বরাদ্দ খরচ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করল মালদহ জেলা প্রশাসন। রাজ্য সরকারের নির্দেশে সোমবার বিকেলে প্রশাসনের তরফে অতিরিক্ত জেলাশাসকের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মালদহের জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, “কমিটিকে দ্রুত রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মাত্র দু’দিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিত্ত আধিকারিক জাহির হোসেনের বিরুদ্ধে গঠিত হওয়া তদন্ত কমিটির সদস্যেরা জেলায় আসেন। মঙ্গলবার বিকেলে ওই আধিকারিকের প্রয়োজনীয় নথি খতিয়ে দেখেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যেরা। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো এক মাসের মধ্যেই সেই রিপোর্ট উচ্চ শিক্ষা দফতরে পেশ করার কথা তাঁদের। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গঠিত হল আরও একটি তদন্ত কমিটি।
কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযানের (রুশা) টাকা খরচ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে গৌড়বঙ্গে। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে কয়েক দফায় ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। তার মধ্যে আট কোটি টাকা খরচ নিয়েই উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। অভিযোগ, ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিবর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের দফতর ঢেলে সাজাতে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। সব আধিকারিকের ভবনই বিলাসবহুলভাবে নির্মাণ করা হয়েছে।
এই নিয়েই সরব হন জেলার বিরোধীরা, এমনকী, অধ্যাপক মহলের একাংশও। সপ্তাহ দুয়েক আগে সরকার তদন্তের নির্দেশ দেয়। তবে এর মধ্যে গোপালচন্দ্র মিশ্র উপাচার্য পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় তদন্ত-প্রক্রিয়া শুরু করেনি প্রশাসন। যদিও অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে স্বাগত সেনের নাম ঘোষণা হতেই তড়িঘড়ি কমিটি করে জেলা প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে।
অতিরিক্ত জেলা শাসক আর বিমলার নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেখানে ভূমি সংস্কার, ট্রেজারি অফিসার-সহ পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়ারও রয়েছেন। সেই ইঞ্জিনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণ কমিটির সদস্য ছিলেন। কিন্তু তাঁকেও কমিটিতে রাখায় তদন্তের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অধ্যাপক থেকে বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, গাফিলতি ঢাকতেই তদন্ত কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জড়িত আধিকারিককে রাখা হয়েছে। বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এখানে তদন্তের নামে মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে আমরা ফের প্রশাসনের দারস্থ হব।” তবে সমস্ত দিক বিবেচনা করেই কমিটির সদস্য নির্বাচন করা হয়েছে বলে জানান জেলাশাসক। তাঁর আশ্বাস, ‘‘তদন্ত সঠিক পথে চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy