জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা।
দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় বিভ্রান্তি তৈরি করছে কেন্দ্রীয় সরকার, অভিযোগ করলেন জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা। তাঁর দাবি, এতে দুই জেলার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। মঙ্গলবার ফের আর এক দফা কালিম্পংয়ের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান অনীত। এ দিন সকালে তিনি জানান, একবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বলেছে, করোনা নিয়ে পাহাড়ে খুব ভাল কাজ হয়েছে। কালিম্পং, দার্জিলিঙে নতুন কেউ আক্রান্ত হয়নি। এখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক প্রতিনিধিদল পাঠিয়ে বলছে, এই দুই জেলায় লকডাউন মানা হয়নি, তাই স্পর্শকাতর হতে পারে। অনীতের কথায়, ‘‘আমরা করোনা ঠেকাতে একসঙ্গে কাজ করে যাব, নাকি অন্য কিছু করব, তা বুঝতে পারছি না। মানুষ এই পরিস্থিতিতে চিন্তিত হয়ে পড়ছেন।’’
জিটিএ চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, চেন্নাই ঘুরে আসার পরে কালিম্পংয়ের এক বাসিন্দার করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে এবং তিনি মারা যান। এই পরিস্থিতিতে ২ এপ্রিল কালিম্পংয়ে যান অনীত। তাঁর কথায়, ‘‘তার পর থেকে সকলে মিলে রাতদিন একসঙ্গে কাজ করেছি। ১৮ এপ্রিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিবের ঘোষণার পর আমি কালিম্পং ছাড়ি। আবার এখন উল্টো কথা বলা হচ্ছে।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘একই সরকারের দুই মন্ত্রক দু’রকম কথা বলছে। আমরা কার কথা বিশ্বাস করব, কাকে ভরসা করব?’’
সোমবার মোর্চা সভাপতি বিনয় তামাংও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজনীতির অভিযোগ করেছে। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই কেন্দ্রীয় দল পাঠানো সঠিক ছিল বলে বিনয় জানিয়েছিলেন। রাজনীতি ভুলে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের কথাও বলেন তিনি। বিনয়ের বক্তব্য, ‘‘এটা তো রাজনীতি করার বিষয় নয়। সবাই মিলে একযোগে লড়াই চাই। কোথাও সমস্যা হলে সবাইকে একযোগে ঝাঁপাতে হবে।’’
কালিম্পংয়ের বাসিন্দা মহিলার মৃত্যুর পর পাহাড়ে কড়াকড়ি শুরু করে জিটিএ এবং রাজ্য প্রশাসন। একাধিক আইসোলেশন হাসপাতাল, কোভিড হাসপাতাল, টেস্ট, হোম কোয়ারিন্টনে জোর দেওয়া হয়। কালিম্পংয়ে অনীত ঘাঁটি গেড়ে থেকে আর দার্জিলিঙে বিনয় রাস্তায় নেমে কঠোর ভাবে লকডাউন জারি রাখতে জোর দিয়েছেন। এ দিন অনীত বলেন, ‘‘নতুন করে দুই জেলায় সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি। এখন কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, দুই জেলায় লকডাউন সঠিকভাবে পালন হচ্ছে না। স্পর্শকাতর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। তা হলে ছাড় কেন দেওয়া হচ্ছে? অফিস, একশো দিনের কাজ, কৃষিজ শিল্প খোলার কথা বলা হচ্ছে কেন? এ সব খুললে তো কিছু লোক বাইরে আসবেনই। তবে আমরা লকডাউন মজবুত করার উপরেই জোর দিয়েছি।’’
জিটিএ-র পাশে আছে পাহাড়ের তৃণমূলও। দলের নেতা বিন্নি শর্মা বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে রাজ্য, জিটিএ মিলে এত ভাল কাজ করছে যে তাতে কেন্দ্রে বিজেপি নেতাদের অস্বস্তি বেড়েছে। তাঁরা তাই নিজেরা ময়দানে নেমে কৃতিত্ব নিতে চাইছেন। এটা রাজনীতির সময় নয়, ওঁদের মনে রাখা উচিত।’’ স্থানীয় বিজেপি নেতা বা সাংসদ রাজু বিস্তারা অবশ্য এ সব মানতে নারাজ। তাঁরা দাবি, ‘‘করোনোর হাত থেকে দুই জেলাকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সরকার যা যা করণীয়, করছে। এ সবে রাজনীতি নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy