প্রতীকী ছবি
নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে ওষুধের সরবরাহ ঠিক রাখা— সব কিছুতে কালোবাজারি রুখতে এ বার শিলিগুড়িতে বিশেষ দল গড়ল মহকুমা প্রশাসন। মহকুমাশাসকের দফতর ও দুর্নীতি দমন শাখার অফিসারদের নিয়ে তৈরি হয়েছে দলটি। রোজ সকাল থেকে বিভিন্ন বাজারে ঘোরা, জিনিসপত্রের বাজারদর দেখা ও নজরদারি শুরু হয়েছে। মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায় নিজেই বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। এর সঙ্গেই বাসিন্দাদের সমস্যা, অভিযোগ জানানোর জন্য চালু করা হয়েছে মহকুমাশাসকের দফতরের একটি কন্ট্রোল রুম। সেই নম্বরে অভিযোগ বা সাহায্যের জন্য যে কেউ যোগাযোগ করতে পারেন। তবে ভুয়ো খবর বা মজা করে টেলিফোন করে কাউকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করে ধরা পড়লে কড়া আইনি ব্যবস্থার কথাও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘শহরের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ওষুধ বা গ্যাসের অভাব নেই। কিন্তু বাসিন্দাদের একাংশ ‘প্যানিক বায়িং’ করতে রাস্তায় বার হচ্ছেন। আমরা বারবার বাসিন্দাদের অনুরোধ করছি, আপনারা অযথা আতঙ্কিত হবে না। প্রয়োজন মতো জিনিস কিনুন।’’ তিনি জানান, ‘‘বাসিন্দাদের সঙ্গে সঙ্গে আমরা পাইকার, আড়তদার বা ব্যবসায়ীদের কাজের উপরও নজর রাখছি। কালোবাজারি বা দাম বেশি নেওয়ার চেষ্টা হলে কাউকে ছাড়া হবে না।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তর-পূর্বের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খালপাড়া-নয়াবাজার আপাতত সপ্তাহে একদিন অন্তর একদিন খোলার রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভিড় এড়াতে মহকুমাশাসকের সঙ্গে মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকের পর ওই সিদ্ধান্ত হয়। তবে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ জানাচ্ছে, জিনিসপত্র মজুতের ক্ষেত্রে আপাতত সমস্যা নেই। কিন্তু একাংশ ব্যবসায়ী এর মধ্যে কিছু জিনিসের দাম ধীরে ধীরে বাড়াতে শুরু করেছেন বলে অভিযোগ। বিশেষ করে চালের ক্ষেত্রে কুইন্ট্যাল প্রতি দাম বাড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
শহরের কয়েক জন ছোট ব্যবসায়ীর দাবি, ‘‘মহকুমা প্রশাসনের তরফে বড় আড়তদার, পাইকারদের মজুত এবং দামের তালিকা নিয়মিত পরীক্ষা করাটা জরুরি। নইলে কালোবাজারি বাড়বে। শুধু নিত্যপণ্য নয়, ওষুধ বা গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রেও তা দরকার।’’ আর এক দল ব্যবসায়ীর কথায়, রাস্তায় অনেক জায়গায় ট্রাক আটকে দেওয়া হচ্ছে। পুলিশও অনেক সময় মালপত্রের গাড়ি আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। গত মঙ্গলবারই মহাবীরস্থানে কয়েকটি ফলের দোকান পুলিশ বন্ধ করে দিতে গিয়েছিল। পুলিশের পাল্টা দাবি, ওই ফল বিক্রেতারা দাম বেশি নিচ্ছিলেন, তাই বন্ধ করা হয়েছিল।
বুধবার থেকেই শিলিগুড়ির বিধান মার্কেটের ক্ষুদিরামপল্লির ব্যবসায়ী সংগঠন আনাজের দর বেঁধে তালিকা ঝুলিয়ে দেওয়া শুরু করেছে। আলু, পেঁয়াজ থেকে পটল বা কপি, কীসের কত দাম, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, এটা করা না হলে বিক্রেতাদের একাংশ লকডাউন বা কার্ফুর কথা বলে খেয়াল খুশি মতো দাম নিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। এ দিনই বিধান মার্কেটে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দোকানে ভিড় এড়াতে রং দিয়ে দাগ কেটে একে অপরের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা করেছেন কাউন্সিলর নান্টু পাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy