Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

সংস্কৃতি যেখানে যেমন...

জলপাইগুড়ি সৃষ্টি মাইম থিয়েটারের উদ্যোগে এবং ভারত সরকারের সঙ্গীত নাটক আকাদেমির সহযোগিতায় ৭ থেকে ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হল ‘উত্তরবঙ্গের লোকনাট্যের পরিপ্রেক্ষিতে মূকাভিনয়’ বিষয়ক কর্মশালা।

শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৫ ০৩:২৮
Share: Save:

লোকনাট্যের পরিপ্রেক্ষিতে মূকাভিনয়

লেখা ও ছবি: অনিতা দত্ত।

জলপাইগুড়ি সৃষ্টি মাইম থিয়েটারের উদ্যোগে এবং ভারত সরকারের সঙ্গীত নাটক আকাদেমির সহযোগিতায় ৭ থেকে ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত হল ‘উত্তরবঙ্গের লোকনাট্যের পরিপ্রেক্ষিতে মূকাভিনয়’ বিষয়ক কর্মশালা। উত্তরবঙ্গের লোকনাট্য, লোকনাট্য শিল্পীরা মূকাভিনয় সম্পর্কে কি ভাবছেন, মূকাভিনয় শিল্পীদেরই বা কি ধারণা লোকনাট্য সম্পর্কে এবং উত্তরবঙ্গের লোকনাট্যের আঙ্গিকে অভিনয়, নৃত্যাংশ, তাল-লয়-ছন্দ কী ভাবে মূকাভিনয়ে ব্যবহৃত হতে পারে এমন বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারলেন শিক্ষার্থীরা। সাত দিনের এই কর্মশালায় আগ্রা, ভোপাল, চট্টগ্রাম, কোচবিহার, মালদা, অসমের প্রায় ত্রিশ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পদ্মশ্রী নিরঞ্জন গোস্বামী, রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত মূকাভিনেতা কল্পতরু গুহ, লোকনাট্য শিল্পী জিতেন বর্মন, নাট্যব্যক্তিত্ব তীর্থঙ্কর রায় এবং মূকাভিনেতা ও লোকনাট্য গবেষক সব্যসাচী দত্ত।

নাট্যোত্‌সব

ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের সহায়তায় ও মালদহ মালঞ্চ নাট্যগোষ্ঠীর উদ্যোগে ১৯ মার্চ থেকে মালদহের দুর্গাকিঙ্কর সদনে শুরু হতে চলেছে নাট্যোত্‌সব। উত্‌সবে অংশ নেবে এ-পার বাংলার ৮ টি এবং ও-পার বাংলার ১টি নাট্য দল। উদ্বোধনী নাটক মালদহ মালঞ্চেরই সাড়া জাগানো প্রযোজনা ‘গম্ভীরা গম্ভীরা’। নাট্যকার পরিমল ত্রিবেদী জানান, এটি তাঁদের ২২ তম নাট্যোত্‌সব। সেভাবে কোনও থিমকে প্রাধান্য দেন না তাঁরা। তাঁদের মূল উদ্দেশ্য, উঠতি পরিচালকদের সঙ্গে মালদহের নাট্যপ্রেমীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়া। এবারের উত্‌সবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে মালদহের লোকসংস্কৃতিকে। এবং সেই কথা মাথায় রেখেই উত্‌সবের উদ্বোধন করবেন মালদহের গম্ভীরা শিল্পী ও ‘গম্ভীরা গম্ভীরা’ নাটকের দুই কুশীলব। উত্‌সবের দ্বিতীয় দিনে থাকছে ঢাকার প্রযোজনা শূণ্যনের ‘লালজমিন’ এবং কলকাতার আরশির নাটক ‘লেডি ম্যাকবেথ’। ৩ এপ্রিল মালদহ সমবেত প্রয়াস নাটক পরিবেশনা করবে। ৪ এপ্রিল বহরমপুর রঙ্গাশ্রমের ‘সন্তাপ’ এবং পাঁচই এপ্রিল শান্তিপুরের ‘বৃষ্টির ছায়াছবি’ ও গোবরডাঙা নকশার ‘বিনোদিনী’, পরিবেশিত হবে ৬ ই এপ্রিল। দেবব্রত আচার্যর নির্দেশনায় কোচবিহারের নাটক ‘চোপ আদালত চলছে’। উত্‌সবের শেষ দিন থাকছে কালিয়াগঞ্জ অনন্য থিয়েটারের প্রযোজনা ‘লাশের উপাখ্যান’।

লুপ্তপ্রায় লোকগান

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচারস-এর উদ্যোগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হল লুপ্তপ্রায় লোকনাট্য ও লোকগান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পরিবেশিত হল তক্ষৈা, গমিরা, বিষহরা ও ভেদেইমেলি-র মতো উত্তরবঙ্গের নিজস্ব লোকগীতি ও লোকনাটক। অনুষ্ঠানে অংশ নেন দার্জিলিঙ্গ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের লোকশিল্পীরাও।

তিস্তা

‘বিরাণ জমিতে নহর কেটে আনি/ ঢেউ তুলে আনি’। শুধু ঢেউ নয়, তনুশ্রী পাল তুলে আনলেন অজস্র কবিতাও। তুলে আনা কবিতায় সেজে উঠল ‘তিস্তা’। সেই সব কবিতারা একক, যুগল, গুচ্ছ, হ্রস্ব-দীর্ঘ, স্বরচিত, এবং অনূদিত। ‘তিস্তা’র আঁকেবাঁকে কবিতার ‘পৃষ্ঠা উল্টায় রূপকথার চাষি’। তখন ‘নিঝুম দুপুর বেলা’, ‘মেঘ গেছে উড়ে’। অনাবিল জলধারায় মেঘের ছায়া পড়ে, ছায়া পড়ে কবিতা-প্রবন্ধকথার। ‘তিস্তার’র রুপোলি রেখায় ইতিউতি ঝিলিক দেয় ও পার বাংলার বর্ণমালা। কান পেতে শোনা যায় এ পার-ও পার দুই বাংলার এক ভাটিয়ালি সুর। কবিদের এমন চয়ন আর জলস্রোতের বহতা ক্যানভাসে পিটু রশিদের অসাধারণ জলছবিজলপাইগুড়ির ‘তিস্তা’ এত উচ্ছল কখনও হয়েছিল?

সাহিত্য মেলা

শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে দাগাপুরের বসুন্ধরায় হল উত্তরবঙ্গ নাট্যজগতের আন্তর্জাতিক সাহিত্য মেলা ও গুণীজন সংবর্ধনা। ১ মার্চ ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের কয়েকজন কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, চলচ্চিত্রকারও। রাজা রামমোহন রায়ের উপরে নাট্যজগতের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। বক্তব্য রাখেন উত্তরবঙ্গের পরিমল দে, বাংলাদেশ থেকে আসা শরিক সুমন। অনুষ্ঠানের সভাপতি আনন্দগোপাল ঘোষ ওই পত্রিকার ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন।

মহিলাদের জন্য উদ্যোগ

‘সিনি’ অর্থাত্‌ চাইল্ড ইন নিড ইনস্টিটিউটের (শিলিগুড়ি) ‘মডেল ভিলেজ প্রোগ্রাম’ কর্মসূচি প্রকল্পে তৈরি হয়েছিল ‘শিকারপুর নারীকল্যাণ সমিতি’। শিকারপুর চা-বাগান অঞ্চলে শিশু এবং মহিলাদের স্বাস্থ্য শিক্ষা পুষ্টি ও সুরক্ষার জন্য কাজ করে এরা। নারী দিবসে জলপাইগুড়ি-রাজগঞ্জ ব্লকের নারীকল্যাণ সমিতি ‘সিনি’, শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এবং চা-বাগান কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আয়োজন করেছিলেন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনাসভার। নারীপাচার রোধ, নারীশিক্ষা, মেয়েদের কন্যাশ্রী প্রকল্পভুক্ত করা এমন সব বিষয় শোনা গেল আলোচনায়। অংশ নিলেন স্থানীয় চা-বাগানের আদিবাসী বাসিন্দারা। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক, পঞ্চায়েত প্রধান, স্বাস্থ্য বিভাগ ও অঙ্গনওয়ারির প্রতিনিধি-সহ আরও অনেকে। লেখা: সুদীপ দত্ত।

ছাত্রছাত্রীদের প্রতিযোগিতা

নাবার্ড (ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ফর এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ডেভেলপমেন্ট)-এর উদ্যোগে ১০ মার্চ জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রয়াস হলে জেলার ছাত্রছাত্রীদের জন্য ক্যুইজ-এর আয়োজন করা হয়। জেলার বিভিন্ন ব্লক থেকে সাতাশটি স্কুলের প্রায় ২৭০ জন ছাত্রছাত্রী এই ক্যুইজ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় মাল আদর্শ ভবন। রানার্স হয় ডাউকিমারি ডি এন হাইস্কুল। নাবার্ডের জেলা আধিকারিক গণেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিককে আর্থিক বিষয়ে সচেতন করে তোলার জন্য এবং প্রতিটি পরিবারে দুটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দেশের অর্থনীতির মূলস্রোতে যুক্ত করার জন্য নাবার্ড রাজ্যের প্রতিটি জেলায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।

হরেন ঘোষ স্মরণে

বয়সের কারণে তাঁর বাইরে বেরোন কমে গিয়েছে। কিন্তু, কোনও অনুষ্ঠানে গেলে এখনও ‘হরেনের সহাস্য মুখটি’ খোঁজেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও সাহিত্যিক অশ্রুকুমার শিকদার....। সাহিত্য-সংস্কৃতি দুনিয়ার অন্যতম সংগঠক, সাহিত্যিক, কবি নানা পরিচয়ে পরিচিত ছিলেন তিনি। সেই প্রয়াত হরেন ঘোষের স্মরণে প্রকাশিত হল ‘সিঞ্চল’-এর বিশেষ সংখ্যা। সেখানেই প্রথম লেখায় এমনই লিখেছেন অশ্রুবাবু। তাঁর হাতেই প্রকাশিত হল স্মরণিকা। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বইমেলার মঞ্চে।

ইতিহাসবিদ সংবর্ধিত

সম্প্রতি উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বিশিষ্টজনদের উদ্যোগে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করা হল ইতিহাসবিদ হিমাংশু সরকারকে। ওই অনুষ্ঠানে তাঁর লেখা ‘বিপ্লবী আন্দোলনে উত্তাল উত্তরবঙ্গ’ নামক গ্রন্থটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নীহারেন্দু মজুমদার। ইতিহাসের নানা কাহিনি মলাটবন্দি হয়েছে গ্রন্থটিতে।

সংস্কৃত ও বাংলা সাহিত্য আলোচনা

সম্প্রতি মালদহের সামসী কলেজে সংস্কৃত ও ভূগোল বিভাগে অনুষ্ঠিত হল জাতীয় সেমিনার। সাহিত্যিকরা উপদেশ বা শিক্ষা দেবার জন্য সাহিত্য সৃষ্টি করেন না। তাঁরা আনন্দ দানের জন্য যা লেখেন তা থেকে পাঠক উপদেশের রসদ খুঁজে পেতে পারেন। সংস্কৃত সাহিত্য থেকে অন্যান্য ভাষার সাহিত্য ভিন্নধর্মী। অন্য ভাষায় সৃষ্ট সাহিত্যে থাকে গল্প, কবিতা, নাটক। কিন্তু সংস্কৃত সাহিত্যে রচিত হয়েছে আইন থেকে আয়ুর্বেদশাস্ত্রসব কিছুই। তাই সেখানে উপদেশ থাকবেই। পক্ষে বিপক্ষে এমন নানা মত উঠে এল ‘সংস্কৃত সাহিত্যে উপদেশ’ শীর্ষক আলোচনায়। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সত্যনারায়ণ আচার্য, তারকনাথ অধিকারী। মালদহ জেলার জনসংখ্যা সমস্যা থেকে সীমান্তে বসবাসকারী মানুষের বিভিন্ন সমস্যার কথা, এমনকী শিশুশ্রমের বিষয়ও আলোচিত হল ভূগোল বিভাগ আয়োজিত সেমিনারে। বক্তব্য রাখেন অধ্যাপিকা সুষমা রোহিতগী এবং আনোয়াউরজ্জামান। পাশাপাশি ‘বাংলাভাষা ও সাহিত্যে নানা চর্চা’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক আলোচনার আসর বসেছিল কলেজেরই বাংলা বিভাগের উদ্যোগে। আলোচনায় অংশ নেন শর্মিলা বাগচী, ডঃ দ্রোণ উপাধ্যায়, গীতিময় রায়, ডঃ নিখিলেশ রায়, অধ্যাপক দীপক কুমার রায় প্রমুখ। প্রায় চারশো জন প্রবন্ধ পাঠ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cultural North Bengal Short News Drama Theater
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE