ছবি পিটিআই।
আর টাকা নেই। মজুত খাবারও ফুরিয়েছে। বুধবার স্থানীয় প্রশাসনের তরফে একবেলা খাবার দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার জোটেনি সেটাও। ভিন্রাজ্যে যাঁদের ভরসায় যাওয়া, ফোন ধরছেন না সেই ঠিকাদাররাও। বৃহস্পতিবার এ অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো বার্তা দিলেন মুম্বইয়ে আটকে থাকা মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ৫২ জন শ্রমিক, বললেন, ‘‘আমাদের বাঁচান। না হলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগে না খেতে পেয়েই মারা যাব।’’
লকডাউনের পর ভিন্রাজ্যে আটকে পড়েছেন এ রাজ্যের বহু শ্রমিক। তাঁদের অন্তত খাবারের ব্যবস্থা যাতে হয়, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের প্রশাসনকে তা দেখতে বলেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁরা জানালেন, প্রথমে দু’বেলা খাবার দেওয়া হয়েছিল। বুধবার সেটাও হয়ে যায় একবেলা। অভিযোগ, বৃহস্পতিবার জোটেনি সেটাও। ওই শ্রমিকরা জানালেন, এ অবস্থায় পরিচিতদের দেওয়া শুকনো খাবার খেয়েই কোনও রকমে দিন কাটছিল। কিন্তু কড়াকড়ির ভয়ে সেই পরিচিতরাও আর তাঁদের কাছে আসতে সাহস পাচ্ছেন না। তাই রাজ্য প্রশাসনের কাছে তাদের দরবার, হয় বাড়ি ফেরানো হোক বা খাবারের ব্যবস্থা করা হোক।
ওই ৫২ জন শ্রমিক হরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের সাদলিচকের বাসিন্দা। তাঁদের অনেকেই এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রয়েছেন নভি মুম্বইয়ের বেলাপুরে সেক্টর কুড়ি এলাকায়। গ্যাস পাইপলাইন বসানো ও সংস্কারের কাজ করেন তারা। কেরলের এক ঠিকাদারের মাধ্যমেই তাঁরা সেখানে কাজ করেন। তাঁরা জানালেন, ২০ মার্চ থেকে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফের কবে কাজ হবে তা অনিশ্চিত দেখে তাঁরা ফেরার টিকিট কাটেন। কিন্তু লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন, আটকে পড়েন তাঁরা।
মুম্বইয়ে আটক সরিফুল ইসলাম, আনসারুল হক এ দিন টেলিফোনে বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এখানে আছি। স্থানীয় কিছু পরিচিতও রয়েছেন। তাঁরা এতদিন শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছিলেন। কিন্তু এত কড়াকড়ি যে ভয়ে আর আসছেন না।’’
সাদলিচকের আটকে পড়া শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন দু’ভাই ওয়াসিম আখতার ও নাসিম আখতার। বাড়িতে চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটছে বৃদ্ধ বাবা-মা ও ওয়াসিমের স্ত্রী ও সন্তানদের। বাবা এনামুল বলেন, ‘‘না খেয়ে দিন কাটছে। কিন্তু আমাদের তবু কিছু একটা ব্যবস্থা হবে, ছেলেগুলোর কথা ভেবেই আতঙ্কে রয়েছি।’’
রাজ্যসভার সাংসদ তথা জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুরকেও বিষয়টি জানিয়ে সাহায্যের আবেদেন জানিয়েছেন আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিজনেরা। তিনি বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলছি।’’
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy