Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

রিপোর্ট দেরিতে, কোয়রান্টিন সেন্টারে বাড়ছে ক্ষোভ

আলিপুরদুয়ারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘পরীক্ষার রিপোর্ট আসাটা আমাদের হাতে নেই। তবে দ্রুত যাতে রিপোর্ট আসে সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে ‘দেরি’ হওয়া নিয়ে এ বার আলিপুরদুয়ারের বিভিন্ন হোটেলে কোয়রান্টিনে থাকা আবাসিকদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করল। ঘটনায় ক্ষুব্ধ খোদ আলিপুরদুয়ার পুরসভার তৃণমূলের এক বিদায়ী কাউন্সিলর হোটেল কোয়রান্টিনে থাকা আবাসিকদের নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর ঘেরাওয়ের হুমকি দিতে শুরু করেছেন। গত আট দিন ধরে নিজেও শহরের একটি হোটেলে কোয়রান্টিনে রয়েছেন আলিপুরদুয়ার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূলের ওই বিদায়ী কাউন্সিলর গৌতম তালুকদার।

লকডাউনের সময় ভিন্ রাজ্য কিংবা ভিন্ জেলা থেকে আলিপুরদুয়ারে ফেরা প্রত্যেককে চোদ্দো দিনের জন্য হোম কোয়রান্টিনে রাখছিল প্রশাসন। কিন্তু পরবর্তীতে বাইরে থেকে আসা যে কারও ক্ষেত্রেই কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকা ও সেখানে থেকেই তাঁদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়। এ জন্য জেলায় প্রায় ৪০টি কোয়রান্টিন সেন্টার খোলা হয়। যেখানে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রশাসনের তরফেই সেখানে আবাসিকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

পাশাপাশি যাঁরা সরকারি কোয়রান্টিন সেন্টারে থাকতে ইচ্ছুক নন, তাঁদের জন্য হোটেল-কোয়রান্টিনে থাকারও ব্যবস্থা করেছে স্বাস্থ্য দফতর। জেলা জুড়ে মোট বারোটি হোটেলে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার মধ্যে শহরে রয়েছে ছ’টি হোটেল। তবে হোটেলে থাকার ক্ষেত্রে আবাসিকদের অবশ্য নিজেদেরকেই ঘরভাড়া ও খাবারের জন্য টাকা দিতে হচ্ছে। কিন্তু রিপোর্ট আসতে দেরির অভিযোগে এ বার তাঁদের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ ছড়াতে শুরু করল।

শহরের একটি হোটেলে কোয়রান্টিনে থাকা পার্থ রায়চৌধুরীর অভিযোগ, ‘‘আট দিন ধরে পরিবারকে নিয়ে হোটেল-কোয়রান্টিনে রয়েছি। এতদিন জানতাম, কেউ কোয়রান্টিনে থাকলে নমুনা সংগ্রহের পরে দু’-এক দিনের মধ্যে রিপোর্ট চলে আসে। এবং রিপোর্ট নেগেটিভ এলে তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে পাঁচ দিন পর নমুনা সংগ্রহ করা হল। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারছি, সেই রিপোর্ট নেগেটিভ। অথচ, স্বাস্থ্য দফতর এখনও তা জানাচ্ছে না।’’ ওই হোটেলে থাকা ভেলুরডাবরির বাসিন্দা অমিতাভ ঘোষ বলেন, ‘‘হোটেলে কোনও সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা সকলের সঙ্গে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া চলছে। খাওয়ার দামও প্রচুর নেওয়া হচ্ছে।’’

নানা অব্যবস্থা-সহ রিপোর্ট দেরিতে আসা নিয়ে দু’দিন আগেই ফালাকাটার জটেশ্বরে একটি কোয়রান্টিন সেন্টারে তুমুল বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন সেখানকার আবাসিকেরা। আর এ বার হোটেল কোয়রান্টিনে থাকা আবাসিকদের একাংশের মধ্যেও ক্ষোভ দানা বাধল। শহরের একটি হোটেলে থাকা আলিপুরদুয়ারের বিদায়ী কাউন্সিলর গৌতমের অভিযোগ, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের একাংশ রাজ্য সরকারকে হেয় করার চেষ্টা করছে। তাই এই অবস্থা। অবিলম্বে হোটেল-কোয়রান্টিনে থাকা আবাসিকদের রিপোর্ট না এলে সকলে মিলে স্বাস্থ্য দফতর ঘেরাও করব।’’

আলিপুরদুয়ারের উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘কে, কোন জ়োন থেকে জেলায় ফিরছেন তার উপর ভিত্তি করে সরকারি নির্দেশিকা মেনে নির্দিষ্ট সময়ে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। কিন্তু সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আসাটা আমাদের হাতে নেই। তবে দ্রুত যাতে রিপোর্ট আসে সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE