন কোনও ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার পর্যন্ত হলে সেখান থেকে কোনও দলের প্রার্থী সর্বাধিক ৬০ হাজার টাকা খরচ করতে পারবেন। ভোটার সংখ্যা ১০ হাজারের বেশি হলে ভোটার পিছু ৬ টাকা হিসাবে তিনি খরচ করতে পারবেন। পোস্টার, লিফলেট, হোর্ডিং, ফ্লেক্স লাগালে তার নিচে কোথা থেকে তা তৈরি করা হয়েছে তা উল্লেখ করতে হবে। কোনও মিছিল মিটিংয়ের ৭২ ঘন্টা আগে জানাতে পারলে ভাল হয়। কেন না একই সময় একাধিক দল একই জায়গায় সভা করতে চাইতে পারে। আগাম জানা থাকলে সেই মতো তাদের সময় ভাগ করে দেওয়া সম্ভব হবে। বিষয়টি পুলিশ দেখবে। তা ছাড়া প্রচার মিছিলে ২ টির বেশি মোটর বাইক রাখা যাবে না। প্রচারে প্রার্থী ১টি গাড়ি এবং কোনও রাজনৈতিক দল গোটা পুর এলাকায় ১টি গাড়ি প্রচারের কাজে ব্যবহার করতে পারবে। প্রচারের সময় সীমা পার হলে ওই গাড়িতে কোনও পোস্টার, প্রতীক চিহ্ন, পতাকা লাগানো যাবে না। কোনও ভোটারকে ওই গাড়িতে করে বুথে আনা নেওয়া করা যাবে না। বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে পোস্টার, ব্যানার, পতাকা বা প্রচারের কোনও কিছু রাখা চলবে না। ২৩ এপ্রিল বেলা ৩ পর্যন্ত প্রচারের শেষ সময় সীমা ধার্য করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE