বিশ্ব ফুটবলে জমজমাট রাশিয়া। দেশ-বিদেশের ফুটবলপ্রেমীরা ভিড় জমিয়েছেন মস্কো থেকে সোচি-সহ নানা শহরে। হোটেল ও রেস্তোরাঁয় খানাপিনার সঙ্গে চলছে নেমার, মেসি বা রোনাল্ডোদের খেলা উপভোগ। কলকাতা, শিলিগুড়ি এবং কোচবিহার থেকে বেশ কিছু ফুটবল রসিক পৌঁছেছেন রাশিয়ায়। তাঁদের পাশাপাশি বিশ্বকাপের আসর জাঁকিয়ে বসেছে বিখ্যাত দার্জিলিং চা!ভারতীয়দের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বাসিন্দারাও মজেছেন ভুবনমোহিনী দার্জিলিং চায়ের আমেজে।
শিলিগুড়ি থেকে রাশিয়ায় বিশ্বকাপ খেলা দেখতে গিয়ে অভ্রজ্যোতি দাসের অভিজ্ঞতা এমনটাই। তিনি বলেন, ‘‘দেশটা পুরোটাই ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে চলছে। এরই মাঝে ভাল লাগল আমাদের দার্জিলিং চা-কে স্বমহিমায় দেখে। এক কাপ চায়ের দামটা আমাদের দেশের তুলনায় অনেকটা বেশি। কিন্তু এর স্বাদ নিতে ছাড়ছেন না কেউ।’’ তিনি জানান, সোচিতে সেদিন সকালে ব্রেকফাস্ট করার জন্য একটা রেস্তোরাঁয় ঢোকেন তিনি। ভারতীয় বুঝে মেনুকার্ড এগিয়ে দেন একজন। দেখলেন, রুশ ভাষায় রুবেলে দামের পাশাপাশি ইংরেজিতেও লেখা দার্জিলিং চা, অসম চা। তাঁর কথায়, ‘‘উফ্! কী অসাধারণ অভিজ্ঞতা!’’
রেস্তোরাঁর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে অভ্রজ্যোতি জানতে পারেন, একাধিক ব্র্যান্ড ও স্বাদের দার্জিলিং ও অসম চা বিক্রি হয় রাশিয়ায়। খেলার জন্য কফির সঙ্গে সমানতালে বিক্রি হচ্ছে ভারতের চা। অসম জামগুড়ি, অসম থাইম, দার্জিলিং হ্যাপিভ্যালির নাম মেনু কার্ডে লেখা। তিনি বললেন, ‘‘৩০০-৪০০ টাকা এক কাপ চায়ের দাম পড়লেও স্বাদে-গন্ধে যেন মনে হয়েছে, দার্জিলিংয়ের কেভেন্টার্স, গ্নেনারিজ অথবা ম্যালের চৌরাস্তায় বসে চা খাচ্ছি। কী অভিজ্ঞতা!’’ সেন্ট পিটার্সবার্গে চার যুবকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল অভ্রজ্যোতিদের। তাঁরা জানালেন, গত বছর সকলেই দার্জিলিং এসেছিলেন। চারজনই জানিয়েছেন, চা জগতের শ্যাম্পেন বলে পরিচিত দুধ-ছাড়া দার্জিলিং চা সকলেই উপভোগ করেছেন।
মেনু: রুশ ভাষায় দার্জিলিং চা। নিজস্ব চিত্র
আমেরিকা থেকে জাপান, চেক প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, হংকং, ব্রিটেনের মতো দেশে দার্জিলিং চায়ের কদর সবসময়। টি বোর্ডের তরফে দার্জিলিং চায়ের জন্য আলাদা লোগোও দেওয়া হয়েছে। টি বোর্ডের তরফে জানানো হয়েছে, রাশিয়ায় বরবারই দার্জিলিং চা বিখ্যাত। বছরে প্রায় ৪১ মিলিয়ন কেজি চা রাশিয়া যায়। বোর্ডের তরফে রাশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে টি টেস্টিং, স্যাম্পলিং করানো হয়। সম্প্রতি বিশ্বকাপের আগে মস্কোয় দার্জিলিং চা নিলামে সর্বোচ্চ ৮৯ হাজার প্রতি কেজিতে পৌঁছেছে। এ ছাড়া শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া এবং ভিয়েতনাম থেকে রাশিয়ায় চা পৌঁছলেও দার্জিলিং চায়ের কদর বরাবর আলাদাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy