Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Harishchandrapur

হরিশ্চন্দ্রপুরে চিকিৎসক-নার্সদের আবাসনে চুইয়ে পড়ছে জল, খসে পড়ছে পলেস্তারা আবাসনে

সীমানা-পাঁচিল না থাকার জন্যও দুষ্কৃতীদের আনাগোনাও হচ্ছে নিয়মিত। এমন পরিস্থিতিতেই আতঙ্কে দিন কাটছে করোনা যোদ্ধাদের।

নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন। নিজস্ব চিত্র।

নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০২০ ১৯:৩৩
Share: Save:

করোনার বিরুদ্ধে একেবারে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়ছেন তাঁরা। কিন্তু সেই চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসন কর্মীরাই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রয়েছেন। অবিশ্বাস্য মনে হলেও মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে এমনই অবস্থা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ সেখানকার আবাসনগুলি।

কখনও ছাদ বা দেওয়ালের চাঙড় ভেঙে পড়ছে। আবাসনের চারিদিকে গজিয়ে ওঠা জঙ্গলে সাপখোপের ভয় রয়েছে। সীমানা-পাঁচিল না থাকার জন্যও দুষ্কৃতীদের আনাগোনাও হচ্ছে নিয়মিত। এমন পরিস্থিতিতেই আতঙ্কে দিন কাটছে করোনা যোদ্ধাদের। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে আবাসনগুলির এমনই অবস্থা, দেখলে মনে হবে কোনও ভুতুড়ে বাড়ি!

সমস্যার কথা মেনে নিলেও অর্থাভাবে আবাসনগুলি সংস্কার করা যাচ্ছে না বলে স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন।

হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের পাশেই ১১টি আবাসন। যার মধ্যে ছ’টি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। বাকি পাঁচটি নার্সদের। আবাসনের ভেতরে ও বাইরের দেওয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। মাঝেমধ্যেই ছাদের চাঙর ধসে পড়ে। বেশি বৃষ্টি হলে ছাদ চুইয়ে জল পড়ে।

অথচ বছর তিনেক আগে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালটির সংস্কার করা হয়। কিন্তু তখনও আবাসনগুলি সংস্কারের কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের।

বেহাল আবাসনের পাশাপাশি রয়েছে আরও একাধিক সমস্যা। হাসপাতালের চারপাশে গজিয়ে উঠেছে আগাছার জঙ্গল। স্বাস্থ্য নিয়ে যারা সচেতনতার প্রচার চালান সাধারণ মানুষের মধ্যে, তাঁদেরকেই থাকতে হয় চূড়ান্ত আস্বাস্থ্যকর পরিবেশে। এ ছাড়া আবাসনের সীমানা পাঁচিল না থাকায় রাতে একাধিকবার চুরির ঘটনাও ঘটেছে। দীর্ঘদিন ধরে সীমানা পাঁচিলের দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতরের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

এই ব্যাপারে মালদা জেলা পরিষদের শিশু, নারী ও ত্রাণ কর্মাধক্ষ্যা মর্জিনা খাতুন বলেন, ‘‘এর আগে দু’টো হাসপাতালের সমস্যার কথা শুনেছিলাম। সেগুলি ঠিক করা হয়েছে। গ্রামীণ হাসপাতালের আবাসনের কথা শুনলাম। পরের আর্থিক বৈঠকে এই নিয়ে আলোচনা করে সংস্কার করা উদ্যোগ নেওয়া হবে।’’

হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান অবশ্য বলেন, ‘‘এই নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তবে এখনও কোনও ব্যবস্থা হয়নি। আশা করা হচ্ছে দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু হবে।’’

হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ অমলকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘‘আবাসনের ছবি-সহ সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃরক্ষকে জানানো হয়েছে। আবাসনের এই অবস্থার জন্য অনেকেই বাইরে বাড়ি ভাড়া করে থাকছেন। আবার বিষয়টি সিএমওএইচকেও জানিয়েছি। পূর্ত(ভবন) দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়ে হাসপাতাল পরিদর্শনে আসবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এখনও তা হয়নি।’’ ফলে সমস্যায় রয়েছেন এই গ্রামীণ হাসপাতালের কর্মীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Harishchandrapur Malda Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE