Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে অভিযানে বিতর্ক

জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’’  সনাতনবাবু বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আমার স্কুলে গিয়েছিলাম। এ দিনের ঘটনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে  জানাব।’’

বাক্যবিনিময়: প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে এনফোর্সমেন্ট স্কোয়াডের কর্তারা। নিজস্ব চিত্র

বাক্যবিনিময়: প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে এনফোর্সমেন্ট স্কোয়াডের কর্তারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:০৪
Share: Save:

তামাকজাত দ্রব্যের বিরুদ্ধে অভিযান করতে গিয়ে একটি সরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের একাংশের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন জেলা স্তরের কোটপা এনফোর্সমেন্ট স্কোয়াড। মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে আলিপুরদুয়ার শহরের ম্যাকউইলিয়াম হাইস্কুলে। ওই স্কোয়াডে ছিলেন উপ মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা সুর্বণ গোস্বামী, ডিএসপি হেডকোয়ার্টার রুদ্রনারায়ণ সাউ, শিক্ষা দফতরের এসআই সনাতন পাল সহ জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পুলিশকর্মীরাও। কিন্তু অভিভাবকদের একাংশ ও স্কুল কর্তৃপক্ষের একাংশ তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করেননি বলে দাবি। বরং স্কুলের ফটক আটকে তাঁদের কিছু ক্ষণ আটকেও রাখা হয়েছে বলে দাবি।

জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’’ সনাতনবাবু বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশে আমার স্কুলে গিয়েছিলাম। এ দিনের ঘটনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’’

এ দিন সকাল থেকে বিভিন্ন স্কুল ও সংলগ্ন এলাকায় তামাকজাত দ্রব্যের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেন স্বাস্থ্য দফতর, পুলিশ ও স্কুল দফতরের ওই কর্তারা। বেলা দু’টো নাগাদ ম্যাকউইলিয়াম স্কুলে ঢোকে সরকারি আধিকারিকদের দলটি। তাঁরা স্কুলের কমনরুম ও প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষকের বসবার ঘরে ঢোকেন। কয়েক জন কর্মী স্কুলের কমনরুমের শৌচাগার ও পড়ুয়াদের শৌচাগার ঘুরে দেখেন। সেই সময় প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বসে কথা বলেন সুর্বণবাবু, রুদ্রনারায়ণবাবু, সনাতনবাবুরা। স্কুল চত্বরে তাঁরা ধূমপান বর্জিত এলাকার নির্দিষ্ট নোটিস দেখতে পাননি। সে কথা জানিয়ে তাঁরা স্কুল কর্তৃপক্ষকে দু’শো টাকা জরিমানা করেন। সেই রশিদ প্রধান শিক্ষকে দেওয়া হলে তিনি তা নিতে অস্বীকার করেন। এর পরেই কয়েকজন অভিভাবক সুবর্ণবাবুদের পাল্টা প্রশ্ন করতে থাকেন, কেন তাঁরা স্কুলে ঢুকলেন? কয়েক জন অভিভাবক দাবি করেন, ওই স্কোয়াডের অভিযানের কারণে স্কুলের পরীক্ষা বিঘ্নিত হয়েছে। এই ঘটনার কিছু ক্ষণ পরে ডিএসপি স্কুল থেকে বেরিয়ে যান। তার পরে স্কুল চত্বর থেকে বের হতে গেলে স্কোয়াডের একটি গাড়িকে আটকে দেন অভিভাবকরা। পরীক্ষার শেষের দিকে ক্ষোয়াডের সদস্যরা স্কুল থেকে বের হতে গেলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভও দেখান অভিভাবকরা। প্রধান শিক্ষক সুধাংশু বিশ্বাসও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। স্বোয়াডের সদস্যরা জানান শান্তিপূর্ণ ভাবে কাজ করছিলেন তাঁরা।

সুধাংশুবাবু বলেন, ‘‘এ দিন বেশ কয়েকটি গাড়ি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ওই দলটি স্কুলে ঢুকে পড়ে। সঙ্গে ছিল পুলিশও। তা দেখে পরীক্ষার্থীরা ঘাবড়ে যায়। পরীক্ষার বিঘ্নিত হয়েছে। তা ছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন এ ভাবে বিনা অনুমতিতে তাঁরা স্কুল চত্বরে ঢুকতে পারেন না। বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকরা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।’’ নোটিস প্রসঙ্গে সুধাংশুবাবুর বক্তব্য, ‘‘ওই নোটিস সর্ম্পকে আমাদের আগে জানানো হয়নি। ধূমপান সংক্রান্ত কাগজের কিছু নোটিস লাগানো হয়েছিল। তা পড়ুয়ারা ছিঁড়ে ফেলে। ওঁদের কাছ থেকে জরিমানার কাগজ নেওয়া হয়নি। এ দিনের পরীক্ষা নিয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক পূরণ শর্মা অবশ্য বলেন, ‘‘কোটপা আইন মেনেই জেলা কমিটির নির্দেশে স্কোয়াড অভিযান চালিয়েছে। ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ নিয়ম মানছেন না। জরিমানা করতে গেলে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। লিখিত ভাবে অভিযোগ পাওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে জেলার শীর্ষকর্তাদের জানানো হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

COTPA Enforcement Squad Tobacco School
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE