মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে বকেয়া বিদ্যুতের বিল তুলতে তৎপর হয়ে উঠেছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন। আগামী ২১ নভেম্বর ওই বিষয় নিয়ে বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, গ্রেটার কোচবিহার পিপল অ্যাসোসিয়েশন বিদ্যুতের বিল বয়কটের ডাক দিয়েছে। তার জেরেই কোচবিহারে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা বিদ্যুতের বিল বকেয়া পড়েছে। এমনকী বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা কোথাও সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে গেলে তাঁদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় কী করে বকেয়া বিল আদায় হবে, তা নিয়ে কৌশল ঠিক করতেই ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
দফতর সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা পরিষদের সভাধিপতি ছাড়াও পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা থাকবেন। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। মন্ত্রী বলেন, “গ্রাহকদের ভুল বুঝিয়ে এমন কাজ করা হচ্ছে। প্রত্যেকের কাছে আবেদন জানানো হবে। তার পরেও কাজ না হলে আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “বকেয়া বিদ্যুতের বিল যাতে গ্রাহকরা দ্রুত পরিশোধ করে দেন সেই বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।”
অভিযোগ, বিদ্যুতের বিল বয়কটের ডাক দিয়েছেন গ্রেটার কোচবিহারের পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মণ। তিনি বর্তমানে রাজবংশী উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান, রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমীর ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। রাজ্য সরকার তাঁকে ওই পদে বসিয়েছে। এই বিষয়ে কেন সরকার বা প্রশাসন সরাসরি বিষয়টি নিয়ে বংশীবাবুর সঙ্গে কথা বলছেন না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকী গত ২৯ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে যে প্রশাসনিক বৈঠকে বিদ্যুতের বকেয়া বিল নিয়ে সতর্ক করেন সেখানে বংশীবাবু নিজেও উপস্থিত ছিলেন। অথচ তাঁকে সেই বিষয়ে কেন কিছু বলা হল না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।
বংশীবাবু অবশ্য বলেন, “কোচবিহারের কৃষকেরা কেন বিল দিচ্ছেন না তা আমরা জেলাশাসককে লিখিত ভাবে জানিয়েছি। ভারত ভুক্তি চুক্তি অনুসারে কোচবিহার ‘গ’শ্রেণির রাজ্য। কীভাবে কোচবিহার জেলা হল সেই বিষয়টি জানা প্রয়োজন। তাহলে ওই বিল কেন্দ্র না রাজ্য কোথায় দেওয়া হবে তা স্পষ্ট হবে। তার পরেই কৃষকরা বিল দেবেন।” তাঁর দাবি, যে ১৫০ কোটি টাকার বিলের কথা বলা হচ্ছে তা কৃষকদের নয়। কৃষকদের বড়জোর ১০ কোটি টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। বাকি বকেয়া কেন আদায় হচ্ছে না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রয়োজনে কৃষকদের বিল কোচবিহার ডেভেলপমেন্ট ফান্ড থেকে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “যাঁরা বিদ্যুতের বিল বয়কটের কথা বলছেন তাঁরা তো শাসকদলের সঙ্গেই আছেন। সময় হলে মানুষই এর জবাব দেবেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy