Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

ঢুকল নাকি টাকা, ঠাসা ভিড় ব্যাঙ্কে

অবস্থা সামলাতে না পেরে হরিশ্চন্দ্রপুরে একটি ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন বলে অভিযোগে বিক্ষোভও দেখান গ্রাহকরা।

ভয় ভুলে: জনধন যোজনায় টাকা তুলতে কালিয়াচকের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বাইরে গ্রাহকদের জমায়েত। ছবি: জয়ন্ত সেন

ভয় ভুলে: জনধন যোজনায় টাকা তুলতে কালিয়াচকের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বাইরে গ্রাহকদের জমায়েত। ছবি: জয়ন্ত সেন

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০৪:১৭
Share: Save:

সামাজিক দূরত্বের ‘নিদান’ তখন উধাও। কেউ ব্যাঙ্কে খোঁজ নিচ্ছেন ‘জন ধন যোজনা’র টাকা এসেছে কি না। কেউ এসেছেন ওই যোজনার টাকা তুলতে। বেশিরভাগই মহিলা। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলিতে কয়েকশো মহিলা দাঁড়িয়ে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে। অনেকের কোলে শিশুও। বেশিরভাগের মুখেই মাস্ক নেই। সোমবার এমনই ছবি দেখা গেল মালদহের কালিয়াচক, চাঁচলেও। রায়গঞ্জেও ছিল একই পরিস্থিতি। চাকুলিয়ায় ব্যাঙ্কের সামনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সাদা দাগ কেটে দেওয়া হলেও, তা না মেনে লাইন জমে।

লম্বা সেই লাইন সামলাতে দিনভর নাজেহাল হল পুলিশ। করোনাভাইরাস নিয়ে সাবধানতায় যখন খুব প্রয়োজনে বাড়ির বাইরে বের হলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলা হচ্ছে, সেখানে ব্যাঙ্কে এমন পরিস্থিতি দেখে উদ্বেগে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। অবস্থা সামলাতে না পেরে হরিশ্চন্দ্রপুরে একটি ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন বলে অভিযোগে বিক্ষোভও দেখান গ্রাহকরা।

দেশে করোনাভাইরাস রুখতে চলছে লকডাউন। সেই সময় দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে ‘জন ধন যোজনা’র অ্যাকাউন্টে পাঁচশো টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পর থেকেই ব্যাঙ্কগুলিতে ভিড় জমছে। কালিয়াচক, মোথাবাড়ি, বৈষ্ণবনগর, চাঁচল এলাকায় ব্যাঙ্ক ও ব্যাঙ্কের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলির সামনে একই ছবি।

এ দিন সকাল থেকে কালিয়াচক সদরের চারটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বাইরে গ্রাহকদের ভিড় উপচে পড়ে। যদিও ব্যাঙ্কের ভিতরে দু’জনের বেশি গ্রাহককে একসঙ্গে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জানা যায়, ওই মহিলারা বেশিরভাগই বিড়ি শ্রমিক। কালিয়াচক চৌরঙ্গি মোড়ের কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে লাইনে দাঁড়ানো পিঙ্কি খাতুন বলেন, ‘‘লকডাউনের পর থেকে আমাদের বিড়ি বাঁধার কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শুনেছিলাম জন ধন অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকেছে। টাকা তুলতেই এসেছি। প্রচণ্ড ভিড়। কেউ লাইন থেকে একচুল সরতে রাজি নয়। বাধ্য হয়েই গাদাগাদি করে দাঁড়াতে হচ্ছে।’’

হরিশ্চন্দ্রপুরে একটি ব্যাঙ্ক ও তার পাশে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে হাজির হন কয়েকশো মানুষ। একই ছবি দেখা যায় চাঁচলের একাধিক ব্যাঙ্কেও। হরিশ্চন্দ্রপুরেও ছিল একই ছবি।

হরিশ্চন্দ্রপুরের বিডিও অনির্বাণ বসু বলেন, ‘‘পুলিশ ব্যাঙ্কে আসা মহিলাদের দূরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড় করান। এ ভাবে গাদাগাদি করে লাইন দিলে তা যে ঝুঁকির তা ওঁদের বোঝানো হয়েছে।’’ এ নিয়ে উদ্বিগ্ন মালদহ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের বাইরে যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লাইন হয়, এ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE