কার্তিক গুহরায়, শিলিগুড়ির নার্সিংহোমে। নিজস্ব চিত্র
মধ্য রাতে রায়ডাক নদীর ধারের জঙ্গলে টহল দিচ্ছিলেন তাঁরা। ছ’জন বনকর্মীর সেই দলেই ছিলেন কার্তিক গুহরায় নামে এক কর্মীও। বন দফতর সূত্রে খবর, রাতের অন্ধকারে এক দল দুষ্কৃতী তাঁদের আক্রমণ করে। তখন আর এক বনকর্মীর ছোড়া গুলিতে জখম হন কার্তিক। পরে বন দফতর সূত্রে জানানো হয়, প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে, এটা নিছকই দুর্ঘটনা।
বন দফতরের দাবি, রাতের অন্ধকারে বক্সার রায়ডাক রেঞ্জে কাঠ মাফিয়ারা সক্রিয় হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার রাত একটা নাগাদ এই ঘটনায় সেটাই আবার প্রমাণ হয়ে গেল। টহলদারি দলে থাকা এক বনকর্মী বলেন, “আমরা যখন অন্ধকারে দুষ্কৃতীদের কাছাকাছি পৌঁছই, তখন গাছ কাটা শুরু করে দিয়েছিল তারা৷ বিপদ বুঝে আমাদের আক্রমণ করে৷ একটা গুলির শব্দও যেন শুনতে পেয়েছিলাম। তখনই আমাদের দিক থেকে গুলি ছোড়া হয়৷ কিন্তু অন্ধকারের মধ্যে কার্তিকবাবু ততক্ষণে দলছুট হয়ে পড়েছিলেন৷ খানিক্ষণ পর দেখা যায় গুলি তার ডান পায়ে লেগেছে৷”
রায়ডাক বিটের কর্মী কার্তিকের বাড়ি কুমারগ্রামের হাতিপোতার কাছে জয়ন্তী এলাকায়৷ বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পর ভোর রাতে কার্তিকবাবুকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়৷ সেখান থেকে কিছুক্ষণ পর তাঁকে শিলিগুড়িতে রেফার করা হয়৷ বর্তমানে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসা চলছে৷ বন দফতর সূত্রের খবর, জখম বনকর্মীর চিকিৎসা যাতে ভালভাবে হয়, সে দিকে নজর রাখতে এর মধ্যেই উত্তরবঙ্গের বনকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ৷ তিনি বলেন, “জঙ্গল রক্ষায় আমাদের কর্মীরা যে কতটা সতর্ক, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। তবে জঙ্গলে পাচারকারীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে আরও কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে বন আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলব৷”
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর শুভঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, “অন্ধকারে পুরো ঘটনাটা ঘটেছে। আমাদের টহলদারি বাহিনী যখন গুলি ছোড়ে, ততক্ষণে দুষ্কৃতীদের ধরতে এক বন কর্মী তাদের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন৷ অন্ধকারে তাঁর শরীরে গুলি লাগে৷” বন দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, কী পরিস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটল, তা বিস্তারিতভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy