Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coroanvirus

কলকাতা থেকে ফেরা নার্সিং পড়ুয়া করোনা আক্রান্ত, প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে

৮ মে কলকাতা থেকে ফিরেছেন ওই ছাত্রী। তাঁর সঙ্গে আরও ত্রিশ জন পড়ুয়া ছিলেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অর্জুন ভট্টাচার্য ও অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২০ ০২:৫৫
Share: Save:

করোনায় আক্রান্ত নার্সিং পড়ুয়ার চিকিৎসা হবে জলপাইগুড়ির কোভিড হাসপাতালেই। এমনটাই জানিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। সদর ব্লকের গড়ালবাড়ির ওই পড়ুয়া করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় প্রশ্নের মুখে প্রশাসনের নজরদারি ব্যবস্থা।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী ৮ মে কলকাতা থেকে ফিরেছেন ওই ছাত্রী। তাঁর সঙ্গে আরও ত্রিশ জন পড়ুয়া ছিলেন। যাঁদের মধ্যে ১৩ জন জলপাইগুড়ির। বুধবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী পড়ুয়াদের কেউ কেউ সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে ছিলেন, কাউকে বাড়িতেই কোয়রান্টিন রাখা হয়েছিল। প্রায় সকলেরই লালারসের নমুনা পরীক্ষা করানো হয়েছিল এবং তাতে সংক্রমণ মেলেনি। শুধু গড়ালবাড়ির পড়ুয়ার লালারসের নমুনা আগে পরীক্ষা করানো হয়নি বলে দাবি। জলপাইগুড়ির বাড়িতে ফেরার চার দিনের মাথায় ওই ছাত্রী জ্বরে আক্রান্ত হয়। বাড়ির লোকেরা তাঁকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে সারি হাসপাতালে পাঠানো হয় এবং ১৪ মে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

প্রশ্ন উঠেছে, ৮মে ফেরার পর থেকে ১৪মে পর্যন্ত অর্থাৎ ছ’দিন ওই পড়ুয়াকে চিহ্নিত করে কেন লালারসের নমুনা পরীক্ষা হল না? আক্রান্তের সহযাত্রীদের লালারসের নমুনা পরীক্ষা হলেও তিনি কেন বাদ পড়লেন? নিয়মিত সব বাড়িতে আশাকর্মীদের নজর রাখার কথা। সেই নজরদারিতে কেন কলকাতা ফেরত পড়ুয়ার তথ্য জানা গেল না?

প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, পড়ুয়াকে কোয়রান্টিনের জন্য হাসপাতালে আনা হলেও তিনি পালিয়ে গিয়েছিলেন। দ্বিতীয় সূত্রের দাবি, কোনওভাবে পড়ুয়া প্রশাসনের নজরের আড়ালে চলে যান। করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, “কেন সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে আক্রান্ত নার্সিং পড়ুয়াকে রাখা হয়নি, অবশ্যই তা খতিয়ে দেখা হবে। তবে শুনেছি, ওই পড়ুয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন।” জলপাইগুড়ি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রমেন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলেন, “কেন আক্রান্ত ওই নার্সিং পড়ুয়াকে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা চিহ্নিত করতে পারেননি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আমাদের কাছে ওই নার্সিং পড়ুয়াদের ফিরে আসার বিষয়ে কোনও সংবাদ ছিল না।’’

আক্রান্তের সঙ্গে একই বাসে ফেরা কয়েকজনের দাবি, জলপাইগুড়ির বাসিন্দারা সকলে গোশালা মোড়ে নেমে প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট করেছিলেন। তার আগেই মাঝপথে গড়ালবাড়ির ওই পড়ুয়া বাস থেকে নেমে পরিবারের লোকের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যান বলে দাবি। এই ছ’দিন ওই পড়ুয়া এবং তাঁর বাবা-মা-দাদা কার কার সংস্পর্শে এসেছেন তার খোঁজ চলছে। শহরের খুব কাছেই গড়ালবাড়ি। ফলে আতঙ্কে ভুগছে জলপাইগুড়ি শহরও। আক্রান্ত পড়ুয়ার গ্রামকে এ দিন সকালে কনটেনমেন্ট জ়োন ঘোষণা করা হয়েছে। বহিরাগতদের আসা-যাওয়া বন্ধ হয়েছে। প্রশাসন জানাচ্ছে, ওই পড়ুয়ার সঙ্গে বাসে ফেরা বাকিদের লালারসের নমুনা ফের পরীক্ষা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE