মালদহের বিউটি খাতুন প্রতিবাদ করেছিল। কিন্তু ততক্ষণে প্রতিবেশীর ঘরে নাবালিকা মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। জলপাইগুড়ির সোনালী কিন্তু রুখে দিতে পারল পাশের পাড়ার পনেরো বছরের কিশোরীর বিয়ে। বিউটি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। সোনালী দশম শ্রেণির।
তৃতীয় শ্রেণিতে পড়তেই স্কুল ছেড়েছে জলপাইগুড়ির মণ্ডলঘাটের ঝাকুয়াপাড়ার বাসিন্দা বছর পনেরোর ওই কিশোরী। দিনমজুর বাবার তিন মেয়ের মধ্যে বড় সে। পাড়ার এক যুবকের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক তৈরি হওয়ায় আর দেরি করতে চাননি বাবা। বৃহস্পতিবার সন্ধে লগ্নেই বিয়ে ঠিক করেছিলেন নাবালিকা কন্যার।
এই বিয়ের কথা পাশের দেউনিয়া পাড়ার মেয়ে বাসুদেব গার্লস স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী সোনালী রায়ের কানে আসে বুধবার। বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে গিয়েই সে বিষয়টি জানায় তার সহপাঠীদের। তার পর তারা দল বেঁধে যায় প্রধান শিক্ষিকা সুদেষ্ণা আচার্য মিশ্রের কাছে।
সুদেষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘আমরাই ওদের শেখাই কোথাও যেন মেয়েদের আঠেরো বছরের আগে বিয়ে দেওয়া না হয় সে ব্যাপারে সচেতন হতে। আজ যখন ওরা এসে বিষয়টি জানাল, তখন আর সরে থাকতে পারিনি।’’ সুদেষ্ণাদেবীই পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের বিষয়টি জানান।
ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা যখন দুপুর ১২টা নাগাদ ওই নাবালিকার বাড়িতে পৌঁছান, ততক্ষণে সেখানে বিয়ের অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে পুরোদমে। শুরু হয়েছে নিমন্ত্রিতদের আনাগোনাও। প্রথমে বিয়ে বন্ধে রাজি হননি নাবালিকার পরিবার৷ তারপর প্রশাসন ও পুলিশের কর্তারা কিশোরী ও তার বাবা-মাকে বোঝান৷ পাত্রের বাড়িতে গিয়েও তার বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলেন৷ তার পরই বিয়ে বন্ধে রাজি হয় দু’পক্ষ৷ লিখিত ভাবে প্রশাসনের কর্তাদের জানিয়েও দেন তাঁরা৷ দুই বাড়ির প্যান্ডেল খোলা হয়৷
নাবালিকা বলে, ‘‘আঠারো বছরের নীচে বিয়ে করলে কী হয়, তা জানতাম না৷ বাড়ির সবাই বলেছিল বলেই বিয়েতে রাজি হই৷’’ জলপাইগুড়ি সদরের ব্লক কল্যাণ আধিকারিক কুণাল সর্বাধ্যক্ষ বলেন, ‘‘ওই কিশোরী চাইলে আমরা তার পড়াশোনার ব্যবস্থা করব৷’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy