Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Transport

আতঙ্কে অনেকে ফিরছেন আগেই

এক দেশ থেকে আর এক দেশে যাওয়া পর্যটকদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সতর্ক: ফুলবাড়ি সীমান্তে চলছে পাসপোর্ট পরীক্ষা। সকলের মুখেই রয়েছে মাস্ক।
ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সতর্ক: ফুলবাড়ি সীমান্তে চলছে পাসপোর্ট পরীক্ষা। সকলের মুখেই রয়েছে মাস্ক। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

নীতেশ বর্মণ
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০ ০৪:০০
Share: Save:

মায়ের চিকিৎসা করাতে তাঁকে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন শিলিগুড়ির শালুগাড়ার বাসিন্দা গোপাল দাস। দীর্ঘ দিন ধরেই একাধিক শারীরিক সমস্যা ভুগছেন তাঁর মা। চিকিৎসা শুরুও হয়েছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে সীমান্ত বন্ধ হতে পারে এই ভয়ে চিকিৎসা সম্পূর্ণ না করিয়েই মাকে ফেরত পাঠাতে বাধ্য হলেন গোপাল। শুক্রবার ফিরে যান তাঁরা মা। গোপাল জানান, তাঁর মায়ের ভিসায় আরও একমাস সময় রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের কারণে সীমান্ত বন্ধের কথা শুনেছি। বাধ্য হয়েই ফিরতে হচ্ছে মা কে।’’

শুধু গোপাল দাস নয় অনেকেরই এমনই আশঙ্কা। শুক্রবার থেকে পড়ুয়া, ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে চিকিৎসার জন্য ভারতে আসা এমন অনেকে ফিরে যাচ্ছেন বাংলাদেশে। অনেকে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য ফুলবাড়ি সীমান্তে গিয়েও সীমান্ত বন্ধের কথা শুনে ফিরে এসেছেন। ভারত, নেপাল, ভুটানের যে বাসিন্দারা বাংলাদেশে রয়েছেন তাঁরা অনেকে শুক্রবার ভারতে ফিরেছেন বলে ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ফুলবাড়ি সীমান্তে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে পর্যটকদের স্ক্রিনিং করা হয়েছে। প্রত্যেককে মাস্ক পড়া থেকে শুরু করে করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সচেতন হতে বলা হয়েছে।

দেশজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এক দেশ থেকে আর এক দেশে যাওয়া পর্যটকদের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে ভারত বাংলাদেশের ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্র নোটিশ দিয়ে বলেছে, আপাতত ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে কেউ ভারতে আসতে পারবেন না। অবশ্য আগেই যাঁরা এসেছেন তাঁদের ফেরত যেতে কোনও সমস্যা নেই।

আশিস ঘিমাল, অতিশ ঘামেলি নেপালের বাসিন্দা। বাংলাদেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁরা পড়াশুনা করেন বলে জানান। কয়েকদিন আগে নেপাল থেকে ভারতে এসেছিলেন তাঁরা। শুক্রবার ফুলবাড়িতে গিয়ে সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা তাঁরা জানতে পারেন বলে দাবি। বাংলাদেশে গেলে পরে ফিরে আসতে সমস্যা হতে পারে এই আশঙ্কায় তাঁরা বাংলাদেশে না গিয়ে নেপালে ফিরে যাবেন বলে জানান। বাংলাদেশের বাসিন্দা ললিতারানি দাসি কয়েকজনকে নিয়ে মায়াপুরে তীর্থযাত্রায় গিয়েছিলেন। তাঁদের আরও কয়েকদিন থাকার কথা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘করোনার ভয়ে এবং সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় ফিরে যেতে হচ্ছে।’’

ভারত-বাংলাদেশের ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে এখনও পণ্য রফতানি বন্ধ হয়নি। শুল্ক দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে পণ্য পাঠানো বন্ধের ব্যাপারে কোনও নোটিশ আসেনি। তবে আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যা পরিস্থিতি তাতে পণ্য রফতানিও যে কোনও মুহূর্তে বন্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের। ফুলবাড়ি দিয়ে সাধারণত পাথর রফতানি বেশি হয়। তা বন্ধ হলে কোটি টাকার উপরে ব্যবসা নষ্ট হতে পারে বলে শুল্ক দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Transport Bangladesh India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE