কণ্ঠনালীর ছবি। নিজস্ব চিত্র
শনিবার ছিল ইদুজ্জোহা, উৎসবের দিন। দুপুরে মামাতো ভাইয়ের সঙ্গে খেলতে কাছেই মামাবাড়িতে গিয়েছিল বছর তেরোর ফাতেমা খাতুন। সেখানে মেলা দেখতে তাকে টাকা দেন বড়রা। আর সেই টাকা নিয়েই ভাইয়ের সঙ্গে চলছিল খুনসুটি। খেলার ছলেই টাকা লুকোতে তিনটি কয়েন মুখে পুরে দিয়েছিল বছর তেরোর ফাতেমা। কিন্তু অসাবধানতাবশত তা চলে যায় খাদ্যনালিতে। আটকে যায় শ্বাসনালির পাশে থাকা খাদ্যনালির মুখেই।
পরিবারের লোকেরা তাকে কালিয়াচকের সিলামপুর ব্লক হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দেন, সেখানে কিছু করা সম্ভব নয়। তাকে রেফার করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। এর পর শনিবার রাতেই অস্ত্রোপচার করে একটি ১০ টাকা ও দু’টি ৫ টাকার কয়েন বার করলেন হাসপাতালের নাক-কান-গলা বিভাগের সার্জেন খুরশিদ পারভেজ ও তাঁর দল। হাসপাতাল জানিয়েছ, ফাতেমা বিপন্মুক্ত। তবে আরও দু’দিন তাঁকে হাসপাতালে থাকতে হবে।
কালিয়াচকের আলিনগর গ্রামে থাকেন পেশায় স্বাস্থ্যকর্মী হাজিবুল হক। তার একমাত্র মেয়ে ফাতেমা স্থানীয় একটি বেসরকারি আবাসিক মিশনে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ইদুজ্জোহা উপলক্ষে মামা বাড়ি থেকে মেলা দেখার জন্য একটি ১০ টাকা ও দু’টি ৫ টাকার কয়েন ফতেমাকে দেওয়া হয়। আর তা নিয়েই ভাই আহিল রেজার সঙ্গে খেলা শুরু হয়। পরিবার সূত্রে খবর, তারপর কোনও এক সময় ফাতেমা ওই টাকা মুখে পুরে নেয়।
খুরশিদ পারভেজ বলেন, ‘‘এক্স-রে করে দেখা যায় খাদ্যনালীর মুখে গোল একটি ধাতব পদার্থ রয়েছে। যদিও ফাতেমার দাবি ছিল, সে তিনটি কয়েন খেয়ে ফেলেছে। তখনই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নিই। রাতে দেখতে পাই মাঝে দশ টাকার একটি কয়েন ও দুই পাশে দুটো পাঁচ টাকার কয়েন ফাতেমার খাদ্যনালির মুখে আটকে রয়েছে। এর আগে আমরা অনেক শিশুর খাদ্যনালি থেকে কয়েন বার করেছি। কিন্তু তিনটি কয়েন এবং একেবারে খাদ্যনালীর মুখে পাশাপাশি সাজানো এই প্রথম পেলাম।’’ তিনি জানান, প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় ওই কয়েনগুলি বার করা হয়। ফতেমা এখন বিপন্মুক্ত।
ফতেমার বাবা বলেন, ‘‘চিকিৎসকদের জন্যই মেয়েকে ফিরে পেলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy