গন্ধ-বিচার: বাংলাদেশের গুড় কিনতে ভিড়। —নিজস্ব চিত্র।
রাসমেলার টান এড়াতে পারেন না ওপার বাংলার ব্যবসায়ীরা। এ বারেও মেলা শুরু হতেই এ পার বাংলার কোচবিহারের মেলার ময়দানে রকমারি পণ্য সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছেন সেখানকার কামরুল হাসান, মহম্মদ বাবুলদের মত ব্যবসায়ীদের অনেকেই।
রাসমেলা চত্বরের স্টেডিয়াম ময়দানে পরপর স্টল হয়েছে তাঁদের। ব্যানারে নজর কাড়ছে, বাংলাদেশের ঠিকানা। যা দেখে দর্শনার্থীদের কয়েকজন বলেই দিলেন, এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ! দুই বাংলার মিলনমেলা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “রাসমেলায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আসায় আমরা খুশি। এতে দুই বাংলার সৌহার্দ্যের বাতাবরণও হয়েছে। ওই ব্যবসায়ীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয় তা দেখা হচ্ছে।” তিনি জানান, ভবিষ্যতে যাতে আরও বেশি ব্যবসায়ীরা ওপার বাংলা থেকে আসেন সেই ব্যাপারেও চেষ্টা হচ্ছে। জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “প্রশাসনিক ভাবে ওই ব্যবসায়ীদের সব সহযোগিতাই করা হচ্ছে।”
মেলার আয়োজক কোচবিহার পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের অন্তত ১৫টি স্টল হচ্ছে। ইতিমধ্যে ওই ব্যবসায়ীদের অনেকেই মেলায় পসরা নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। ১০টি স্টল চালুও হয়েছে। বাকিরাও খুব দ্রুত চলে আসবেন। পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ বলেন, “মেলা চত্বরে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য একটি চত্বর মোটামুটি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ১০ জন ব্যবসায়ী স্টল চালু করেছেন। আরও কয়েকজন শীঘ্র আসবেন।”
ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশের রকমারি সামগ্রী মেলায় রয়েছে। ফরিদপুর, রাজশাহীর খেজুর গুড়, পদ্মার নোনা ইলিশ, ঢাকাই জামদানি, রাজশাহী সিল্ক থেকে টাঙাইলের বাহারি তাঁতের শাড়ি যেমন রয়েছে, তেমনই আছে লুঙ্গি, মেলামাইনের নানা সামগ্রীও।
রাসমেলার একাধিক স্টল ঘুরে ক্রেতাদের কেউ পদ্মার নোনা ইলিশ কিনছেন, কেউ আবার খেজুর গুড় নিচ্ছেন। শাড়ির দোকানেও ক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। তবে মেলা সেভাবে এখনও জমে না ওঠায় বিক্রির হিড়িক খানিকটা কম। ব্যবসায়ীদের কয়েকজন বলছেন, মেলা জমলেই ভিড় বাড়বে, বিক্রিও হবে। শুরুতে প্রতিবারই কয়েকদিন ব্যবসা তেমন জমে না। এ বার অবশ্য অন্য বছরের তুলনায় ছবিটা খানিকটা হলেও বদলেছে। শাড়ির দোকানেও ভিড় হবে।
টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মহম্মদ কামরুল হাসান বলেন, “বিখ্যাত ঢাকাই জামদানি থেকে নানা শাড়ি আমাদের স্টলে রয়েছে। ক্রেতারা কিছু আসছেন। ওই ভিড় মেলা আরেকটু জমলেই বাড়বে। অন্যবারও এমনও কিন্তু হয়।” কামরুল জানিয়েছেন, তাদের প্রতিষ্ঠান প্রায় দুই দশক রাসমেলায় স্টল করছে। তিনি নিজেও প্রায় পাঁচ বছর আসছেন। রাসমেলার টান কিছুতেই এড়াতে পারেন না।
ঢাকার ব্যবসায়ী মহম্মদ বাবুল বলেন, “ফরিদপুরের খেজুর গুড় এক নম্বর। কেজি প্রতি দাম ২৪০ টাকা। পদ্মার নোনা ইলিশও আছি। জামদানি, কোঠা, তাঁতের শাড়ি থেকে লুঙ্গির প্রচুর স্টক আছে।” অন্য এক বিক্রেতা জানান, প্রতি পিস হিসেবে নোনা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। পাঁচশো থেকে দেড় হাজার টাকা দামে তা কিনছেন ক্রেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy