Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত, প্রশ্ন তাগিদ নিয়ে
Coronavirus

নিদান দিল সভা, বিধি মানাবে কে

বৈঠকে সচেতনতা বাড়ানো, মাস্ক পরা, দূরত্ব-বিধি বজায় রাখার মতো পুরনো বিষয়গুলোতে জোর দিতে বলা হয়েছে। কনটেনমেন্ট জোনে আরও কঠোর ভাবে নিয়ম মানার কথা বলা হয়েছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২০ ০৪:৩৯
Share: Save:

করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এবং চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানোর লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যকে করোনা সংক্রমণ থেকে যারা সারিয়ে তুলেছেন সেই চিকিৎসক দলের অনেকে পরিষেবা দিতে রাজি। এই দু’টি ছাড়া আর নতুন কোনও পরিকল্পনার কথা শনিবার উত্তরকন্যায় বৈঠকে উঠল না। এ দিন পূর্ণ লকডাউন তো পরের কথা এলাকাভিত্তিক লকডাউন করার ব্যাপারেও কেউ সে ভাবে আলোচনা করেননি। তার ফলে সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠকের শেষে শিলিগুড়িকে কতটা বাঁচানো যাবে সেই নিয়ে চিকিৎসক মহলে এবং শহরের সাধারণ মানুষের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে। শিলিগুড়িকে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচানোর জন্য কী করা যায় তা নিয়ে উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক সুশান্ত রায়ের নেতৃত্বে এ দিন ওই বৈঠক হয়।

এ দিন বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাজারগুলো থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে বলে প্রতিনিধিরা উদ্বেগ প্র্কাশ করেছেন। সুশান্ত রায় জানান, শুরুতে শিলিগুড়িতে নিয়ম বিধি মানা হয়নি। বাইরে থেকে যাঁরা শহরে এসেছেন তাঁদের মাধ্যমেই মূলত সংক্রমণ ছড়িয়েছে। বিধি মেনে চলায় পাহাড়ে সংক্রমণ অনেক কম। উত্তরবঙ্গের মধ্যে শিলিগুড়ি, মালদহ এবং উত্তর দিনাজপুর নিয়েই চিন্তা রয়েছে।

বৈঠকে সচেতনতা বাড়ানো, মাস্ক পরা, দূরত্ব-বিধি বজায় রাখার মতো পুরনো বিষয়গুলোতে জোর দিতে বলা হয়েছে। কনটেনমেন্ট জোনে আরও কঠোর ভাবে নিয়ম মানার কথা বলা হয়েছে। যদিও কনটেনমেন্ট জ়োন, বাজারে পুলিশের নজরদারি দেখা যায় না বলে বারবার অভিযোগ উঠেছে। তাই সেখানে আরও কঠোরভাবে কী ভাবে নিয়ম মানা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। চিকিৎসক, প্রশাসকদের যারা এ দিন বৈঠকে ছিলেন তাঁদের কেউ কেউ জানান শিলিগুড়িকে বাঁচাতে ‘পূর্ণ লকডাউন’-এর বিষয়টি নিয়ে এগোনো যেত। কিন্তু জেলা প্রশাসন পূর্ণ লকডাউনে যেতে চায় না। তাদের যুক্তি সেক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য, জীবিকা বন্ধ হবে। তাহলে এলাকাভিত্তিক কঠোর লকডাউনে কেন যাওয়া হচ্ছে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘পূর্ণ লকডাউনের বিষয়টি ভাবনায় রয়েছে। পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে। যে প্রস্তাবগুলো এ দিন বৈঠকে উঠেছে সেগুলো নিয়ে কী সিদ্ধান্ত তা শীঘ্রই জানানো হবে।’’

যা সিদ্ধান্ত

•করোনা আক্রান্ত এবং কোমর্বিডিটি রয়েছে এমন রোগীর চিকিৎসায় ১৮ জনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল

•৪৬ জন চিকিৎসকের তালিকা। তাঁরা শিলিগুড়ির দুটি কোভিড হাসপাতাল এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পরিষেবা দেবেন।

•অশোক ভট্টাচার্যকে সুস্থ করেছে নার্সিংহোমের যে মেডিক্যাল টিম তারা পরিষেবা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

•কোভিড হাসপাতালে আইসিইউ’তে বিশেষজ্ঞদের ‘ইনচার্জ’ করা

•মাস্ক পরা, দূরত্ব বিধি মানতে সচেতন করা হবে।

•যেখানে সংক্রমণ, সেখানে ছোট কনটেনমেন্ট জ়োন

•কোনও বাজারে ব্যবসায়ীরা সংক্রমিত হলে তা বন্ধ রাখা

•করোনা নিয়ন্ত্রণে সাধারণ বাসিন্দাদের জন্য ‘ডায়েট চার্ট’ প্রকাশ করা হবে।

তাঁকে না ডাকায় এ দিনের বৈঠকে ছিলেন না পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। সুশান্ত রায়ের বক্তব্য, ‘‘তিনি অসুস্থ আমাকে সেটাই বলা হয়েছে। সম্প্রতি একটা হার্টের অস্ত্রোপচার হয়েছে। জ্বর, সর্দি গলা-ব্যাথা নিয়ে ভুগছিলেন। কলকাতা থেকে খবর আছে। বৈঠকে রাখার বিষয়ে সেখান থেকেই তাঁকে বাদ রাখা হয়েছে।’’

এই বিষয়ে গৌতম দেব বলেন, ‘‘তিনি হয়তো আমাকে ভালবাসেন। আমার স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তিত। ২০১৫ সালে আমার বাইপাস অস্ত্রোপচার নিয়ে হয়তো বলেছেন। আসলে তিনি চোখের ডাক্তার, কার্ডিয়োলজিস্ট তো নন। সেটা নিয়ে হয়তো অসুবিধা আছে। তবে এগুলো ভালবাসা, আবেগ থেকে হয়। তিনি চান আমি সুস্থ থাকি। ওনাকে ধন্যবাদ।’’ মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘শুক্রবার আমায় মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন সমস্ত জায়গা, শিলিগুড়ি নিয়ে আমি যেন বৈঠক করি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Covid-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE