Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

‘পেট ভরে খেতে পাব এ বার!’

উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে ফোনে ওঁরাই জানালেন, এ রাজ্যের উদ্যোগে বিশেষ ট্রেনে খুব শীঘ্রই বাড়ির পথে রওনা হবেন ওঁরা।

ছবি এএফপি।

ছবি এএফপি।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২০ ০৫:৫১
Share: Save:

বাড়ি ফেরার ট্রেনে অনলাইনে নিজেদের নাম নথিবদ্ধ করার পর থেকে আর যেন তর সইছে না ওঁদের।রেলের থেকে একটি এসএমএসও মোবাইলে পেয়েছেন ওঁরা। যত দিন এগিয়ে আসছে, ততই যেন ওঁরা অধীর হয়ে উঠছেন। ঘনঘন থানা-বিডিও অফিসে ঘুরপাক খাচ্ছেন কোচবিহারের বাসিন্দা ফিরদৌস আলি, আয়ুব আলিরা।

উত্তরপ্রদেশের নয়ডা থেকে ফোনে ওঁরাই জানালেন, এ রাজ্যের উদ্যোগে বিশেষ ট্রেনে খুব শীঘ্রই বাড়ির পথে রওনা হবেন ওঁরা। তবে ওঁদের একটাই এখন প্রশ্ন, ট্রেন কবে আসবে? তাঁরা কি জায়গা পাবেন? আয়ুব তো বলেই ফেললেন, “ট্রেনের কথা শুনে প্রথমেই মনে হয়েছে, বাড়ি ফেরা। আর বাড়ি ফেরা মানেই পেট ভরে দুটো ভাত খাওয়া!” ফিরদৌস বললেন, “আসলে খুব কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে আমাদের। অনেকদিন পেট ভরে খেতে পাচ্ছি না। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাড়ি ফিরতে চাই।”

ট্রেনে রাজ্যের শ্রমিকদের ফেরানোর ব্যাপারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ইতিমধ্যেই শ্রমিকদের নিয়ে ট্রেন বিভিন্ন জায়গা থেকে রওনা হতে শুরু করেছে। নয়ডার শ্রমিকদের নিয়েও ট্রেন ফিরবে। সবাই ঘরে ফিরতে পারবেন।” ফিরদৌস-আয়ুবরা দীর্ঘদিন ধরেই নয়ডায় থাকেন। তাঁদের সঙ্গে আরও অন্তত কোচবিহারের পাঁচশো মানুষ রয়েছেন। প্রায় প্রত্যেকেই সেখানে রাজমিস্ত্রি এবং সহকারীর কাজ করেন। কেউ কেউ অন্য কাজেও যুক্ত ছিলেন। লকডাউন শুরু হওয়ার পরে আর তাঁরা সেখান থেকে ফিরতে পারেননি। কাজ বন্ধ হয়ে যায়। জমানো টাকাতেও টান পড়ে। চিন্তায় পড়ে যান ওঁরা। তাঁদের অভিযোগ, লকডাউনের প্রায় দু-মাস হতে চলল, সরকারি কোনও ত্রাণ তাঁরা পাননি। এই অবস্থায় ট্রেন চলতে শুরু করেছে জানতে পেরে কিছুটা খুশি হয়েছিলেন তাঁরা। তবে মাত্রাতিরিক্ত ভাড়ার কথা জেনে পেরে হতাশ হয়ে যান। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনের কথা জানতে পেরে নতুন করে বাড়ি ফেরার চেষ্টা শুরু হয় তাঁদের। তাঁরা অনলাইনে নিজেদের নাম-ঠিকানা নথিবদ্ধ করান।

ফিরদৌস বলেন, “অনলাইনে নাম নথিবদ্ধ করার পরে মোবাইলে একটি এসএমএস পেয়েছি। তাতে অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে। সেই অপেক্ষাতেই বসে আছি। এখানে থাকা প্রতিদিন নতুন করে চাপের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে আমাদের।” আয়ুব বলেন, “যা শুনছি তাতে অল্প ট্রেন দেওয়া হয়েছে। আমাদের এখানে তো প্রচুর মানুষ। সবাই কি ট্রেনে জায়গা পাব?”

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ থেকে একাধিক ট্রেন নিউ কোচবিহারে পৌঁছবে। সোমবারেও একটি ট্রেন কোচবিহারে পৌঁছয়। প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “প্রয়োজনে আরও ট্রেন বরাদ্দের কথা সরকার জানিয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE