Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ধৃতিকান্তবাবু মনিব নয়, ছিলেন হাতির বন্ধু

বিকট হাতিটিকে কীভাবে পোষ মানাব, তা নিয়েই চিন্তিত হয়ে পড়ছি দেখে ধৃতিকান্তবাবু আমাকে সাহস দেন।

গরুমারা পিলখানায় সূর্যের সঙ্গে দীনবন্ধু। নিজস্ব চিত্র

গরুমারা পিলখানায় সূর্যের সঙ্গে দীনবন্ধু। নিজস্ব চিত্র

দীনবন্ধু বর্মণ
শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৯ ০৭:১১
Share: Save:

বন টহলের জন্যে হাতি প্রয়োজন। যে সে হাতি হলে হবে না, নেতৃত্ব দিতে পারে, বুনো হাতিরা সমীহ করবে এমন মেজাজের হাতি চাই। তেমন হাতি কোথায়? এই প্রশ্নের উত্তরে আমরা যখন নাজেহাল, তখনই যে মানুষটা মুশকিল আসান করে দিলেন, তিনিই ধৃতিকান্ত লাহিড়ী চৌধুরী।
যত দূর মনে পড়ছে ২০০২ সাল নাগাদ, সোনামুখীতে এক নাছোড় দাঁতাল হাতির অত্যাচার বেড়ে যায়। সেই হাতিটিকে দেখেই বন টহলের পিলখানার কথা ভেবে ফেলেছিলেন ধৃতিকান্তবাবু। তার আগে আমাদের রাজ্যের বন পরিচালনার জন্যে জঙ্গলের হাতি ধরাতেও তিনিই প্রথম নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৯৯৫ সালে ঝাড়গ্রাম থেকে রূপনারায়ণ নামের একটি হাতিকে সাফল্যের সঙ্গে ধরে দক্ষিণবঙ্গেই পিলখানাতে রাখা হয়। সোনামুখীর হাতিটিকে তাই ধরে ফেলার পরে উত্তরবঙ্গের গরুমারাতে পাঠানোর পরামর্শ দেন তিনি। এরপরই গরুমারার মাহুত হিসাবে আমাকে সোনামুখী যেতে হয়।
বিকট হাতিটিকে কীভাবে পোষ মানাব, তা নিয়েই চিন্তিত হয়ে পড়ছি দেখে ধৃতিকান্তবাবু আমাকে সাহস দেন। হাতির মনিব নয়, বন্ধু হয়ে উঠতে পরামর্শ দেন। সেই পরামর্শ মেনেই আমি হাতিটিকে পোষ মানাই। সেই হাতি, সূর্য, আজ পিলখানার সম্পদ। গরুমারার পিলখানাতে এসেও একাধিকবার সূর্যকে দেখে গিয়েছেন তিনি। প্রতিবারই তাঁকে হাতির সঙ্গে গভীর ভাবে মিশে যেতে দেখতাম। পিলখানার হাতিরাও তাঁকে দেখে বাড়তি আনন্দ পেত, যেন কত দিনের চেনা। আজ তাই তাঁর মৃত্যুর খবরে আমার পিলখানাতেও শোকের ছায়া।

(লেখক গরুমারা পিলখানার মাহুত)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dhriti Kanta Lahiri Choudhury Elephant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE