Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নিরাপত্তা বিতর্কের মধ্যে দফতরে লিপিকা, সঙ্গে শুধু পাঁচ

২৪ জুন দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর সঙ্গে সেদিন জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ১০ জন সদস্যকে নিয়ে সভাধিপতি লিপিকাও দলবদল করেছিলেন।

বিতর্ক: জেলা পরিষদের পদে না থেকেও জেলা সভাধিপতির দফতরে লিপিকা রায়ের দু’পাশের চেয়ারে বসে বিপ্লব মিত্র ও শুভেন্দু সরকার। নিজস্ব চিত্র

বিতর্ক: জেলা পরিষদের পদে না থেকেও জেলা সভাধিপতির দফতরে লিপিকা রায়ের দু’পাশের চেয়ারে বসে বিপ্লব মিত্র ও শুভেন্দু সরকার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১২ জুলাই ২০১৯ ০২:০৮
Share: Save:

তিন সপ্তাহ পরে, বৃহস্পতিবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদ ভবনে ঢুকলেন সভাধিপতি লিপিকা রায়। দেহরক্ষী ছাড়াই। সঙ্গে ছিলেন বিপ্লব মিত্র, যাঁর সঙ্গে সম্প্রতি তিনিও সদ্য বিজেপিতে যোগ দিতে দিল্লি গিয়েছিলেন। এঁদের সঙ্গে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকারও। বিজেপির দাবি অনুযায়ী, তাঁর সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন জেলা পরিষদের আরও ৯ জন সদস্য। কিন্তু এ দিন জেলা পরিষদ ভবনে বিপ্লব-লিপিকার সঙ্গে এলেন মাত্র ৫ জন সদস্য। ফলে প্রশ্ন উঠে পড়ল বোর্ড দখল সংক্রান্ত বিজেপির এই কয়েকদিনের দাবি নিয়েই। এ জল্পনাও ছড়াল, তাহলে কি জেলা তৃণমূল সভাপতি অর্পিতা ঘোষের কৌশল কাজে লেগে গেল!

এ দিন বিপ্লব অবশ্য জেলা পরিষদ ভবনে দাঁড়িয়ে অর্পিতার কৌশল নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘১৮ জন সদস্যের জেলা পরিষদে এক-তৃতীয়াংশ সদস্য অর্থাৎ ৬ জন উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চায়েতের আইনে তাতে জেলা পরিষদ বিজেপির দখলে আসতে কোনও বাধা নেই। অনুপস্থিত সদস্যরা আমাদের সঙ্গেই আছেন। জেলার বাইরে থাকায় দু’জন আসতে পারেননি। পাশাপাশি, দু’জনকে ভয় ও হুমকি দেখিয়ে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে।’’ অন্য দিকে, এ দিন কলকাতা থেকে টেলিফোনে অর্পিতা পাল্টা দাবি করে বলেন, ‘‘এক-তৃতীয়াংশের গল্প এখন আর নেই। পঞ্চায়েতের নিয়ম বদল হয়েছে। পদ্ধতি মেনেই দলত্যাগীদের সদস্যপদ বাতিল হবে। জেলা পরিষদ তৃণমূলের দখলে আসা এখন সময়ের অপেক্ষা।’’

২৪ জুন দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে গিয়ে তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর সঙ্গে সেদিন জেলা পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ১০ জন সদস্যকে নিয়ে সভাধিপতি লিপিকাও দলবদল করেছিলেন। দিল্লি থেকে তাঁরা জেলায় ফেরেন ৬ জুলাই। আজ লিপিকা জেলা পরিষদে ঢোকেন বাকি চারজনকে ছাড়াই। অর্পিতার ইঙ্গিত, ওই চার জনের মধ্যে তিন জন ইতিমধ্যে ফের তৃণমূলে ফিরছেন।

এ দিন বিকেল ৩টেয় বালুরঘাট নাট্যমন্দিরে জেলা বিজেপির সভা ছিল। সভাধিপতিকে নিয়ে সপার্ষদ বিপ্লব ওই সভায় হাজির হন। সভার পর সাড়ে ৪টে নাগাদ ওই ৬ সদস্যকে নিয়ে জেলা পরিষদে ঢুকে সভাধিপতি লিরিকা নিজের ঘরে বসেন। পাশে বিপ্লব, দলের জেলা সভাপতি শুভেন্দু ও সদস্যদের নিয়ে লিপিকা জানান, তিনি সকলকে নিয়ে কাজ করতে চান। তাঁরা কোনও জোরজবরদস্তি করবেন না। তবে জেলা পরিষদে সভাধিপতির ঘরে রাজনেতিক দলের নেতারা কীজন্য বসে আছেন, এই প্রশ্ন উঠেছে। বিপ্লব এর জবাবে বলেন, ‘‘দলের লোক বসতেই পারেন এখানে। কারণ দল নিয়েই এখানে লড়াই। আর আমাদের দলের সভাধিপতির ঘরে দলের নেতারা বসতেই পারেন।’’ তিনি এ দিন আরও জানান, রাষ্ট্রমন্ত্রীর পদমর্যাদার সভাধিপতির দেহরক্ষী তুলে নেওয়ার ঘটনাটি আদতে রাজ্যের পক্ষেই লজ্জার বিষয়। বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE