বেপরোয়া: বিধিনিষেধ কার্যত উপেক্ষা করেই শিলিগুড়ি হাসমিচকে যানজট, বৃহস্পতিবার। ছবি: স্বরূপ সরকার
করোনা সংক্রমণে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে এত দিন শীর্ষে ছিল মালদহ। এ বার পাল্লা দিতে শুরু করল দার্জিলিং জেলা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দার্জিলিঙে আক্রান্তের সংখ্যা ২৭৮৮, মালদহে ২৭৭৩ জন। যদিও স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে ৪ অগস্ট পর্যন্ত মালদহে সংক্রমিত ২৭৫০ জন এবং দার্জিলিঙে ২৬৪৮ জন দেখানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ হল, দার্জিলিং জেলায় ভিন রাজ্য থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যাও কম। মালদহে যেখানে দেড় লক্ষেরও বেশি পরিযায়ী ফিরেছে, দার্জিলিঙে সেখানে ১০ হাজারের মতো। তার পরেও কেন সংক্রমণের শীর্ষে এই জেলা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিসৎসকদের একাংশের মতে গোড়া থেকেই বিধি নিষেধ মানার ক্ষেত্রে কিছু শিথিলতার ফলেই সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি। এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকাটাই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। অভিযোগ উঠেছে, ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা বাসিন্দাদের কোয়রান্টিন করা হয়নি সব ক্ষেত্রে। বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে থার্মাল চেকিং করে দেওয়ার পর হোম কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হত। তা অনেকেই মানেননি বলেই দাবি। পরে কয়েকটি ক্ষেত্রে তাঁদের সংক্রমণ মিলেছিল। বেশি মাত্রায় লালারসের নমুনা পরীক্ষা, কনট্যাক্ট ট্রেসিং, আক্রান্ত এবং সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়রান্টিন করার কাজ যথাযথ হলে এখনও সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, মনে করেন জেলার ডাক্তারদের একাংশ। শিলিগুড়ির বাজারগুলিতেও বিক্রেতাদের স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার না করা, মাস্ক না পরা দূরত্ববিধি উড়িয়ে ভিড় সংক্রমণ বাড়িয়েছে। পাহাড়ে জিটিএ কর্তৃপক্ষ বহিরাগতদের যাতায়াত বন্ধ করতে কড়া ব্যবস্থা নেন। তাতে এখনও পাহাড়ের পরিস্থিতি কিছুটা ভাল। তবে সেখানেও সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর এ নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি উত্তরবঙ্গের অন্যতম বড় বাজার। নানা জায়গা থেকে লোকে এখানে আসেন। তাই এখানে ঝুঁকি সব সময়ই বেশি। আমরা বাজার বন্ধ করে, এলাকাভিত্তিক কনটেনমেন্ট জোন করে, শহর জুড়ে লকডাউন করে রোগ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করছি।’’
বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন চার জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এক জন মারা গিয়েছেন কাওয়াখালির কোভিড হাসপাতালে। এঁদের মধ্যে আছেন এনজেপি-র সুকান্তপল্লির এক ৭৫ বছর বয়সী ব্যক্তি, নকশালবাড়ির বীরসিংহ জোতের বাসিন্দা ৩৫ বছরের এক ব্যক্তি, শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার ৮৬ বছরের এক বৃদ্ধ, কিসানগঞ্জের ৩৪ বছরের এক যুবক। কোভিডে মারা যান শিলিগুড়ির মিলনপল্লি হাউজিংয়ের বাসিন্দা ৬২ বছরের এক ব্যক্তি। এদিন দার্জিলিং জেলায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হন ৩৫ জন। তাতে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৭৮৮ জন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy