দায়িত্ব: এক খুদের সঙ্গে কথা বলছেন পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র
ছোটরা বোঝাবে। বুঝবে বড়রা। ভাল ভাবে বুঝলে ভাল। নইলেই বেজে উঠবে বাঁশি!
তার পরে বাকিটা বুঝে নেবে ‘পুলিশকাকুরা’। আর লকডাউনের ময়দানে পুলিশ যে ভাবে ঝোড়ো ব্যাটিং করে যাচ্ছে তাতে প্রতিটি সপাং যে এপাং-ওপাং না করেই সটান মরমে গিয়ে বিঁধবে তা বলাই বাহুল্য! অতএব বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই মাথাভাঙার অনেকেই বলছেন, ‘‘বাঁশি শুনে আর কাজ নেই বাপু! তার আগে বাড়ি ঢুকে পড়াই ভাল।’’ ‘করোনা যোদ্ধাদের’ সক্রিয়তা আর বাঁশির ম্যাজিক দেখে জেলা পুলিশের এক কর্তা মুচকি হাসছেন, ‘‘ফুঁ দিয়েও তা হলে ভিড় সরিয়ে দেওয়া যায়। কী বলেন?’’
ভাবনাটা প্রথম মাথায় আসে মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ সরকারের। ইন্দ্রজিৎ বলছেন, ‘‘মনে হল, ওদের করোনা যোদ্ধা করলে কেমন হয়! ওরা যেমন বাড়িতে আছে, তেমনই থাকবে। শুধু ওদের হাতে আমরা তুলে দেব একটা করে বাঁশি। রাস্তায় ভিড় দেখলে বা অকারণে কাউকে ঘুরতে দেখলে ওরা প্রথমে তাঁদের বাড়িতে ঢুকে যেতে বলবে। কথা না শুনলে বাঁশি বাজাবে। চারপাশে সবসময় পুলিশ টহল দিচ্ছেই। ফলে বাঁশি শুনলেই পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে সেখানে চলে আসবে।’’
যেমন ভাবা তেমনই কাজ। এ দিন দুপুরেই মাথাভাঙার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ সরকার, মহকুমাশাসক জিতিন যাদব, মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শুভেন্দু মণ্ডল, আইসি প্রদীপ সরকার, মাথাভাঙার পুরপ্রধান লক্ষপতি প্রামাণিক শহরের বিভিন্ন বেশ কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে খুদেদের হাতে বাঁশি তুলে দেন।
পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনার মতো হঠাৎ এমন ‘দায়িত্ব’ পেয়ে বেজায় খুশি উন্মেষ সরকার, পার্থ সাহা, ঐশ্বর্যা অধিকারীরা। তারা বলছে, ‘‘বড়রা আমাদের বাড়ি থেকে বেরোতে নিষেধ করেছে। আমরা সে কথা শুনছি। কিন্তু বড়দের অনেকেই তো সে কথা শুনছে না। পুলিশকাকুরা আমাদের বাঁশি দিয়েছে। বলেছে, কেউ কথা না শুনলেই সেটা বাজাতে।’’
অভিভাবকদের একজন হিল্লোল সরকার বলছেন, ‘‘ওদের পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে। এখন বাইরেও বেরোতে পারছে না, খেলতেও পারছে না। তাই খুব মনমরা হয়েই বাড়িতে বসে থাকত। এ দিন দুপুর থেকে অবশ্য ওরা বেশ চনমনে আছে। মাঝেমধ্যেই ব্যালকনিতে গিয়ে দেখে আসছে, রাস্তায় অকারণে কেউ ঘুরছে কিনা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy