চার পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় প্রায় দেড় মাস থাকার পরে গুরুতর সংক্রমণের জেরে অসুস্থ হয়ে পড়া বাঁকুড়ার সেই ‘গুণ্ডা’ হাতিটি শেষ পর্যন্ত মারাই গেল। বুধবার সন্ধ্যায় গরুমারা জাতীয় উদ্যানের ধূপঝোরায় মারা যায় হাতিটি।
প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের পরে বন অফিসারদের অনুমান, চার পায়ের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়াই তার মৃত্যুর কারণ। বাঁকুড়া থেকে তাকে নিয়ে আসার সময়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে হাতিটি। বনমন্ত্রী বিনয় বর্মন বলেন, ‘‘হাতিটিকে বাঁচাতে চেয়েছিলাম। দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটল।’’
বন দফতরের অন্দরের খবর, হাতিটির মৃত্যুর পরে পরিবেশপ্রেমীরা হইচই করায় বনকর্তা ও বনকর্মীরাও দুটি শিবিরে ভাগ হয়ে গিয়েছেন। এক পক্ষের অভিযোগ, বক্সায় মুক্ত পুনর্বাসন কেন্দ্র পুরোপুরি তৈরি হয়নি জানা সত্ত্বেও কলকাতা থেকে এক বনকর্তা জবরদস্তি বাঁকুড়া থেকে হাতিটিকে পাঠিয়ে দেন। তাতে অফিসার-কর্মীদের একাংশ আপত্তি করলেও ওই শীর্ষ বনকর্তা নিজের মত বদলাতে রাজি হননি। তার জেরেই হাতিটি বন্দি অবস্থায় তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে ঢলে পড়ে বলে পরিবেপ্রেমীদের একাংশ যুক্তি।
বন দফতরের কর্তাদের একাংশের জেদাজেদির জেরেই হাতিটির প্রাণ গিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছে শিলিগুড়ি ও ডুয়ার্সের পরিবেশপ্রেমী সংস্থার অনেকেই। ডুয়ার্সের একটি সংস্থার তরফে দাবি তোলা হয়েছে, কেন হাতিটিকে চার পা বেঁধে বর্ষার জঙ্গলে খোলা আকাশের নীচে ফেলে রাখা হয়েছিল, তার তদন্ত হোক। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তাঁরা বক্সায় গিয়ে দেখেছিলেন, হাতিটির চার পায়ে পোকা কিলবিল করছিল। আশেপাশে জোঁকের রাজত্বের মধ্যে দিনরাত কোনও প্রাণী বাঁধা অবস্থায় থাকলে কী ভয়ঙ্কর কষ্ট পেতে পারে সেই প্রশ্নে শিউরে উঠেছেন পরিবেশপ্রেমীদের অনেকেই। বনমন্ত্রী জানান, সবই খতিয়ে দেখা হবে।
বন দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, পায়ের সংক্রমণ ছাড়াও হাতিটিকে দেড় মাসের মধ্যে অন্তত ৬ বার ঘুমপাড়ানি গুলি করে অজ্ঞান করা হয়েছে। মঙ্গলবারও বক্সা থেকে অজ্ঞান করে ট্রাকে চাপিয়ে গরুমারায় নেওয়া হয়। বুধবার বিকেল পর্যন্ত সেটি আচ্ছন্ন ছিল। ন্যাফের মুখপাত্র অনিমেষ বসু বলেন, ‘‘গোড়া থেকে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিলে এমন হত না। বর্ষার সময়টা এড়িয়ে হাতিটিকে আনলে এতবড় বিপদ হয়তো এড়ানো যেত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy