Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জৈব জ্বালানিতে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন

‘পিপিপি’ মডেলে কারখানা গড়ার প্রস্তাব জানিয়ে শিশির আবেদন করেছেন কোচবিহার জেলা প্রশাসনের কাছে। তাঁর প্রস্তাবে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন জেলাশাসক।

শিশির দাস।

শিশির দাস।

নমিতেশ ঘোষ
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮ ০৪:২৯
Share: Save:

নন্দীগ্রাম কাণ্ডের সময়ে সরকারের নীতি মেনে নিতে পারেননি তিনি। ঊর্ধ্বতন অফিসারদের সঙ্গে বিরোধ বাধে। ইস্তফা দেন চাকরি থেকে। তার পরে থেমে থাকেননি। স্কুল গড়েছেন। ইতিমধ্যেই নিজের উদ্যোগে সংস্থা তৈরি করে তিন জেলায় স্থাপন করেছেন কৃষিজাত পণ্য থেকে জ্বালানি তৈরির কারখানা। প্রাক্তন এই পুলিশ আধিকারিক মালদহের বাসিন্দা শিশির দাস এ বার সে রকমই আরও একটি কারখানা তৈরি করছেন কোচবিহারে।

‘পিপিপি’ মডেলে কারখানা গড়ার প্রস্তাব জানিয়ে শিশির আবেদন করেছেন কোচবিহার জেলা প্রশাসনের কাছে। তাঁর প্রস্তাবে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন জেলাশাসক।

শিশির জানান, ধানের তুষ, আখের ছোবড়া, ভুট্টার অপ্রয়োজনীয় অংশ সহ নানা ধরনের কৃষিজ বর্জ্য থেকে জ্বালানি তৈরি হয় তাঁর কারখানায়। ওই জ্বালানি ডিজেল, পেট্রোল ও গ্যাসের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। ওই জ্বালানির জন্য রয়েছে বিশেষ ধরনের স্টোভ। সেটিও তৈরি করেন তাঁরা। ২০০৯ সালে হলদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে আরও দু’জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে যৌথ ভাবে টাকা লগ্নি করে শিশির এই উদ্যোগ শুরু করেন। এখন তাঁদের অধীনে অন্তত ২০০ জন কর্মী রয়েছেন। কোচবিহারেও অন্তত পাঁচ-ছ’শো জনের কর্ম সংস্থান করতে পারবেন বলে মনে করছেন শিশির।

মাথাভাঙার গুমানিরহাট কৃষি বাজার এবং মেখলিগঞ্জের নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির একটি জায়গা তাঁকে ব্যবহার করতে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। মেখলিগঞ্জ থেকে চ্যাংরাবান্ধার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ সম্ভব। অন্য দিকে গুমানিরহাট থেকে অসম সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিতেও উৎপাদিত দ্রব্য পাঠানো যাবে।

শিশিরের কথায়, “কোচবিহারে কৃষিজ পণ্য প্রচুর রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র রয়েছে। এখানে সুযোগ প্রচুর। সে জন্যেই এই জেলায় কারখানা করছি। কর্মসংস্থানের সুযোগ যেমন বাড়বে, তেমনই কৃষকেরাও লাভবান হবেন।” তিনি জানান, চাষিদের কাছ থেকে ফসল এবং কৃষিজ পণ্যের অপ্রয়োজনীয় অংশ কিনে নেবেন তাঁরা। ফসল ভারতের নানা জায়গায় পাঠানোর পাশাপাশি রফতানি করার কাজও করবেন। সেই সঙ্গে কোচবিহারে এ বার কৃষিজাত পণ্যের ‘প্রসেসিং কারখানা’ও শুরু করতে চান তাঁরা।

বাঁকুড়া, মেদিনীপুর ও মালদহে স্টোভ এবং জ্বালানি তৈরির কারখানা তাঁরা করেছেন। শিশির জানান, সেখানকার অনেক স্কুলই মিড-ডে মিল রান্নার জন্য তাঁদের কাছ থেকে এই গ্যাস কিনছে। তাঁর দাবি, পুরোপুরি ধোঁয়াহীন এবং দূষণমুক্ত এই স্টোভে বাজারে চলতি অন্য গ্যাসের তুলনায় ছাত্র পিছু খরচ প্রায় অর্ধেক পড়ে। গ্যাস শেষ হলে তাঁরাই ফের তা পৌঁছে দেন। জেলাশাসক বলেন, “এই প্রকল্পে জেলায় দু’টি কারখানা তৈরি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কৃষিজাত পণ্যের চাহিদাও বাড়বে। সব মিলিয়ে যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE