Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টাকা নেই তাই রেডার নয়, হাতির মৃত্যু ঠেকাতে বসবে ক্যামেরা

বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে অর্থ৷ এই অবস্থায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু ঠেকাতে আপাতত রেডারের বদলে রেল ও বন দফতরের কর্তাদের হাতিয়ার হতে চলেছে ট্র্যাপ ক্যামেরা৷ আগামী ডিসেম্বর মাস থেকেই জঙ্গলের ভিতরে রেলপথের আশপাশে এ ধরনের ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হবে৷

দেখা: মঙ্গলবার লাটাগুড়িতে নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পে ঢোকার মুখে পথ আটকে দাঁড়িয়ে দাঁতাল। নিজস্ব চিত্র

দেখা: মঙ্গলবার লাটাগুড়িতে নেওড়া জঙ্গল ক্যাম্পে ঢোকার মুখে পথ আটকে দাঁড়িয়ে দাঁতাল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৮ ০২:২৮
Share: Save:

বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে অর্থ৷ এই অবস্থায় ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু ঠেকাতে আপাতত রেডারের বদলে রেল ও বন দফতরের কর্তাদের হাতিয়ার হতে চলেছে ট্র্যাপ ক্যামেরা৷ আগামী ডিসেম্বর মাস থেকেই জঙ্গলের ভিতরে রেলপথের আশপাশে এ ধরনের ক্যামেরা লাগানোর কাজ শুরু হবে৷ তবে অদূর ভবিষ্যতে তাদের লক্ষ্য যে সেই রেডার, সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন রেল কর্তারা৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আলিপুরদুয়ারে রেল ও বন দফতরের কর্তাদের বৈঠক থেকে এমনই পরিকল্পনার ইঙ্গিত পাআয়া গেল৷

এক সময় আলিপুরদুয়ার জংশন ও শিলিগুড়ির মধ্যে রেলের মিটার গেজ লাইন ছিল৷ কিন্তু ২০০৪ সালে এই দুই জায়গার মধ্যে ব্রড গেজ লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়৷ ট্রেনের সঙ্গে বন্যপ্রাণীদের সংঘাতেরও শুরুটা হয় তখন থেকেই৷ সূত্রের খবর, ওই সময় থেকে এখনও পর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কায় প্রায় ৬০টি হাতির মৃত্যু হয়েছে৷ ট্রেনের সঙ্গে বন্যপ্রাণীদের সংঘাত ঠেকাতে কয়েক বছর আগে রেল ও বন দফতরের কর্তাদের নিয়ে যৌথ কমিটি গঠন করা হয়৷ ওই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ইতিমধ্যে দুই জায়গায় রেল লাইনের ধারে ‘হানি বি’ মেশিন বসানো, কোথাও রেল লাইনের ধারে লোহার বেড়া লাগানো কিংবা বন ও রেল কর্তাদের নিয়ে হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ-সহ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি, গত জুন মাসের বৈঠকে এমন একটি প্রযুক্তির কথা ভাবা হয়, যাতে করে রেল লাইনের ধারে হাতি গেলেই চালকের কাছে তখনই সেই খবর পৌঁছে যায়৷

সূত্রের খবর, এর পরই রেডারের বিষয়টি মাথায় আসে রেল ও বন দফতরের কর্তাদের মাথায়৷ রাজাভাতখাওয়ায় পরীক্ষামূলকভাবে একটি রেডার লাগানোও হয়৷ দিল্লির একটি সংস্থা সেখানে তা বসায়৷ যে রেডার থেকে থেকে পাঁচ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে জঙ্গলে সমস্ত ধরনের বন্যপ্রাণীর গতিবিধিও ধরা পড়ে তাতে৷ ট্রেনের সঙ্গে বন্যপ্রাণ সংঘাত রুখতে এই প্রযুক্তই যে সময়পোযোগী, তা মেনে নেন রেল ও বন দফতরের শীর্ষ কর্তারাও৷ তারপরও কেন রেডারের সাহায্য নেওয়া হবে না?

এ দিনের বৈঠকে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ারের ডিআরএম চন্দ্রবীর রমণ, অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) সন্দীপ সুন্দরিয়াল-সহ রেল ও বন দফতরের কর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷ বৈঠক শেষে ডিআরএম বলেন, ‘‘দিল্লির সংস্থাটির রেডার এবং সেটা চালাতে জরুরি অন্যান্য যন্ত্রপাতি মিলিয়ে খরচ প্রায় এক কোটি টাকা পড়বে বলে জানিয়েছে৷ যা একবারে ব্যয় করা কার্যত অসম্ভব৷ সে জন্যই ধাপে ধাপে সেই অর্থ খরচ করা হবে, না কি অন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে ব্যাপারে আলোচনা চলছে৷

অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) বলেন, ‘‘প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমেই ট্রেনের সঙ্গে বন্যপ্রাণের সংঘাত এড়ানো সম্ভব৷ সে জন্য আরও কী কী প্রযুক্তির ব্যবহার করা যায় তা নিয়েও আমাদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা চলে৷’’

রেল ও বন দফতর সূত্রের খবর, আপাতত জঙ্গলের ভিতরে রেলপথের আশপাশে বেশ কিছু ট্রাপ ক্যামেরা লাগানো হবে৷ যা দিয়ে হাতি-সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীদের গতিবিধি নজরে রাখা হবে৷ রেল লাইনের ধারে কোনও বন্যপ্রাণের দেখা মিললেই, মনিটরিং-এর দায়িত্বে থাকা কর্মীরা রেলের কন্ট্রোল রুমে খবর দেবেন৷ যেখান থেকে দ্রুত ট্রেন চালকদের সতর্ক করা হবে৷ রেল সূত্রের খবর, আগামী ডিসেম্বর মাসেই এই ক্যামেরাগুলি বসানোর কাজ শুরু হয়ে যাবে৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Forest Department Alipurduar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE