Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পুড়ে যাওয়া মন্দিরে ফরেন্সিক দল

কী ভাবে পুড়ে গেল ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা দেবী চৌধুরাণীর মন্দির তা নিয়ে দিনভরই জল্পনা চলেছে শিকারপুরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে পুরোহিত কমল রায় পুজো সেরে চলে যান৷

 ধ্বংসাবশেষ। নিজস্ব চিত্র

ধ্বংসাবশেষ। নিজস্ব চিত্র

পার্থ চক্রবর্তী
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩৯
Share: Save:

প্রায় আড়াইশো বছরের ইতিহাসের সাক্ষী দেবী চৌধুরাণী মন্দিরে আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে শুরু হল তদন্ত। শনিবার আগুনে ভস্মীভূত ওই মন্দির থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা৷ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব ও এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী নতুন করে মন্দির তৈরি করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেন।

শুক্রবার রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ বিধ্বংসী আগুন লাগে শিকারপুরের দেবী চৌধুরাণী মন্দিরে৷ আগুন নেভাতে ছুটে যান এলাকার বাসিন্দারা। জলপাইগুড়ি থেকে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন পৌঁছনোর আগেই পুড়ে ছাই হয়ে যায় কাঠের মন্দিরটি৷ খবর পেয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা৷

কী ভাবে পুড়ে গেল ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা দেবী চৌধুরাণীর মন্দির তা নিয়ে দিনভরই জল্পনা চলেছে শিকারপুরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে পুরোহিত কমল রায় পুজো সেরে চলে যান৷ বিকাল পাঁচটা নাগাদ ধূপকাঠি জ্বালিয়ে মন্দির বন্ধ করে দেন মালি৷ আগুন যেহেতু তারও কয়েক ঘণ্টা পরে লেগেছে তাই ধূপকাঠি থেকে তা লাগার কথা নয় বলেই মনে করছেন প্রশাসনের একাংশ৷

এক সময় সৌরবিদ্যুতের সাহায্যে মন্দিরে আলো জ্বালানো হত। প্রায় দশ বছর ধরে তা খারাপ হয়ে রয়েছে৷ এই অবস্থায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় রাস্তা থেকে হুকিং করে মন্দিরের ভিতরে ও মন্দিরের বারান্দায় দু’টি বাল্ব জ্বালানো হতো৷ মালি ভোলা ওঁরাওয়ের কথায়, ‘‘শুক্রবারও তা জ্বলছিল৷’’ তাই শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ দিন সকাল এগারোটা নাগাদ জলপাইগুড়ি থেকে ঘটনাস্থলে যান ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা৷ তাঁরা পোড়া জায়গা থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন৷ ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ দীপক রায় জানান, ওই নমুনাগুলি পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠানো হবে৷ জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে এলেই আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে৷’’

ছিয়াত্তরের মন্বন্তরের সময় এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা হয় বলে অনুমান করা হয়। কথিত আছে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের রসদ সংগ্রহের জন্য দেবী চৌধুরাণী ও ভবানী পাঠক ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে শিকারপুরের চেমটাখাড়ির পাশে একটি মন্দিরে পুজো দিতেন। তাঁদের মৃত্যুর পর রাজা দর্পদেব রায়কত এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE