Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পাহাড়ের আঁচ ফের ডুয়ার্সেও

শনিবার বিকেলে গরুবাথান থানার পানডারা মোড় সংলগ্ন নেওড়া রেঞ্জ অফিসে প্রথমে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। রেঞ্জের ম্যানেজার নির্মাল্য হুদাতির আবাসন সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। রেঞ্জ অফিসের অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে।

লেলিহান: জ্বলছে নেওড়া ভ্যালি রেঞ্জ অফিস। নিজস্ব চিত্র

লেলিহান: জ্বলছে নেওড়া ভ্যালি রেঞ্জ অফিস। নিজস্ব চিত্র

সব্যসাচী ঘোষ
মালবাজার শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৭ ০৩:৪১
Share: Save:

পাহাড়ের আন্দোলনের আঁচ লাগল ডুয়ার্সের দোরগোড়াতেও। শনিবার বিকেলে বন দফতরের গরুবাথানের নেওড়া রেঞ্জ অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। বন দফতরের অফিসের কাছে রাখা একটি পুলিশের গাড়ি-সহ তিনটি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

মালবাজার লাগোয়া গরুবাথানের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ডুয়ার্সেও। প্রশাসনের একাংশের দাবি, ডুয়ার্সের জনজীবনে অস্থিরতা তৈরি করতেই পরিকল্পিত ভাবে পাহাড়ের অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা চলছে। অশান্তি চড়ানোর চেষ্টা রুখে দেওয়ার দাবিও শোনা যাচ্ছে ডুয়ার্সে। ইতিমধ্যেই একটি আদিবাসী সংগঠন ডুয়ার্সে শান্তি বজায় রাখতে পাল্টা পথে নামার দাবি জানিয়েছে। এ দিন জেলা তৃণমূলের তরফেও অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা হলে রুখে দাঁড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কোনওভাবেই ডুয়ার্সকে অশান্ত করতে দেওয়া হবে না। আগুন নিয়ে খেলা বন্ধ করতে হবে। না হলে ডুয়ার্সের বাসিন্দারাই রুখে দাঁড়াবেন।’’

শনিবার বিকেলে গরুবাথান থানার পানডারা মোড় সংলগ্ন নেওড়া রেঞ্জ অফিসে প্রথমে আগুন লাগানো হয় বলে অভিযোগ। রেঞ্জের ম্যানেজার নির্মাল্য হুদাতির আবাসন সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। রেঞ্জ অফিসের অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে। ভুট্টাবাড়ি ও নেওড়া ভ্যালি এলাকার জঙ্গলের একটি বড় অংশ পরিচালনা থেকে নজরদারি হয় এই রেঞ্জ অফিস থেকেই। দফতরের কর্মীদের একাংশের আশঙ্কা রেঞ্জ অফিস পুড়িয়ে দিয়ে জঙ্গলে কাঠ লুঠের অবাধ পরিকল্পনা চলছে। অগ্নি সংযোগের ঘটনার সময় দফতরেই ছিলেন রেঞ্জ ম্যানেজার নির্মাল্য হুদাতি। তিন দশকের বনদফতরের চাকুরি জীবনের একটা বড় অংশ পাহাড়েই কাটিয়েছেন তিনি। এ দিন ঘটনার পরে তিনি মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, ‘‘ বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ কালো কাপড় দিয়ে মুখ জড়িয়ে অনেকে এসেছিল। অতর্কিতে অগ্নি সংযোগ করে দেয় ওরা কোনও রকমে দফতরের কিছুটা বাঁচাতে পারলেও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র অধিকাংশই পুড়ে গিয়েছে।’’ কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নির্ধারণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন গরুবাথানের বিডিও বিশ্বরঞ্জন সরকার।

এ দিন দার্জিলিঙে সকাল থেকেই অশান্তি শুরু হয়েছে। সদর থানায় হামলা, সোনাদা স্টেশনে আগুন লাগানো হয়েছে। মিরিকে একটি চা বাগান লাগোয়া এলাকাতেও চেকপোস্ট পুড়িযে দেওয়া হয়েছে। সেই আগুনের রেশই এ বার ডুয়ার্সে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে দাবি অনেকের। মালবাজারের বাসিন্দা শান্তনু সরকার নানা প্রয়োজনেই গরুবাথানে যাতায়াত করেন। তিনি বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে সমতলেও অশান্তিকে আহ্বান চলছে। তবে ভয় নেই। আমরা একজোট রয়েছি। ডুয়ার্সকে অশান্ত হতে দেব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE