Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coochbehar

শ্রমিকদের সচেতনতা দেখে স্বস্তি

দীঘলটারির বাসিন্দা অমল জানান, আটটি ট্রাকে তাঁরা অন্তত চারশো জন কোচবিহারে ফিরেছেন। কয়েকটি ট্রাকে অসমের বাসিন্দারাও ছিলেন।

ছবি এএফপি

ছবি এএফপি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ০৬:০০
Share: Save:

তখন অনেক রাত। খবর এল, মুম্বই থেকে আসা শ্রমিক বোঝাই দুটি ট্রাক থানার সামনে দাঁড়িয়ে। যাত্রী শ্রমিকেরা ট্রাকের ভিতর থেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা রেড জোন থেকে ফিরেছেন। তাই থানায় ঢুকবেন না। কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে হাজির হন পুলিশ-প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা। শ্রমিকদের নিয়ে যাওয়া হয় কোয়রান্টিনে। থার্মাল স্ক্রিনিংও করা হয়। কোচবিহারের ওই ঘটনায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন প্রশাসনের আধিকারিকেরা। একজনের কথায়, সবাই এমন সচেতন হলে করোনাকে রুখে দেওয়া যাবে। জেলাশাসক পবন কাদিয়ান রবিবার রাতেই জানান, তখনই ওই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, চ্যাংরাবান্ধায় ওই ট্রাকগুলি আটক করা হয়। পরে পুন্ডিবাড়ি নিয়ে যাওয়া হয়। ট্রাকের যাত্রীরা প্রত্যেকেই গাড়ির ভেতরে ছিলেন। একটিতে ছিলেন কার্তিক বর্মণ, অমিত বর্মণ, বলরাম সেন, অমল সেন, সুমন সরকার, অরুণ সেনরা। প্রত্যেকের বাড়ি দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকে।

দীঘলটারির বাসিন্দা অমল জানান, আটটি ট্রাকে তাঁরা অন্তত চারশো জন কোচবিহারে ফিরেছেন। কয়েকটি ট্রাকে অসমের বাসিন্দারাও ছিলেন। তাঁরা ৪০ জন আড়াই লক্ষ টাকা ভাড়া দিয়ে একটি ট্রাক ঠিক করেন। এক একজনের কোচবিহার পৌঁছতে সাত হাজার টাকা করে খরচ হয়।

অমল ১২ বছর ধরে মুম্বইয়ে। তাঁরা সবাই সেখানে একটি জামাকাপড় তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। মাসে ১৩ হাজার টাকা আয় হত অমলের। তাঁর স্ত্রী, দুই সন্তান থাকত গ্রামে। সেই টাকায় তাঁদের পড়াশোনা-দেখভাল করতেন তিনি। বছরে দুই থেকে তিনবার গ্রামেও ফিরতেন। তাঁর কথায়, “এমন বিপদ তো কখনও দেখিনি। প্রায় দু-মাস হল কারখানা বন্ধ। টাকা শেষ হয়ে আসছিল। বাড়ি ফেরা ছাড়া কোনও পথ ছিল না। তাই যে যার সম্বল দিয়ে ট্রাক ভাড়া করি।”

শুধু বিস্কুট-পাঁউরুটি আর জল খেয়ে পাঁচদিনে কোচবিহারে পৌঁছন তাঁরা। সেখান থেকে রওনা হওয়ার আগে তাঁদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র দেওয়া হয়। দিনহাটায় নিয়ে যাওয়ার পরেও তাঁদের থার্মাল স্ক্রিনিং করা হয়। তাঁদের কথায়, “আমরা প্রশাসনের কথা মেনেই চলব। রেড জোন থেকে এসেছি। সব নিয়ম মানা প্রয়োজন। তাহলেই তো সবাই সুস্থ থাকব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coochbehar Migrant Labourers Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE