পথে: চিলাখানা হাইমাদ্রাসার পড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।
দিন কয়েক পরেই অবসর নেবেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তখন ‘টিচার ইনচার্জ’ হবেন কে, সেই প্রশ্নেই দিন কয়েক ধরে জটলা চলছিল। অবশেষে, সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের ঘনিষ্ঠ এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এমনকি, সেই সময় মন্ত্রী-পুত্র তথা কোচবিহার জেলা পরিষদের সদস্য পঙ্কজ ঘোষ সেখানে হাজির ছিলেন বলেও দাবি করা হয়েছে। পাল্টা অভিযোগ উঠেছে, সাংসদের নাম করে স্কুলের অলিখিত ‘প্রধান শিক্ষক’ হয়ে বসেছিলেন ওই শিক্ষক। মর্জিমতো স্কুলে যাতায়াত করেন। তাঁকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে স্কুলের টিচার ইনচার্জ করা হলে তিনি দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। অথচ ওই স্কুলেই সিনিয়র শিক্ষক রয়েছেন বলে দাবি অন্য পক্ষের।
তুফানগঞ্জের চিলাখানার কদমতলা উচ্চতর হাইমাদ্রাসার ওই শিক্ষকের নাম সুরেশ বর্মণ। তিনি তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের তুফানগঞ্জ ২ নম্বর ব্লকের সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, আচমকাই লাঠি-সোটা নিয়ে একদল লোক ভিতরে ঢুকে তাঁকে মারধর শুরু করে। তিনি যাঁদের নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন, তাঁরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতা। তার মধ্যে তৃণমূলের দেওচড়াই অঞ্চল সভাপতি আর এক শিক্ষক ফারুক মণ্ডলের নাম রয়েছে। সুরেশবাবু বলেন, “আমি এলাকায় যুব সংগঠনের হয়ে কাজ করি। সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ের নেতৃত্বে যুব সংগঠন মজবুত করার চেষ্টা করছি। তাই হয়তো আমাকে মারধর করা হয়েছে। এখন আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।”
স্কুল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ও ইদিন স্কুলে ম্যানেজিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। স্কুলের পাশে একটি পুকুর রয়েছে। তাতে ছাত্রছাত্রীরা মাঝে মধ্যেই চলে যায়। তাই সেই বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। এ ছাড়া টিচার ইনচার্জ নিয়েও ওই মিটিংয়ে আলোচনা হত। রবীন্দ্রনাথের অনুগামীরা দাবি করেন, ওই দিন আশপাশের কিছু অভিভাভবক সেখানে গিয়েছিলেন। পঙ্কজবাবু ওই এলাকার জেলা পরিষদের সদস্য। তাঁকেই স্কুলের তরফে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ করা হয়। সেখানে সুরেশবাবু তাঁর কথার ‘খেলাপ’ হলে ফল ভাল না হওয়ার হুমকি দিলে উত্তেজনা ছড়ায়। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ওই ঘটনায় মিথ্যে ও ভিত্তিহীন একটা অভিযোগ হয়েছে। এলাকার মানুষ বিপদে পড়েন, এমনটা কোনও ভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
সাংসদ পার্থবাবুর অনুগামীদের বক্তব্য, সুরেশবাবুর নামে আগে কখনও স্কুলে না যাওয়া বা কারও সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ ওঠেনি। তাঁর উপর হামলার পরে এমন কথা বলার মানে নেই। পার্থবাবু বলেন, “ওই বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে। যারা অন্যায় করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি।” ওই স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি সিদ্দিক আলি এবং স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌতম সরকার বিষয়টি নিয়ে কাউকে কিছু বলতে চাননি। জেলা পরিষদের সদস্য পঙ্কজবাবু বলেন, “ওই এলাকার মানুষ সব জানেন। ওই দিন অনেকেই ছিলেন সেখানে। মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy