Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পুজো শেষে শুরু রাসের প্রস্তুতি

রঙ্গিন আলোয় সেজেছে রাজবাড়ি। নীল আলোয় ভাসছে মদনমোহন মন্দির। জোর কদমে চলছে বৈরাগী দিঘি সৌন্দর্যায়নের কাজও। সব মিলিয়ে দুর্গাপুজো পর্ব মিটতে না মিটতেই এ বার কোচবিহারে রাসমেলার কাউন্টডাউন শুরু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৬
Share: Save:

রঙ্গিন আলোয় সেজেছে রাজবাড়ি। নীল আলোয় ভাসছে মদনমোহন মন্দির। জোর কদমে চলছে বৈরাগী দিঘি সৌন্দর্যায়নের কাজও। সব মিলিয়ে দুর্গাপুজো পর্ব মিটতে না মিটতেই এ বার কোচবিহারে রাসমেলার কাউন্টডাউন শুরু। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার ১৪ নভেম্বর রাসমেলা শুরু হচ্ছে। ওই দিন সন্ধ্যায় কোচবিহার মদনমোহন মন্দিরে রাসচক্র ঘুরিয়ে রাস উৎসবের সূচনা করবেন দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা জেলাশাসক পি উল্গানাথন। ইতিমধ্যে রাসমেলার প্রাথমিক প্রস্তুতির বৈঠক হয়েছে। পুলিশ, প্রশাসন, পুরসভা, পূর্ত, জনস্বাস্থ্য কারিগরি, বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। রাসমেলা ও উৎসব দুটিকেই আরও আকর্ষণীয় করে তোলার ব্যাপারে বৈঠকে জোর দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে বেশ কিছু কাজ শুরু হয়েছে।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “উৎসবের মরসুমে কোচবিহার শহরকে আরও আকর্ষণীয় করে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজবাড়ি ও মদনমোহন বাড়িতে অস্থায়ী আলোকসজ্জা হয়েছে। বৈরাগী দিঘির বুকে জলের ফোয়ারার কাজও অনেকটাই এগিয়েছে।” উল্গানাথন বলেন, “পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে রাসমেলা পর্যন্ত রাজবাড়ি, মদনমোহন বাড়ির আলোকসজ্জা রাখা হবে। বৈরাগী দিঘির একটি অংশের কাজ রাসের আগে চালু করার ব্যাপারে চেষ্টা হচ্ছে।”

ইতিহাস গবেষকরা জানিয়েছেন, ১৮১২ সালে মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণের আমলে কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে রাসমেলা শুরু হয়। ১৮৯০ সালে মদনমোহন মন্দির তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়। ওই বছর থেকেই কোচবিহার শহরের বৈরাগী দিঘির পাড়ে ওই মেলা শুরু হয় বলে তাদের অনেকের অনুমান। ১৯১৭ সালে ওই মেলা ‘প্যারেড গ্রাউন্ড’ ( বর্তমানে রাসমেলা ময়দান বলে পরিচিত) স্থানান্তর হয়। ফি বছর মেলায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে তো বটেই, অসম থেকেও প্রচুর মানুষ আসেন। নেপাল, ভুটান থেকে ব্যবসায়ীরা রাসমেলায় পসরা নিয়ে হাজির হন। ফি বছরের মতো এবারেও দুর্গাপুজো মিটতে না মিটতেই তাই রাসমেলা ঘিরে উৎসাহের পারদ চড়ছে। কোচবিহার সদরের মহকুমা শাসক অরুন্ধতী দে জানিয়েছেন, রাসমেলার প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে ১৪-২৯ নভেম্বর পর্যন্ত মেলা চলবে বলে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির কাজ এগোচ্ছে।

প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, কোচবিহারে পর্যটক আকর্ষণ বাড়াতে কয়েক বছর আগে রাজবাড়িতে বাহারী রঙিন আলোয় সাজিয়ে তোলা হয়। সে সব দীর্ঘ দিন থেকে বিকল হয়ে পড়ায় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। পুজো থেকে রাস-কোচবিহারে উৎসবের মরসুমের কথা ভেবে অস্থায়ীভাবে এলইডি আলোকসজ্জা চালু করা হয়। মদনমোহন মন্দিরেও লাগান হয়েছে বাহারি নীল আলোকমালা। পর্যটন দফতরের বরাদ্দে ওই মন্দির লাগোয়া বৈরাগী দিঘিতে রং বেরঙের ফোয়ারা, পর্দায় মদনমোহনদেবের ছবি ও ভাষ্য তুলে ধরার কাজও চলছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, মদনমোহন বাড়ি ও রাজবাড়ির আলোকসজ্জার জন্য প্রায় দুই লক্ষ টাকা খরচ হচ্ছে। দিঘির সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rasmela preparation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE