Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ৬০ কোটির

বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির রায়গঞ্জের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার উৎপল দাসের দাবি, বহুবার চিঠি পাঠিয়েও ওই বকেয়া বিদ্যুতের বিল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রাজ্য সরকারের প্রচুর রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। লোকসান বাড়ছে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

গৌর আচার্য
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৬
Share: Save:

গত প্রায় চার বছর ধরে উত্তর দিনাজপুরের জেলায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা-সহ ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দাদের কাছে বিদ্যুতের বিল বাবদ ৬০ কোটিরও বেশি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির রায়গঞ্জ ডিভিশনের কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই সব সংস্থা, ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের একাধিক বার চিঠি পাঠানো হলেও তাঁরা বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটাচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের বকেয়া বিল উদ্ধার করতে গত এক সপ্তাহ ধরে অভিযানে নেমেছেন তাঁরা। জেলার যে সমস্ত সরকারি দফতর বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটাচ্ছে না, কোম্পানির তরফে সেই সব দফতরের তালিকা, বকেয়ার পরিমাণ জানিয়ে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরে পাঠানো হয়েছে।

বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির রায়গঞ্জের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার উৎপল দাসের দাবি, বহুবার চিঠি পাঠিয়েও ওই বকেয়া বিদ্যুতের বিল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। রাজ্য সরকারের প্রচুর রাজস্বের ক্ষতি হচ্ছে। লোকসান বাড়ছে। জেলাজুড়ে মাইকযোগে ও লিফলেট বিলি করে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের চলতি মাসের মধ্যে বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটানোর অনুরোধ করা হচ্ছে। যে সমস্ত সরকারি দফতর বিল মেটাচ্ছে না, তাদের বিরুদ্ধে সরাসরি কোনও পদক্ষেপ করার আইন নেই। তাই সংশ্লিষ্ট দফতরের তালিকা রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের তরফে সেই সব দফতরের সচিবদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বকেয়া বিল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘‘হামলা, গোলমাল ও আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় বিল বকেয়া ফেলে রাখা বেসরকারি সংস্থা, ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি। তবে চলতি মাসের মধ্যে বিল না মেটালে তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।’’

কোম্পানির দাবি, গত চার বছর ধরে জেলার কৃষি ও সেচ দফতর প্রায় পাঁচ কোটি টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাচ্ছে না। রায়গঞ্জ পুরসভার কাছে কোম্পানির বিদ্যুতের বিল বাবদ প্রায় আড়াই কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। এ ছাড়াও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের কাছে ২৯ লক্ষ, জেলার বিভিন্ন ব্লকের পঞ্চায়েত দফতরের কাছে ৬৫ লক্ষ, জেলা পরিষদের কাছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, পূর্ত দফতরের কাছে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা, বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক ও হাইস্কুলের কাছে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা, স্বাস্থ্য দফতরের কাছে প্রায় ৬ লক্ষ টাকা, বিভিন্ন বিডিও অফিসের কাছে ৬৪ হাজার টাকা ও বিএসএফের কাছে ৭৫ হাজার টাকা বিদ্যুতের বিল বকেয়া পড়ে রয়েছে। পাশাপাশি, প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দাদের কাছে জলসেচের বিদ্যুতের বিলবাবদ ৯ কোটি টাকা, সাড়ে সাত হাজার ব্যবসায়ীর দোকানের বিদ্যুতের বিলবাবদ ৪ কোটি টাকা, ৭০০টি কারখানার ৯০ লক্ষ টাকা ও ১ লক্ষ ১৫ হাজার বাসিন্দার ঘরোয়া বিদ্যুতের বিলবাবদ ৩৯ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে বলে কোম্পানির দাবি।

জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনার দাবি, সঠিক সময়ে সরকারি বরাদ্দ না মেলার কারণে বিভিন্ন দফতরের বিদ্যুতের বিল মেটাতে সাময়িক দেরি হচ্ছে। কয়েক দিন আগে প্রশাসনিক বৈঠক করে দ্রুত বিভিন্ন দফতরের বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE