উত্তরবঙ্গ থেকে বহু বাসিন্দা চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ ভারতে যান। অনেকে নিছক ঘুরতেও যান। শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, লাগোয়া রাজ্য থেকেও অনেকে দক্ষিণ ভারতে যাতায়াতের জন্য বাগডোগরা বিমানবন্দর ব্যবহার করেন। বিমানে চেন্নাই, কন্যাকুমারী, পুদুচেরি, ভেলোর এসব জায়গায় যেতে উত্তরের জেলাগুলোর বাসিন্দাদের কলকাতা বা দিল্লির বিমানবন্দর হয়ে যেতে হয়। বিমান মন্ত্রকের ভাষায় যাকে ‘হপিং ফ্লাইট’ বলা হয়।
কখনও বিমান বদল করতে হয়। কখনও সেটা না করতে হলেও অন্য যাত্রীদের ওঠানামার জন্য বাকিদের বিমানবন্দরে বা বিমানে দীর্ঘ অপেক্ষা করতে হয়। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন রোগী ও তাঁর পরিবার। চিকিৎসার জন্য কোনও রোগী বিমানে থাকলে তাঁর পক্ষে এই অপেক্ষা বিপত্তির কারণও হতে পারে। দিনের পর দিন উত্তর থেকে চেন্নাই যাওয়ার টিকিটের চাহিদা বাড়াতে থাকায় এ বার বাগডোগরা থেকে সরাসরি চেন্নাই যাওয়ার বিমান শুরু হতে চলেছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে নতুন বছরেই একটি বেসরকারি বিমান সংস্থা চেন্নাইয়ে বিমানটি চালু করতে চলেছে।
গত সপ্তাহেই দীর্ঘ দিনের দাবির পরে বাগডোগরা থেকে হায়দরাবাদের সরাসরি বিমান চালু হয়েছে। সকালের দিকে বিমানটি বাগডোগরা এসে দুপুরের মধ্যে হায়দরাবাদ পৌঁছচ্ছে। চেন্নাইয়ের ক্ষেত্রেও বিমান সংস্থাটি সকালের দিকে সময়সূচি চাইছে। তা নিয়ে বিমান মন্ত্রক এবং এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে আলোচনা চলছে। সময়সূচি চূড়ান্ত হলেই নতুন বিমানের ঘোষণা হয়ে যাবে বলে সূত্রের খবর। এই বিমান সংস্থাই সিকিমের পাকিয়ং থেকে কলকাতার মধ্যে প্রথম বিমানটি চালাচ্ছে। বাগডোগরা বিমানবন্দরের অধিকর্তা সুব্রমনিয়ম পি বলেন, ‘‘চেন্নাইয়ের বিমান নিয়ে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা চলছে। চূড়ান্ত হলেই ঘোষণা করব।’’
বাগডোগরা থেকে কলকাতা পৌঁছতে সময় লাগে ৫০ মিনিট। আর কলকাতা থেকে চেন্নাই বিমানে লাগে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। কিন্তু সব মিলিয়ে বাগডোগরা থেকে চেন্নাইয়ে পৌঁছতে বিমানে লাগে ৫-৬ ঘণ্টা। আবার বাগডোগরা থেকে দিল্লি ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট। দিল্লি থেকে চেন্নাই প্রায় ২ ঘণ্টা ৫০ মিনিটের ধাক্কা। ওই পথেও লেগে যায় প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা। কোনও সমস্যা হলে সময় লাগে আরও বেশি। এ ভাবে ‘হপিং ফ্লাইট’এ বাগডোগরা থেকে তামিলনাড়ু যাওয়ার ৪১টি বিমান রয়েছে। সবই ৬ ঘণ্টা থেকে ১১ ঘণ্টার যাত্রা। তাই সরাসরি বিমানের দাবি দীর্ঘ দিনের।
শিলিগুড়ি মহকুমার শাসকদলের এক ব্লক সভাপতি প্রায়শই চিকিৎসার জন্য চেন্নাই যান। তিনি জানান, দুপুরে বিমানে ধরলে বেশি রাতে চেন্নাইয়ের হোটেলে গিয়ে উঠি। ওই ধকলে শরীর এমনিতেই খারাপ হয়। কয়েকদিন আগেও বাবার চিকিৎসার জন্য নিয়মিত চেন্নাই যেতেন এক সরকারি কর্মী। তিনিও জানান, সরাসরি বিমান না থাকায় অনেক সময় ১-২ দিন আগে কলকাতা পৌঁছে যেতেন তিনি। সেখান থেকে চেন্নাইয়ের বিমান ধরতেন। সরাসরি বিমান হওয়ার সম্ভাবনা শুনে তিনি উচ্ছ্বসিত। চিকিৎসা, ঘোরা ছাড়াও পড়াশুনোর জন্য বহু ছাত্রছাত্রী নিয়মিত চেন্নাই যাতায়াত করেন। সরাসরি বিমানে সুবিধে হবে তাঁদেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy