প্রতীকী ছবি
এক বস্তা চাল এনে রেখেছিলাম। বাড়িতে জমানো যে টাকাকড়ি ছিল, তাই দিয়ে কিছু আনাজ বাজার করেছিলাম। সে সব ফুরিয়ে গিয়েছে। হাতের জমানো টাকা শেষ। এখন কী করব, জানি না।
শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলা। সেখানে লটারির দোকান আমার। রোজ গড়ে চার থেকে পাঁচশো টাকার টিকিট বিক্রি হত। এখন তো সে সব বন্ধ। দু’সপ্তাহ হতে চলল ঘরে বসে আছি। বাড়িতে বউ আর মেয়ে। মেয়ে কলকাতায় নার্সিং স্কুলে পড়ে। তার পড়াশোনা, থাকা খাওয়ার জন্য নিয়মিত টাকা লাগে। নিজেদের দিন গুজরানের জন্যও টাকা লাগে। এখন হাতের টাকা শেষ হয়ে যাওয়াও সংসারের চিন্তায় মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। ঘুম ছুটে গিয়েছে রাতের।
মাঝে মাঝে মনে হচ্ছে, একবার কি বার হয়ে দোকানের দিকে গিয়ে দেখব? কিন্তু টিকিট কিনবে কে? তারপরে বাইরে তাকালেই দেখতে পাচ্ছি,পুলিশ টহল দিচ্ছে। শুনছি, বেরলেই নাকি গ্রেফতার করছে! বাইরে পা দিয়ে শেষে হাতকড়া পরতে হবে নাকি? বউ বলেছে, থাক, বাড়িতেই থাকো। যেমন করে হোক চলে যাবে।
আমার ছোট দোকান। অল্প পুঁজি। তাই আমাদের কি ঘরে বসে থাকলে চলে? কী যে এক রোগ এল, আমাদের ভাতে মেরে রাখবে। এখন খুব প্রয়োজনে বাজার, দোকান বা ওষুধ কিনতে বার হচ্ছি। তা ছাড়া একদম না। সারাটা দিন বাড়িতেই কাটাচ্ছি। শুয়ে, বসে, ঘরের কাজ করে।
আর টিভি দেখছি। টেলিভিশনের সব জায়গায় করোনাভাইরাসের খবরের উপরে নজর রেখে চলেছি। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ভয়ও বেড়ে যাচ্ছে। বিকেলের দিকে বাড়ির গেটে দাঁড়িয়ে কিছুটা সময় কাটাচ্ছি পরিবারকে নিয়ে। এই রকম কঠিন পরিস্থিতি আমার জীবনে আগে কোনও দিন আসেনি। লটারির টিকিট বেচে অনেক সময় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। ব্যবসা চললে সেই ক্ষতি পূরণ করা যায়। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কী হবে, বুঝতে পারছি না। লটারির ব্যবসা থেকে শহরের কয়েক হাজার পরিবার চলে। কবে সব স্বাভাবিক হবে সে দিকে তাকিয়ে রয়েছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy