Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
করোনা

‘নদীতে মাছ ধরতে? যান বাড়ি যান!’

নদীতে মাছ ধরতে বেরিয়েছেন। তবে পুলিশের ধমক খেয়ে ছিপ কাঁধে ফিরতে হল। এরকম দু’একটা মজার ছবি ছাড়া লকডাউনের প্রথম দিনটা সফলই। এতে অবশ্য বৃষ্টিও সঙ্গত দিয়েছে। 

কোচবিহার শহরেও দেখা গেল লোকের আনাগোনা।  ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

কোচবিহার শহরেও দেখা গেল লোকের আনাগোনা। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

নিজস্ব প্রতিবেদন
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২০ ০৫:০৬
Share: Save:

অজুহাতের যেন শেষ নেই! কেন রাস্তায় বেরিয়েছেন, প্রশাসনের লোকজনের এই প্রশ্নে অনেকেই সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। তাই বাধ্য ছেলের মতো বাড়িমুখো হয়েছেন। কেউ আবার সপাট উত্তর, বাড়িতে মন টিকছে না। নদীতে মাছ ধরতে বেরিয়েছেন। তবে পুলিশের ধমক খেয়ে ছিপ কাঁধে ফিরতে হল। এরকম দু’একটা মজার ছবি ছাড়া লকডাউনের প্রথম দিনটা সফলই। এতে অবশ্য বৃষ্টিও সঙ্গত দিয়েছে।

কোচবিহার

কোচবিহারের রাস্তায় টোটোয় চেপে যাচ্ছিলেন এক দম্পতি। আটকালেন প্রশাসনের কর্মীরা। সামনে সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল। প্রশ্ন, কোথাও চললেন? জবাব, ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলাম। প্রমাণ কী? প্রেসক্রিপশন বের করে দেখালেন তাঁদের একজন। সন্তুষ্ট হয়ে যেতে দিলেন মহকুমাশাসক। এ দিন শহরের বেশ কিছু দোকান ধমক দিয়ে বন্ধ করতে হয়। ছিল পুলিশের নজরদারি। সঙ্গে বৃষ্টি। সফল লকাডাউন।

আলিপুরদুয়ার

এতদিন লকডাউন ভাঙাই যেন আলিপুরদুয়ার শহরে নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেদিক থেকে বৃহস্পতিবারের লকডাউন ব্যতিক্রম। সকাল থেকে প্রায় সমস্ত রাস্তাঘাট ছিল জনশূন্য। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বেরোননি। দু’একটি টোটো চলেছে রাস্তায়। পুলিশ সকাল থেকে পথে নামলেও বাকি দিনটা হাত গুটিয়ে বসে থাকতে হল। বারবিশা, শামুকতলা, কামাখ্যাগুড়ি, কালচিনিতেও লকডাউন সর্বাত্মক।

মাথাভাঙা

মাথাভাঙায় সকাল থেকেই হাটবাজার বন্ধ ছিল। এমনকি, লকডাউনে রাস্তায় কোনও টোটো-অটো দেখা যায়নি। রাস্তার লোকজন ছিল না বললেই চলে। সর্বত্র পুলিশের নজরদারি ছিল।

তুফানগঞ্জ

সকালের দিকে তুফানগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্ত কিছু জমায়েত দেখা গেলেও দিন গড়াতেই ছবি বদলায়। পুলিশের টহলদারি বাড়ে। রাস্তা ফাঁকা হয়ে যায়। লকডাউন ভাঙায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

মেখলিগঞ্জ

মেখলিগঞ্জ জুড়ে রাস্তাঘাট এ দিন শুনশান। চ্যাংরাবান্ধা, জামালদহ ও অন্য এলাকাতেও একই ছবি। দোকানপাটও বন্ধ ছিল। কেন এত স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া? স্থানীয়দের একাংশ জানান, এতদিন এলাকায় সেভাবে কেউ করোনা আক্রান্ত না হলেও কয়েকদিনে সংখ্যাটা বেড়েছে। ঝুঁকি নিতে নারাজ সকলেই।

দিনহাটা

দিনহাটায় হাটবাজার দোকানপাট ছিল বন্ধ। পুলিশি নজরদারিও ছিল যথেষ্ট। দিনহাটা শহরের চওড়াহাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাজারে কোনও দোকানপাট খোলেনি। অযথা ঘোরাঘুরির ফলে বেশ কয়েকটি বাইক আটক করে পুলিশ। দিনহাটার এসডিপিও মানবেন্দ্র দাস বলেন, ‘‘প্রথম দিন যথেষ্ট সাড়া মিলেছে।’’

ময়নাগুড়ির রাস্তায় ইতিউতি দেখা গেল বাইক চালকদের। ছবি: নারায়ণ দে

ফালাকাটা

রাস্তাঘাট জনশূন্য। তার মধ্যেই এক যুবক কাঁধে ছিপ, মাথায় ছাতা নিয়ে সাইকেলে যাচ্চিলেন। এক পুলিশকর্মী তাঁকে প্রশ্ন করেন, কোথায় চললেন? রসিক যুবকের জবাব, ঘরে বসে আর ভাল লাগছে না। তাই নদীতে যাচ্ছি মাছ ধরে সময় কাটাতে। বিরক্ত পুলিশ কর্মীর প্রশ্ন, মাছ ধরতে! যান এখনই বাড়ি ফিরে যান। অগত্যা বাড়িমুখো হলেন সেই যুবক।

ময়নাগুড়ি

সকাল থেকেই ভিড় উধাও। কোথাও কোনও জটলা নেই। বন্ধ বাজার। বৃষ্টি শুরু হওয়ায় লকডাউনে যেন বাড়তি কিছুটা সুবিধা মিলেছে। তবে ময়নাগুড়ির স্থানীয় জলাশয়গুলির ধারে এদিন পুলিশের নজর এড়িয়ে মাছ ধরতে ভিড় জমিয়েছিলেন অনেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Health Cooch Behar Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE