প্রতীকী ছবি।
মাজিদ আনসারির খুনের ঘটনার পর তিন মাস কাটেনি, তার মধ্যেই আর এক কলেজ ছাত্র মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন নার্সিংহোমে। দিনহাটা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ওই ছাত্রের নাম অলকনিতাই দাস। বাড়ি দিনহাটা থানার কোয়ালিদহ এলাকায়। তাঁকে বৃহস্পতিবার কলেজের সামনে লোহার রড-বাটাম দিয়ে মারধর করা হয়। এমনকি অভিযুক্তদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল বলেও অভিযোগ। প্রহৃত নিতাই একটি নার্সিংহোমে ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। ঘটনায় ৫ তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতরা হল আসিফ আলি, মণিরুল খন্দকার, দেবাশিস রায়, শশাঙ্ক দাস এবং বিল্টু কর্মকার। শুক্রবার ধৃতদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজত হয়েছে। মারধরের প্রতিবাদে যুব তৃণমূল আজ, শনিবার দিনহাটায় ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
শুক্রবার যুব তৃণমূলের মাথাভাঙা ১ ব্লক সভাপতি কামাল হোসেন ও তাঁর অনুগামীদের উপর বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে দলেরই আর এক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। জখম হন কামাল সহ বেশ কয়েকজন। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মজিরুল হোসেন বলেন, ‘‘পুলিশকে দোষীদের খুঁজে বার করুক। এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।’’
এ দিনই তৃণমূলের তরফে কোচবিহারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সুব্রত বক্সী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তারপরে পরিস্থিতি কোন দিকে যায়, তা-ই এখন দেখার।
অলক যুব তৃণমূলের কর্মী বলেই পরিচিত। আবার মারধরে অভিযুক্তদের তালিকায় নাম রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের কোচবিহার জেলা সভাপতি সাবির সাহা চৌধুরী, তৃণমূলের এক কাউন্সিলর উদয়ন গুহের ঘনিষ্ঠ জয়দীপ ঘোষের। সাবির বলেন, ‘‘এখানে রাজনীতি করার জন্যে আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’’
কেন বার বার আক্রান্ত হচ্ছেন ছাত্ররা? কলেজ নিয়েই বা লড়াই তীব্র হয়ে উঠছে কেন? ওই ঘটনার পর এই প্রশ্নেই সরগরম হয়ে উঠেছে গোটা কোচবিহার। বিরোধীরা তো বটেই, সাধারণ মানুষ থেকে শিল্পী-সাহিত্যকরাও বিরক্তি জানিয়েছেন।
বিরোধীদের অভিযোগ, কলেজের ছাত্র সংসদ নিজেদের কব্জায় রেখে সারা বছর ধরে তোলাবাজি করার একটা প্রবণতা শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে ভর্তি থেকে শুরু করে কলেজের উন্নয়নে নানা খাতে আসা টাকার নয়-ছয়ের সুযোগও নেওয়া হচ্ছে। সেই কারণেই কলেজ নিয়ে রাজ্যের সব জায়গার সঙ্গে কোচবিহারেও শাসক দলের দ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।বিজেপির কোচবিহার জেলার প্রাক্তন সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “তিন মাসের মধ্যে এক ছাত্রকে খুন করা হয়েছে এবং আর এক ছাত্রকে খুনের চেষ্টা থেকেই পরিষ্কার কলেজ দখল করার জন্য দুষ্কৃতীদের মাঠে নামানো হয়েছে।’’ এসএফআইয়ের কোচবিহার জেলা সম্পাদক শুভ্রালোক দাস বলেন, “কলেজে তোলাবাজি আর তার টাকা ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে একটা লড়াই শুরু হয়েছে।” বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “তদন্তেই সব জানা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy