Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

মণ্ডপে জল, বারণ করায় বৃদ্ধকে খুন

বাড়িতে বিশ্বকর্মা পুজো চলছিল তখন। সেই সময় পাশের বাড়ির জল পুজোমণ্ডপে এসে পড়ায় প্রতিবাদ করেছিলেন সত্তরোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। সেই ‘অপরাধে’ বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ওই বৃদ্ধকে খুন করেন প্রতিবেশীরা।

আক্রমণের পর: সুবল কর্মকার। নিজস্ব চিত্র

আক্রমণের পর: সুবল কর্মকার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মানিকচক শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২৫
Share: Save:

বাড়িতে বিশ্বকর্মা পুজো চলছিল তখন। সেই সময় পাশের বাড়ির জল পুজোমণ্ডপে এসে পড়ায় প্রতিবাদ করেছিলেন সত্তরোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। সেই ‘অপরাধে’ বাঁশ ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ওই বৃদ্ধকে খুন করেন প্রতিবেশীরা। বৃদ্ধকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর দুই ছেলেও। সোমবার রাতে মালদহের মানিকচক থানার পুরানীপুর গ্রামের ঘটনা। ঘটনায় অভিযুক্ত চার প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতদের মালদহ জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুবল কর্মকার (৭০) পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি। তাঁর কাঠের আসবাব তৈরির দোকানও রয়েছে। তাঁর তিন ছেলে-মেয়ে। দুই ছেলেকে নিয়ে সুবল কাঠের কাজ করেন। প্রতিবারই দোকানে বিশ্বকর্মা পুজো করেন তাঁরা। এবারও পুজোর আয়োজন হয়েছিল। ওইদিন সন্ধেয় যখন পুজো শুরু হয়ে তখন নব কর্মকার নামে এক প্রতিবেশী তাঁর নবনির্মিত পাঁচিলে জল দিচ্ছিলেন। আর সেই জল গড়িয়ে পুজো মণ্ডপে চলে আসে বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদ করেন বৃদ্ধ সুবল। আর তাতেই শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের মধ্যে বচসা। এক সময় আচমকা ওই বৃদ্ধের উপরে বাঁশ ও লোহার রড নিয়ে হামলা চালান নব কর্মকার ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। বৃদ্ধকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন ছেলে তপন ও রাম। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ততক্ষণে হইচই পড়ে যায় গ্রাম জুড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। আহতদের নিয়ে যান মানিকচক গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানেই মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়।

ঘটনায় রাতেই মৃতের পরিবারের লোকেরা নব কর্মকার-সহ পাঁচজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন নব কর্মকার ও তাঁর দুই ছেলে অমর, অনন্ত এবং ভাই আসরানি কর্মকার। চারজনেরই জেল হেফাজত রয়েছে। অপর এক অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এদিকে, বৃদ্ধের আচমকা এই মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন তাঁর পরিবারের লোকেরা। তপন বলেন, ‘‘পুজো চলাকালীন বাড়িতে জল গড়িয়ে আসছিল। বাবা তার প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকে পিটিয়ে খুন করা হল। আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। আমরা চাই, পুলিশ ওদের উপযুক্ত শাস্তি দিক। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) দীপক সরকার বলেন, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরে খুন। গ্রেফতার হয়েছে। বাকি অভিযুক্তের খোঁজ চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Beaten to death Viswakarma Puja 2018
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE