Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

যেতে তো হবেই, ঘুম উড়েছে নিত্যযাত্রীদের

শুক্রবার সাত সকালে যাত্রীবাহী বাস নিয়ে অসম থেকে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন কমল দাস। তিনসুকিয়ার খরবাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে ৫ জন বাঙালিকে গুলি করে হত্যার কথা জেনেও।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:০০
Share: Save:

শুক্রবার সাত সকালে যাত্রীবাহী বাস নিয়ে অসম থেকে কোচবিহারের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন কমল দাস। তিনসুকিয়ার খরবাড়িতে বৃহস্পতিবার রাতে ৫ জন বাঙালিকে গুলি করে হত্যার কথা জেনেও। কোচবিহারে পৌঁছেই তাই অসম থেকে সহকর্মীর কেনা সংবাদপত্রে চোখ বোলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন উদ্বিগ্ন ওই বাসচালক। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ওই স্ট্যান্ডে অপেক্ষারত অসমের আর এক চালক কালী সূত্রধরও তাঁর কাছে ছুটে আসেন। তিনিও সংবাদপত্রে চোখ বোলাতে শুরু করে দেন।

চোখেমুখে উদ্বেগের ছাপ দেখা গিয়েছে অসম রুটে যাতায়াতকারী অন্য বাস চালক ও কর্মীদের অনেকের মধ্যেও। পরিবারের লোকেরা দু’একজনকে কাজে বেরোতে মানা করলেও তা শোনা সম্ভব হয়নি। ওই বাসচালক ও কর্মীদের কয়েক জন সাফ বলেই দিলেন, “গোলমাল হলে রাস্তায় বাস নিয়ে নামতে চিন্তা তো থাকেই! কিন্তু রুট খোলা থাকলে কাজে না গেলে সংসারটা চলবে কী করে।” একই কথা বলছেন নিত্যযাত্রী আরও অনেকেই। নানা কাজে তাঁদের অসম-কোচবিহার করতে হয়। এখন তাঁদের বাড়ির লোকেরা উদ্বেগে রয়েছেন। কিন্তু কাজে তো যেতে হবেই।

অনেকেই জানাচ্ছেন, তিনসুকিয়ার ঘটনায় কোচবিহারের আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে এসেও পরিজনদের চিন্তায় কেউ তড়িঘড়ি বাড়ি ফিরেছেন। কেউ আবার অসুস্থ পরিজনকে দেখতে তড়িঘড়ি অসম থেকে এ রাজ্যের শহরেও এসেছেন।

আগমণির বাসিন্দা তুলি মালাকার বলেন, “গোলমাল হলে বাড়ির লোকের জন্য চিন্তা হয়। কোথাও থাকা যায় না।” ধুবুরির বীণা চক্রবর্তী বলেন, “মা অসুস্থ, তাই একাই দিনহাটায় যাচ্ছি। না হলে এই সময়ে তো আসতামই না।”

উদ্বেগ ভুলে অন্য দিনের মতো শুক্রবারেও কাজ করলেন কমল, কালীর মতো বাস চালকেরা। অসম-বাংলা বাস মালিক সমিতির সম্পাদক নান্টু দে সরকার বলেন, “বৃহস্পতিবারের ঘটনায় আমাদের উদ্বেগ বেড়েছে।”

সমিতি সূত্রের খবর, শুধু কোচবিহার থেকে অসমের ধুবুরি, কোকরাঝাড় থেকে নগাঁও, গুয়াহাটি, লখিমপুর, শিবসাগর বিভিন্ন রুটে দৈনিক গড়ে ৬০টির বেশি বাস যাতায়াত করে। তার মধ্যে ২০টি কোচবিহারের। বাকিগুলি অসমের। শুক্রবার ওই পরিষেবা মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল। অসমের বাসিন্দা বাস চালক কমলবাবু বলেন, “গোলমাল শুনলে রাস্তায় বেরোতে চিন্তা তো হয়। কিন্তু কী করব।”

কোচবিহার রুটের বাস চালক, কর্মী মফিজুল মিঁয়া, নুর নবি শেখ, কাজির শেখদের মতো আরও কয়েকজনের এক সুর, কাজ না করলে রুটিরুজির সংস্থান হবে না। সংসার চলবে না। কী করবেন এখন?

উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের একাধিক বাসও অসমের ধুবুরি পর্যন্ত চলে। নিগম সূত্রের খবর, এদিনও বাস চলেছে। নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুবল চন্দ্র রায় বলেন, “পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tinsukia killing Bus Transport
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE