Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Darjeeling

ছোটদের সঙ্গে গলা মেলালেন মন্ত্রী অরূপ-ইন্দ্রনীল

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘পেয়ার মহব্বত, রিস্তা, জনতার ভালবাসাতেই হয়। একে কখনও ভোলা যাবে না।’’

ইন্দ্রনীল সেন (বাঁ দিকে) ও অরূপ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র

ইন্দ্রনীল সেন (বাঁ দিকে) ও অরূপ বিশ্বাস। —ফাইল চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৬:১৯
Share: Save:

সকাল থেকেই শেষ পর্বের প্রস্তুতি চলছিল। মঞ্চের সামনে ব্যান্ডের তালে ‘কদম কদম বাড়ায়ে যা, খুশিকে গিত গায়ে যা’-এর স্টেজ রিহার্সেল দিচ্ছিল খুদেরা। রিনচেন তামাং, সঞ্জয় থাপা, গোকুল শেরপারা। কালো প্যান্ট, ঘিয়ে রঙের জামা পরে। ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেই। ওরা সবাই ‘এডিট উইল কিনস চিলড্রেন ফাউন্ডেশন’-এর পথশিশু। অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার সুযোগে তারা সকলেই খুশি। যা দেখে অনুষ্ঠান শুরু আগে ইন্দ্রনীল সেনও সেই রিহার্সালে গলা মেলালেন।

দার্জিলিঙে ম্যালের এক মাথায় ভানু ভক্তের মূর্তির কাছে জিটিএ সংস্কৃতি বিভাগের কর্মীদের গানের প্রস্তুতি চলছিল। ঠান্ডা একটুও কমেনি। তারও আগে সকালে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই একবার ম্যালে এসে ঘুরে গিয়েছেন। তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘জানুয়ারির এ সময় ফি বছরই ঠান্ডা পড়ে। কিন্তু এ বছর ঠান্ডা একটু বেশি।’’ মঞ্চের মধ্যে নেতাজির ঢাউস ফটো ফুলে সাজানো।

আগের দিন জাতীয় নাগরিক পঞ্জি এবং নতুন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় কয়েক হাজার মানুষের মিছিল, প্রতিবাদ সভা দেখেছে পাহাড়বাসী। বৃহস্পতিবার সকালে অবশ্য একেবারেই অন্যরকম আযোজন। নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালনের সরকারি অনুষ্ঠান। থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। তাঁর কথায়, ‘‘কার্সিয়াঙের গিদ্দা পাহাড়ে নেতাজি অনেক দিন ছিলেন। তাই ২০১১ সালে ক্ষমতায় এসেই এই সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, শুধু কলকাতায় নেতাজির জন্মজয়ন্তী পালন করব কেন? পাহাড় আমাদের হৃদয়। সেখানেও এই অনুষ্ঠান হবে। তাই চার বছর পাহাড়ে এবং এক বছর কলকাতার অনুষ্ঠানে আমি থাকছি।’’

বেলা ১২টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থলে পৌঁছন। ভানু ভক্তের মূর্তিতে ফুল দিয়ে মঞ্চে ওঠেন। সোয়া বারোটা নাগাদ সাইরেন বাজার সঙ্গে শুরু হয়ে যায় মূল অনুষ্ঠান। নেতাজির ছবিতে মালা, ফুল দেন মুখ্যমন্ত্রী। মঞ্চে তখন অরূপ বিশ্বাস, ইন্দ্রনীল সেন, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে, জিটিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিনয় তামাং, বর্তমান চেয়ারম্যান অনীত থাপারা। রায় ভিলার শিক্ষা ও সংস্কৃতি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা স্বামী নিত্যসত্যানন্দ, পাহাড়ের বিভিন্ন উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানরা। ম্যালে অন্য দিনের মতো ঘোরার ব্যাপার এ দিন ছিল না। যাঁরাই ম্যালে এসেছেন অনুষ্ঠানে শামিল হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘পাহাড়ের গান আমার খুব পছন্দের। পাহাড় সবাই এক সঙ্গে মিলে থাকতে চায়। আমরা কেন একে ভাগ করব? জয় ভারত, জয় বাংলার মতো আমরা জয় গোর্খা আওয়াজও তুলব। আমি সব সময় চাই দার্জিলিং ভাল থাকুক। বিশ্বে সেরা হোক। পাহাড়ের ভাইবোনেরা খুবই বুদ্ধিসম্পন্ন। তারা এগিয়ে যাক।’’ মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘পেয়ার মহব্বত, রিস্তা, জনতার ভালবাসাতেই হয়। একে কখনও ভোলা যাবে না।’’ কথা শেষ না হতেই হাততালি দিয়ে ওঠে পাহাড়ের মানুষ।

অনুষ্ঠান নিয়ে বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘পাহাড়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী কিছু খুশির খবর ঘোষণা করবেন, সেই অপেক্ষায় ছিলেন অনেকে। তা হল না। পাহাড়ের মানুষ জমির অধিকার এখনও পায়নি। পাহাড়ের বিরোধীদের পুলিশি হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী তা নিয়ে কিছু বললেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Darjeeling Arup Biswas Indranil Sen TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE