প্রতীকী ছবি
করোনায় ফের রেকর্ড ভাঙল মালদহ। একদিনে নতুন করে ৫১ জনের লালারসের রিপোর্ট পজ়িটিভ হল। ফলে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩১১ হল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন আক্রান্তদের মধ্যে গাজল ব্লকেরই ৩৮ জন। বাকিরা অন্য ব্লকের। এক জন পুরাতন মালদহ শহরের বাসিন্দাও রয়েছেন। শনিবার রাতে মালদহ মেডিক্যালের ভাইরোলজি ল্যাবে এই রিপোর্ট আসে। এর আগে ২৩ মে একসঙ্গে ৩১ জন এবং ৪ জুন একসঙ্গে ৪৪ জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছিল জেলায়।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, যেখানে এই জেলায় প্রথম ১০০ জন আক্রান্ত হতে সময় লেগেছিল ৩১ দিন, সেখানে দ্বিতীয় ১০০ জন আক্রান্ত হতে সময় নিয়েছিল ১২ দিন। আর তৃতীয় ১০০ জন হতে সময় নিল মাত্র ৯ দিন। গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি এখন শহরেও সংক্রমণ ছড়াতে শুরু করায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। এ দিকে জানা গিয়েছে, নতুন আক্রান্তদের বেশির ভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। কর্ণাটক, কেরল, মহারাষ্ট্র, গুজরাত থেকে ট্রেনে ফিরেছেন। তাঁরা বেশির ভাগই সংশ্লিষ্ট ব্লকের সরকারি কোয়রান্টিনে ছিলেন। সেখানেই লালারসের নমুনা নেওয়া হয়েছিল। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আক্রান্তদের মধ্যে ৭ মহিলাকে কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের আইসোলেশন সেন্টার এবং ‘সেফ হোম’ বা কোভিড কেয়ার সেন্টারে ভর্তি করানো হয়েছে। কারওরই বাহ্যিক উপসর্গ নেই।’’
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গাজল ব্লকের আক্রান্তদের মধ্যে ৩২ জন করকচ পঞ্চায়েতের উপডেল গ্রামের বাসিন্দা, ৫ জন এই পঞ্চায়েতেরই ভবানীপুর ও এক জন শাহজাদপুর পঞ্চায়েতের মানপুকুর গ্রামের বাসিন্দা। উপডেল গ্রামের আক্রান্তদের বেশির ভাগই ফিরেছেন কর্ণাটক থেকে ও বাকিরা কেরল থেকে। স্থানীয় সূত্রে খবর, তাঁরা ভিন্ন ট্রেনে ১ জুন মালদহে ফেরেন। তারপর থেকে উপডেল প্রাইমারি স্কুলে সরকারি কোয়রান্টিনে ছিলেন। ১০ জুন এই কোয়ারান্টিন সেন্টার থেকে লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। শনিবার একসঙ্গে এত জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা আছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা, আক্রান্তরা সকলেই সরকারি কোয়রান্টিনে ছিলেন। সেখানেই সংক্রমণ ছড়িয়েছে বলে শঙ্কা।
এ দিকে, চাঁচল ১ ব্লকের ৫ আক্রান্ত কলিগ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। মহারাষ্ট্র থেকে তাঁরা ফিরেছিলেন। মানিকচক ব্লকের চার আক্রান্তের মধ্যে দু’জন মা ও মেয়ে। তাঁরা ভুতনির কিসমতটোলার বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই মহিলা পরিযায়ী শ্রমিক নন। তবে তাঁদের পরিবারের এক ছেলে দিন পনেরো আগে মুম্বই থেকে ফিরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মনে করা হচ্ছে, ওই রোগীর সংস্পর্শে আসাতেই মা ও মেয়ের সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
এ ছাড়া ইংরেজবাজার, হবিবপুর, রতুয়া ১ ব্লকের বাসিন্দা এক জন করে আক্রান্ত হয়েছেন। পুরাতন মালদহ শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের পাড়া সামুণ্ডাই এলাকার এক ব্যক্তিও আক্রান্ত হন। জানা গিয়েছে, তিনি ১ জুন গুজরাত থেকে ফিরেছিলেন। প্রথমে তিনি বাড়িতেই ছিলেন। কিন্তু প্রতিবেশীদের বিক্ষোভের জেরে শেষ পর্যন্ত তাঁকে পুরসভার কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছিল। এ দিন তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় তাঁকে পুরাতন মালদহের কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইংরেজবাজার শহরে এক নার্স-সহ দু’জন আক্রান্ত হওয়ার পরে পুরাতন মালদহ পুর এলাকাতেও এক জন আক্রান্ত হওয়ার শহরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy