Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja 2020

পুজোর ভরসা অনুদানই, কোর্টের নির্দেশে উদ্বেগ

শহরের ছোট পুজোর উদ্যোক্তারাও চিন্তায় পড়েছেন।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২০ ০৬:১৪
Share: Save:

পুজো কমিটিগুলিকে সরকারি অনুদানের ৭৫ শতাংশ টাকা খরচ করতে হবে করোনা স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায়— আদালতের এমন নির্দেশে উদ্বেগে গৌড়বঙ্গের উদ্যোক্তাদের অনেকেই।

মালদহ

রাজ্য সরকারের পুজো অনুদানের খরচ নিয়ে হাইকোর্টের রায়ে মাথায় হাত পড়েছে মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামের উদ্যোক্তাদের। তাঁদের বক্তব্য, লকডাউনে গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কর্মহীন। পুজো নিয়ে দু’সপ্তাহ আগেও ছিল অনিশ্চয়তা। রাজ্য সরকারের ৫০ হাজার টাকা অনুদান পাওয়ার পরেই শুরু হয়েছে পুজোর প্রস্তুতি। আদালতের এমন নির্দেশে বিপাকে উদ্যোক্তারা।

শহরের ছোট পুজোর উদ্যোক্তারাও চিন্তায় পড়েছেন। ইংরেজবাজার শহরের মহানন্দা তীরের এক পুজো উদ্যোক্তা বলেন, “এ বার চাঁদা দেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে নেই অনেকেই। তাই পুজো করব না বলে ঠিক করা হয়েছিল। পরে সরকারি অনুদান পেয়ে পুজোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অনুদানের ৫০ হাজার টাকাই আমাদের পুজোর বাজেট। তার বেশির ভাগটা মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারে খরচ করলে প্রতিমা, মণ্ডপ, আলো, পুরোহিতের খরচ কী ভাবে মিলবে।”

হবিবপুর ব্লকের এক মৃৎশিল্পী বলেন, “দু’সপ্তাহ আগে তিনটি ছোট প্রতিমার বরাত পেয়েছি। রাজ্য সরকার টাকা না দিলে পুজো হত না। আমরাও প্রতিমা তৈরির বরাত পেতাম না।”

দক্ষিণ দিনাজপুর

শনিবার বালুরঘাটের একাধিক পুজো কমিটির পক্ষ থেকে উচ্চ আদালতের ওই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার দাবি উঠেছে। জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৯০টি পুজো কমিটি ওই অনুদান পেয়েছে। পুজোমণ্ডপে করোনা সংক্রমণ রোধে স্বাস্হ্যবিধি পালনে সরকারি ওই অনুদানের ১০ শতাংশ টাকা বরাদ্দের জন্য একাধিক ক্লাব আদালতে আর্জি জানানোর কথা ভাবছেন।

শহরের একটি ক্লাবের সম্পাদক অরিন্দম চন্দ বলেন, ‘‘গ্রাম-শহরে এমন অনেক ছোট ক্লাব রয়েছে। তারা ওই অনুদানের উপরে ভরসা করে পুজোর আয়োজন করেছে।’’ একটি পুজোর উদ্যোক্তা তুহিন মণ্ডলের কথায়, ‘‘করোনা ও লকডাউনের জেরে চাঁদা তোলা যায়নি। সরকারি অনুদানের টাকা থেকে প্রতিমার খরচ ও ছোট মণ্ডপ গড়ে পর্যাপ্ত মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার কেনা হয়েছে। অনুদানের ১০ শতাংশ টাকা করোনা সংক্রমণ রোধে খরচের নির্দেশ দিতে আদালতে আর্জি জানানো হবে।’’ একটি মহিলা পরিচালিত পুজো কমিটির সম্পাদক মুনমুন বসাক বলেন, ‘‘অনুদানের বেশির ভাগ টাকা মাস্ক, স্যানিটাইজ়ারে খরচ করতে হলে প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরির টাকা কী ভাবে দেব?’’

উত্তর দিনাজপুর

আদালতের নির্দেশে চিন্তায় পড়েছেন জেলার অনেক পুজোর উদ্যোক্তা। রায়গঞ্জ ও ইসলামপুর মহকুমার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকার একাধিক পুজো কমিটির বক্তব্য, লকডাউন ও করোনা-আবহে এ বছর বিভিন্ন পেশার বাসিন্দাদের রোজগারে টান পড়েছে। তাই এ বার অন্য বছরের মতো চাঁদা উঠবে না। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তরফে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদানে সমস্যা অনেকটাই মিটেছিল। কিন্তু আদালতের নির্দেশে ফের চিন্তা বেড়েছে।

রায়গঞ্জের রবীন্দ্রপল্লি এলাকার একটি পুজো কমিটির তরফে অরূপ সরকার বলেন, “সরকারি অনুদানের ৭৫ শতাংশ টাকা করোনা মোকাবিলায় খরচ করতে হলে প্রতিমার দাম, পুরোহিত ও ঢাকির দক্ষিণা, আলো-সহ পুজোর অন্য আয়োজনের খরচ কী ভাবে মেটানো সম্ভব!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE