Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Malda Medical College

ওয়ার্ডে নেই চিকিৎসক, ক্ষুব্ধ ডিএম

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক দশক আগে সদর হাসপাতাল থেকে উন্নীত হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল।

পরিদর্শন: হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে কথা ডিএমের। নিজস্ব চিত্র

পরিদর্শন: হাসপাতালের কর্তাদের সঙ্গে কথা ডিএমের। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মালদহ শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:৪৮
Share: Save:

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা—১৭ ঘণ্টার মধ্যে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসক দেখেছেন মাত্র এক বার! এমনই অভিযোগ তুললেন ইংরেজবাজারের মিলকির বাসিন্দা সফিউল মোমিন। তাঁর নালিশ, ‘‘হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় মাকে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ভর্তির সময়ই এক বার চিকিৎসক দেখেছেন।’’ তার পর থেকে এ দিন দুপুর পর্যন্ত কোনও চিকিৎসক এক বারের জন্য মাকে ছুঁয়ে পর্যন্ত দেখেননি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি।

এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ আচমকা হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে এমনই অভিযোগ শুনলেন মালদহের জেলাশাসক তথা মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রাজর্ষি মিত্র। প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, হাসপাতালের এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে ঘুরে কোথাও কোনও চিকিৎসককে দেখতে পাননি তিনি। ওয়ার্ডগুলিতে চিকিৎসকদের ‘রোস্টার তালিকা’ও দেখতে না পেয়ে কর্তৃপক্ষকে প্রকাশ্যে ভর্ৎসনা করেন তিনি। পরে এ দিনই দুপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জেলা প্রশাসনিক ভবনে বৈঠক করেন জেলাশাসক। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে প্রতিটি ওয়ার্ডে চিকিৎসকদের রোস্টার ঝোলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে হাসপাতালের কোনও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কাজে গাফিলতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।

প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক দশক আগে সদর হাসপাতাল থেকে উন্নীত হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। মেডিক্যাল কলেজ হওয়ায় মালদহের পাশাপাশি দুই দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদ থেকেও প্রচুর রোগী চিকিৎসার জন্য সেখানে যান। ঝাড়খণ্ড ও বিহার থেকেও অনেকে আসেন।

রোগীদের একাংশের বক্তব্য, মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা পরিষেবা ভাল মিলবে। সব সময় চিকিৎসক থাকবেন— এমনই আশা নিয়ে সবাই আসেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু সেখানে অনেক সময় চিকিৎসা পরিষেবা মিলছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন রোগীদের একাংশের পরিজনেরা।

মালদহের রতুয়ার মেহবুব শেখ বলেন, ‘‘দুর্ঘটনায় আমার জামাইবাবুর মাথা ফেটে গিয়েছে। রতুয়া হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজে গত রাতে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এ দিন দুপুর পর্যন্ত চিকিৎসকের দেখা নেই। কার্যত বিনা চিকিৎসায় রোগী ওয়ার্ডে পড়ে রয়েছে।’’

এমন পরিস্থিতি দেখে প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন জেলাশাসক। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এ দিন আচমকা হাসপাতালে গিয়ে প্রথমে তিনি কোনও আধিকারিকের দেখা পাননি। খবর পেয়ে ওয়ার্ডে পৌঁছন অধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম মুখোপাধ্যায় এবং অন্য স্বাস্থ্যকর্তারা। হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ঢুকেই ইউনিফর্ম ছাড়া এক নিরাপত্তারক্ষীকে দেখে ক্ষোভপ্রকাশ করেন তিনি। এর পরে ফিমেল মেডিসিন, ফিমেল সার্জিক্যাল, মাতৃমা বিভাগ পরিদর্শন করেন জেলাশাসক।

পরে তিনি বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের ওয়ার্ডে রোস্টার নেই। এমনকী অধ্যক্ষের কাছেও চিকিৎসকদের রোস্টার নেই। অধ্যক্ষকে দ্রুত পদক্ষেপ করতে বলা হয়েছে।’’ পার্থপ্রতিম বলেন, ‘‘রোস্টার বিভাগীয় প্রধানদের কাছেই থাকে। এ বার থেকে আমার কাছে এবং ওয়ার্ডেও তা রাখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Malda Medical College District Magistrate Doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE