Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে কর্মরত এবং শক্তিগড়ের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা ওই ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের আড়াই বছরের ছেলে রয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২০ ০৬:৫৫
Share: Save:

কোভিড যোদ্ধাদের সম্মান জানাতে থালা বাজানোর ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অথচ শিলিগুড়িতে দেখা গেল অন্য ছবি। পরিষেবা দিতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়া এক অন্তঃসত্ত্বা ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের বাড়ি ঘেরাও করে এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ বিক্ষোভ দেখান। পরিবারের সদস্যদের হোম কোয়রান্টিনে রাখা, এলাকা কনটেনমেন্ট জ়োন করার দাবি তুলে ক্ষোভ জানাতে থাকেন তাঁরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে কর্মরত এবং শক্তিগড়ের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা ওই ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের আড়াই বছরের ছেলে রয়েছে। সে পুরোপুরি মায়ের উপরে নির্ভরশীল। এই পরিস্থিতিতে কোভিড হাসপাতালের কাজে তাঁকে যাতে পাঠানো না হয়, সে জন্য আবেদন করেছিলেন ওই টেকনিশিয়ান। অভিযোগ, তা শুনতেই চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রথমে হাসপাতালের কিয়স্কে লালা সংগ্রহ, পরে মাটিগাড়ার কোভিড হাসপাতালের কাজে তাঁকে পাঠানো হয়। এখন তিনি এবং তাঁর ছেলে দু’জনেই করোনা সংক্রমিত হয়ে গিয়েছেন। ফলে বিপদ বেড়েছে ওই টেকনিশিয়ানের। একে তো বাচ্চার করোনা নিয়ে উদ্বেগ, পাশাপাশি বৃহস্পতিবার এলাকার বাসিন্দারা তাঁর বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভও দেখায়।

এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, কেন ওই টেকনিশিয়ানকে কোভিড হাসপাতালের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হল না? হাসপাতাল সুপার অমিতাভ মণ্ডল বলেন, ‘‘এ ভাবে আক্রান্ত হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। তবে এ ব্যাপারে যা বলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলবেন।’’

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি, ওই ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ান প্রথমে একটি চিঠি দিলেও লালা সংগ্রহের কাজে জোর দেওয়ার প্রয়োজন ছিল বলে তাঁকে দায়িত্বে রেখে দেওয়া হয়। ১৪ মে পর্যন্ত সাত দিন সেখানে কাজ করে কোয়রান্টিনে সাত দিন থাকার ছুটি পান তিনি। সেই সময় ১৬ মে তাঁকে কোভিড হাসপাতালের দায়িত্ব দেওয়া হয় মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর থেকে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ‘‘ঠিক কী হয়েছে, খোঁজ নেব।’’ উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

ওই মহিলা ল্যাবরেটরি টেকনিশিয়ানের দাবি, তাঁকে চাপ দিয়ে কোভিড ডিউটিতে পাঠানো হয়। এমনকি, সেখানে যোগ না দিলে তাঁকে অন্য কোথাও যোগ দিতে দেওয়া হবে না বলে চাপ সৃষ্টি করা হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ওই টেকনিশিয়ান বলেন, ‘‘হাসপাতালের ডিউটি করে নিয়ম মেনে আমি শক্তিগড়ের বাড়ি তথা লজে আলাদা ঘরে থাকতাম। কোভিড হাসপাতালে ২২ মে যোগ দেওয়ার পর আমি স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যবস্থা করা হোটেলে থাকতাম।’’ তাঁর কাছ থেকে জানা গিয়েছে, ২৮ মে তিনি নিজেই লালারস পরীক্ষা করান। ২৯ মে থেকে সন্তানকে নিজের কাছে রাখতেন ওই হোটেলে। ৩১ মে রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে তিনি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হন। সন্তানও সঙ্গে ছিল। তার লালা পরীক্ষায় ২ জুন রিপোর্ট পজ়িটিভ মেলে। তবে তাঁদের দুজনেরই কোনও উপসর্গ নেই। মহিলার আক্ষেপ, বাসিন্দাদের এই আচারণ অমানবিক।

পাড়ার লোকদের একাংশের দাবি, ওই মহিলার বাড়ি তথা লজে অনেক কর্মচারী রয়েছেন। তাঁরা নানা জায়গায় ঘোরাফেরা করছে। তা নিয়ে বাসিন্দারা সকলেই উদ্বিগ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Siliguri Covid 19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE