লকডাউন-চিত্র: বালুরঘাটে টোটোচালকের পিছনে দৌড় পুলিশের। ছবি: অমিত মোহান্ত
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা। ইংরেজবাজার শহরের নেতাজি মোড়ের একাধিক চায়ের দোকানে ফুটছে জল। আর চায়ের কাপ হাতে নিয়ে ঠেকে তুফান তুলছেন জনা দশেক যুবক। অথচ, লকডাউন পালনের অনুরোধ জানিয়ে নেতাজি মোড়ে মাইকে এ দিনও প্রচার চালিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন। তার পরেও বদলায়নি চায়ের ঠেকগুলিতে ভিড়ের ছবি। তবে, আচমকা লাঠি হাতে মোড়ে হাজির হন ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথ। তিনি তেড়ে যেতে দোকান ফেলেই পালালেন দোকানমালিক থেকে শুরু করে জমায়েত হওয়া সাধারণ মানুষ।
শুধু নেতাজি মোড়েই নয়, লকডাউনের দ্বিতীয় দিন লাঠি হাতে শহরে দাপিয়ে বেড়ালেন পুলিশকর্মীরা। কখনও বাজার, কখনও আবার জাতীয় সড়কের চায়ের ঠেকগুলিতে হানা দিলেন তাঁরা। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “লকডাউনের সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের জন্য। মানুষকে বুঝতে হবে, করোনা মোকাবিলায় লকডাউনই প্রধান অস্ত্র। তাই লকডাউন মানে ছুটি নয়। প্রয়োজন ছাড়া কেউ যাতে বাড়ি থেকে বার না হন, তাই টহলদারি শুরু হয়েছে।” লকডাউনে সাধারণ মানুষকে ঘরবন্দি থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন চিকিৎসকেরাও। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহ-অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, “সাধারণ মানুষকে সতর্ক, সচেতন হতে হবে। ভিড় এড়াতে হবে। একজন থেকে অন্য জনকে কমপক্ষে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। লকডাউন মানেই আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে জমায়েত করে পিকনিক, পার্টি করবেন না। সকলে একত্র হয়ে করোনাভাইরাসের মোকাবিলা করতে হবে।”
করোনা মোকাবিলায় গত রবিবার জনতা কার্ফুতে ব্যাপক সাড়া পড়েছিল মালদহে। সোমবার বিকেল ৫টা থেকেই শুরু হয়েছে লকডাউন। তারই দ্বিতীয় দিনে সকালের দিকে ইংরেজবাজারের রথবাড়ি, মকদমপুর, কোঠাবাড়ি, ঝলঝলিয়া বাজারে ভিড় উপচে পড়ে। একই সঙ্গে শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চা-ফাস্টফুডের দোকানও খুলতে শুরু করে। আর তার পরেই ওই সমস্ত দোকানে ভিড় জমাতে শুরু করেন বহু মানুষ। তবে এ দিন সকাল থেকেই তৎপর জেলা পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা। মাইকে প্রচারের পাশাপাশি সর্বত্র টহলদারিও শুরু করেছেন তাঁরা। আর জমায়েত দেখলেই চলছে লাঠিপেটা।
শহরের মতো এ দিন গ্রামাঞ্চলেও সক্রিয় ছিল পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয়েছে নাকা চেকিং। মোবাইল ইউনিট, নজরদারি ভ্যান, র্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরের মতো এলাকাগুলিতে। একই সঙ্গে হবিবপুর, পুরাতন মালদহ, বামনগোলাতেও ভিড় এড়াতে কড়া পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “মানুষকে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। তার পরেও কিছু উৎসাহী মানুষ মোটরবাইক, গাড়ি নিয়ে প্রয়োজন ছাড়া ঘুরতে বার হচ্ছেন। মানুষ সতর্ক না হলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। প্রয়োজনে গ্রেফতারও করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy