Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

তরজার ফাঁসে আটকে কাজ

বৈষ্ণবনগর সংলগ্ন ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে গাজলের ময়না পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফোর লেনের কাজ এত বছরেও কেন শেষ হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আদালতেও।

শেষ কবে: ১১ বছরেও অসম্পূর্ণ ফোর লেন। মালদহে। নিজস্ব চিত্র

শেষ কবে: ১১ বছরেও অসম্পূর্ণ ফোর লেন। মালদহে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
মালদহ শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৯ ০৫:২৪
Share: Save:

কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৮ সালে। তার ১১ বছর পরেও মালদহ জেলায় শেষ হয়নি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ফোর লেন তৈরির কাজ। জেলা প্রশাসনের দাবি, সড়ক সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে ২০১৪ সালের মধ্যেই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। জবরদখলও তুলে দেওয়া হয় ২০১৭ সালের মধ্যে। তা সত্ত্বেও সুজাপুর, ইংরেজবাজার বাইপাস সহ বেশ কিছু এলাকায় ফোরলেন তৈরি থমকে আছে, তার উপরে টোলও আদায় করা হচ্ছে—এই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, জেলায় জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যা নেই। আর্থিক অপ্রতুলতা ও বর্ষার কারণে কিছু জায়গায় কাজ থমকে রয়েছে।

বৈষ্ণবনগর সংলগ্ন ফরাক্কা ব্যারাজ থেকে গাজলের ময়না পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। ফোর লেনের কাজ এত বছরেও কেন শেষ হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আদালতেও। হাইকোর্ট জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত সাড়তে নির্দেশ দিয়েছে। মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকরা সম্প্রসারণের কাজে সহযোগিতা করছেন কিনা তা নিয়েও রিপোর্ট চেয়েছেন উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়েছে প্রশাসনিক মহলে।

তবে জেলা বিশেষ ভূমি অধিগ্রহণ দফতরের পরিসংখ্যানে জানা গিয়েছে, সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ করে তা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর। পাশাপাশি, কালিয়াচক, সুজাপুর ও বাঁধাপুকুরে সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে যা জবরদখল ছিল তাও তুলে দেওয়া হয়েছে ২০১৭ সালের মধ্যে। জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর আধিকারিক পালদেন শেরপা বলেন, ‘‘সম্প্রসারণের জন্য জমি সংক্রান্ত কোনও সমস্যা মালদহ জেলায় নেই। জবরদখলও নেই।’’

শুক্রবার গিয়ে দেখা গেল সুজাপুর হাসপাতাল মোড় থেকে ডাঙা, জালালপুর, নওদা যদুপুর, দারিয়াপুর হয়ে কালিয়াচক ১ বিডিও অফিস পর্যন্ত জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ পুরোপুরি থমকে। মাটি ও পাথর ফেলার কাজ হলেও পিচের প্রলেপ কোথাও পড়েনি। প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকায় এখনও পুরনো দু’লেনের সড়কেই যান চলাচল করছে। সেই সড়কও এই বর্ষায় খানাখন্দে ভরে গিয়েছে। এইটুকু এলাকায় দু’লেনের জাতীয় সড়কে যানজট নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। সুজাপুরের বাসিন্দা রহমত শেখ, জুলফিকার আলি, ইমতিয়াজ শেখরা বলেন, ‘‘প্রায় ছ’মাস ধরে সড়ক সম্প্রসারণের কোনও কাজই হচ্ছে না।’’ এ দিকে ইংরেজবাজারের বাঁধাপুকুর থেকে পুরাতন মালদহের নলডুবি পর্যন্ত যে বাইপাস তৈরি হয়েছে সেখানে একটি লেন তৈরির কাজ ভাল ভাবে শেষ হলেও বাকি লেনের কাজ একাধিক জায়গায় বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে।’’

কবে শেষ হবে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ? ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের মালদহ-রায়গঞ্জ বিভাগের প্রকল্প অধিকর্তা দীনেশ হংসারিয়া বলেন, ‘‘জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণে মালদহে জমি সংক্রান্ত বা জবরদখল নিয়ে সমস্যা এখন নেই। আর্থিক জোগান ঠিক মতো না থাকায় কাজ মাঝেমাঝেই থমকে গিয়েছে। এখন বর্ষাকাল বলে কাজ সাময়িক বন্ধ রয়েছে। বর্ষা মিটলেই ফের জোরকদমে বাকি কাজ শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NH34 Calcutta High Court Malda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE