মঞ্চে (বাঁ দিক থেকে) সুবোধ সরকার, গৌতম দেব ও অঞ্জন দত্ত। ছবি: স্বরূপ সরকার
কাপে ধোঁয়া ওঠা সুগন্ধি চা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ টয় ট্রেন দিয়েই এত দিন বিশ্বের দরবারে পরিচিত দার্জিলিং। এ বারে তাকে সাহিত্যের আঙিনায় তুলে আনার প্রচেষ্টাও শুরু হল। যদিও সূচনাটা পাহাড়ে হয়নি। হয়েছে তার পাদদেশে, শিলিগুড়িতে। সেখানে শনিবার প্রথম দার্জিলিং লিট মিট-এ সকলেই জানান, জেলায় সাহিত্য-সংস্কৃতির যে চর্চা, তাতে সেই ক্ষেত্রেও দার্জিলিং নামটা নিয়ে অনেক দূর এগোনো সম্ভব।
রাজ্য সাহিত্য অ্যাকাডেমির সভাপতি সুবোধ সরকার জানান, পনেরো বছর আগে যোধপুর লিট মিটের নাম ক’জন জানত। এখন তা গোটা দেশে তো বটেই, বিদেশেও পরিচিত। এখানে এর থেকে বড় সুবিধা রয়েছে— যার নাম দার্জিলিং। বিশ্বের সব প্রান্তে এই ‘ব্র্যান্ড’ পরিচিত। সাহিত্যকে জুড়ে নতুন দার্জিলিঙের পরিচয় তৈরি করাই যেতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘আজ এই লিট মিটে উৎসাহী কবি, সাহিত্যিকদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য। সকলে মিলে চেষ্টা করলে নিশ্চয়ই প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারব।’’
উত্তরবঙ্গ সংস্কৃতি পরিষদ, সম্প্রীতির উদ্যোগে এ বারের এই লিট মিট। উৎসবে যোগ দিয়ে মন্ত্রী গৌতম দেব কিছুটা আক্ষেপে’র সুরে বলেন, ‘‘বাণিজ্য আর পর্যটনের শহর হিসেবে আমাদের পরিচিতি। মানুষ ঘুরতে আসে আর চলে যায়। এটা বদল হওয়া জরুরি।’’ মন্ত্রীর সঙ্গে সহমত কবি, সাহিত্যিকেরা। তাঁরা জানান, এ জেলার পাহাড়ে নানা ধরনের সংস্কৃতি রয়েছে। সমতলেও ভাষা-সাহিত্যের প্রকারভেদ রয়েছে। সকলকে মেলাতে পারলে দার্জিলিং লিট মিট অত্যন্ত জনপ্রিয় হতে বাধ্য।
এ দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মৈনাক অতিথি নিবাসের বিভিন্ন হলে কবিতা পাঠের আসর থেকে সাহিত্যসভা, আলোচনাসভা হয়েছে। উৎসবে যোগ দিতে এসেছিলেন শ্রীজাত, বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, পৌলোমী সেনগুপ্ত, অংশুমান করের মতো নামী কবি। ছিলেন গায়ক অঞ্জন দত্তও। বিনায়ক বলেন, ‘‘শৈলশহরে এক দফায় সাহিত্য সভায় এসেছিলাম। আমরা বাংলায় আলোচনা, পাঠ করেছিলাম। সেখানে তা সকলের বোধগম্য না হওয়ায় একাংশ নিজেদের একটু বিচ্ছিন্নবোধ করছিলেন। আগামী দিনে দার্জিলিং লিট মিট সকল স্তরের সবাইকে নিয়ে হলে, তা এক সুতোয় বাঁধার কাজও করবে।’’
লিট মিট কমিটির আহ্বায়ক জয়ন্ত কর জানান, পরের বার এই অনুষ্ঠান আরও বড় পরিসরে করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy