কাউন্টার থেকে টিকিট বিলি করছেন প্রাক্তন টেবল টেনিস তারকা মান্তু ঘোষ। নিজস্ব চিত্র।
এই এক দল নিয়ে এল চার ফুট লম্বা পতাকা, পতপত করে তা উড়ছে দেখে উল্লাসে ফেটে পড়লেন এক দলের সমর্থকেরা।
তো অন্য পক্ষ কয়েক মিনিটের মধ্যেই আমদানি করল ছয় ফুটের একটি পতাকা। এ বার তাদের চিৎকারে কান ফেটে যাওয়ার জোগাড়।
মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল ম্যাচ নিয়ে শিলিগুড়ি এখন উত্তাল। ম্যাচ তো পরের কথা। সমর্থকেরা এখনই একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার লড়াই শুরু করে দিয়েছেন। সকাল থেকে কাউন্টারের সামনে লাল-হলুদের জবাবে সবুজ-মেরুন ছিল চোখে পড়ার মতো। কেউ ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে দু’লাইন ছড়া কাটছে তো পর মুহূর্তে পাল্টা কটাক্ষ হজমও করতে হচ্ছে। সারা দিন ধরেই চলল টিকিটের জন্য মারামারি। এ দিন এক জনকে চারটি করে টিকিট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদ, আজ বুধবার থেকে জন প্রতি ২টি টিকিটের বেশি দেওয়া হবে না। শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সচিব অরূপরতন ঘোষ বলেন, ‘‘প্রথম দিনই সাড়ে পাঁচ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। ফলে যাতে বেশি লোক টিকিট পান তাই আগামীকাল থেকে মাথা পিছু টিকিটের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’’
টিকিট কাউন্টার খোলার সময় বলা হয়েছিল বিকেল চারটে। কিন্তু টিকিট নিয়ে হাহাকারের খবর কানে যেতেই সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ কয়েকজনকে শূন্য কাউন্টারের সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেল। বেলা বাড়তে কাউন্টারের সামনে লাইনের লেজ বাড়তে বাড়তে সুইমিং পুলের সামনে চলে গিয়েছে। সাড়ে ১০টা নাগাদ সমর্থকের সংখ্যা কয়েকশো ছাড়িয়েছে। বেলা যত এগিয়েছে ততই ভিড় বেড়েছে। রাস্তার উপরে নেমে এসেছে লম্বা লাইন। ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃপক্ষকে সকাল ১১টার মধ্যে পুলিশের বন্দোবস্ত করাতে হয়েছে। পুলিশি পাহাড়ায় টিকিট প্রার্থীরা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও, আবেগকে আটকানোর কোনও উপায় জানা ছিল না কারওই।
মিলনপল্লির পরিতোষ সাহা, প্রবীর পাইন, স্বপন রাউত ইস্টবেঙ্গল সমর্থক, তাঁরা বলেন, ‘‘সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়েছি। টিকিট পাব কি না, জানি না। না পেলে বুধবার ফের লাইনে দাঁড়াব।’’ প্রধাননগরের শুভম সরকার, দেশবন্ধুপাড়ার প্রিয় দাস, জয় দেবরা মোহনবাগানের জয় দেখতে চান। শুভমের বক্তব্য, ‘‘টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়েছি দুপুরের পর। টিকিট পেয়ে যাব বলে মনে হচ্ছে। না পেলে বুধবার ফের ভোরবেলা থেকে টিকিটের জন্য দাঁড়াব।’’ প্রিয় তিনটি টিকিট নিয়েছেন, তিন বন্ধুতে দেখবেন। সবুজ মেরুনরা জিতছেনই, আত্মবিশ্বাসী তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy