Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus Lockdown

শূন্য থেকে শুরুতে চাই বিশেষ প্যাকেজ

সিকিম আপাতত বলে দিয়েছে, পুজোর আগে পর্যটন নিয়ে তারা কিছুই ভাবছে না।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

কৌশিক চৌধুরী
শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০২০ ০৪:০২
Share: Save:

এ বছরের গরমের পর্যটন মরসুম পুরোপুরি শূন্য। মার্চের ২০-২১ তারিখের পর থেকে হোটেল, রিসর্ট, হোম-স্টে পর্যটক শূন্য। কবে আবার ভরবে, কেউ জানে না। গাড়ি গ্যারাজে পড়ে। হাতে গোনা দফতর এবং সংস্থা খুললেও কর্মীদের বেতন দেওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। অনেকেই চিন্তিত চাকরি বা ব্যবসার স্থায়িত্ব নিয়ে। করোনার আবহে লোকসানের বহর রোজই বাড়ছে। সরকারি তরফে এখনও আশার কোনও আলোকবিন্দুর দেখা মেলেনি। আগামী দিনের পর্যটন শিল্পের সব কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একটাই শব্দ, যদি! ‘যদি’টা শুরু হয়েছে পুজো বা বড়দিনের মরসুমকে ঘিরে। এই শিল্পকে চাঙ্গা করার জন্য সরকারি প্যাকেজ দরকার, ব্যবসায়ীদের দাবি।

ওই ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, পুজো বা বড়দিনের মরসুমটা হয়তো স্বাভাবিক হবে। সিকিম আপাতত বলে দিয়েছে, পুজোর আগে পর্যটন নিয়ে তারা কিছুই ভাবছে না। এ শিল্পের জন্য ত্রাণ, ঋণ এবং চালকদের জন্য আর্থিক প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে সেখানে। কিন্তু এ রাজ্যে এখনও তেমন কিছু ঘোষণা হয়নি। কেন্দ্রও এই শিল্পকে বাঁচাতে কোনও পরিকল্পনার কথা আপাতত বলেনি। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা জানিয়ে দিয়েছেন, উত্তরবঙ্গ-সিকিম সেক্টরকে ধরেই রোজ ক্ষতির বহর ১৯-২৫ কোটি টাকা।

সিআইআই, হিমালয়ান হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের (এইচএইচটিডিএন) তরফে কেন্দ্র এবং রাজ্যকে নানা প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত সপ্তাহেই রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। সেখানে সহজলভ্য ঋণ এবং ঋণের মূল টাকা ও সুদ মেটানোয় ছাড়, পর্যটনের খরচে কর ছাড়, উত্তরবঙ্গ-সিকিম জ়োনকে সরকারি এলটিসি-তে যুক্ত রাখা, জিএসটি সরলীকরণের জন্য রাজ্য যাতে কেন্দ্রের কাছে আবেদনে তা বলা হয়। রাজ্য কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কগুলিতে পর্যটন ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়ার আবেদন ছাড়া রাজ্যে টাস্ক ফোর্স, চা পর্ষদের অনুকরণে পর্যটন পর্ষদ গড়ার কথা বলা হয়েছে। এই ধরনের পর্ষদ সংশ্লিষ্ট শিল্পকে প্রযুক্তি, নীতি থেকে শুরু করে ভর্তুকি দিয়ে সাহায্য করে থাকে। কেন্দ্রের বিভিন্ন কর আর রাজ্যের নানা ফি আপাতত তুলে নেওয়া বা স্থগিত করার প্রস্তাব সরকারের ঘরে জমা পড়েছে।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, কেন্দ্র এবং রাজ্য যৌথভাবে কাজ না করলে এই শিল্পের বাঁচা মুশকিল। হোটেল, রিসর্টের লিজ়ের সময়সীমা আরও ৭-৮ মাস করে না বাড়ালে অনেকেই দেউলিয়া হয়ে যাবেন। বিদ্যুৎ মাসুল, গাড়ির নানা কর এবং ফি, গতিধারা প্রকল্পে ভর্তুকি বাড়িয়ে আরও সাহায্য করার জন্য রাজ্যকেই এগিয়ে আসতে হবে। তেমনিই, হোম-স্টে বা রিসর্টগুলির জন্য তালিকাভুক্ত করে প্রচার, সরকারি রেজিস্ট্রেশন করে সাহা‌য্য করা, গাইডদের বন বিভাগে অস্থায়ী ভিত্তিতে কাজ লাগোনা, ১০০ দিনের কাজ ছাড়াও সরকারি বিভিল্প প্রকল্পে সুবিধা মতো চালক, কুলি বা হোটেল ওয়েটারদের কাজে রাখার মত একগুচ্ছ প্রস্তাব রয়েছে।

পর্যটনমন্ত্রী গৌতমবাবু বলেছেন, ‘‘আমরা স্থানীয় স্তরে যা যা পারব করার চেষ্টা করব। বাকিটা রিপোর্ট আকারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হচ্ছে।’’ আর পর্যটন সংগঠন এইচএইচটিডিএনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল জানান, কেন্দ্র এবং রাজ্যের স্পেশাল প্যাকেজ ছাড়া এই শিল্পকে বাঁচানো মুশকিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Tourism
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE