Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

এত বোমা কোথা থেকে আসছে

অভিযোগ, দু’-তিন বছর আগেও কোচবিহারে রাজনৈতিক সংঘর্ষে লাঠি ব্যবহার হত। কোথাও কোথাও ধারাল অস্ত্রের অভিযোগ উঠত।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নমিতেশ ঘোষ 
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০১৯ ০৫:১০
Share: Save:

বোমার ভয়ে সন্ত্রস্ত কোচবিহার। রাত হলেই বোমা পড়ছে। কখনও ফাঁকা রাস্তায় বোমা ছোড়া হচ্ছে। কখনও কারও বাড়ি লক্ষ করে চলছে বোমাবাজি। কোচবিহারে রাজনৈতিক সংঘর্ষে গত এক সপ্তাহে একশোটির বেশি বোমা পড়েছে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে তৃণমূল ও বিজেপি। এই বোমা কোথা থেকে আসছে, কারা বোমা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের গ্রেফতারে পুলিশ কেন সক্রিয় হচ্ছে না— এই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিক গ্রেফতার হয়েছে। বোমাও উদ্ধার করা হয়েছে। কোচবিহার জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “দুষ্কৃতীদের ধরতে সবরকম চেষ্টা চলছে। কোনও অভিযোগ পেলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

অভিযোগ, দু’-তিন বছর আগেও কোচবিহারে রাজনৈতিক সংঘর্ষে লাঠি ব্যবহার হত। কোথাও কোথাও ধারাল অস্ত্রের অভিযোগ উঠত। বোমা ও গুলির ঘটনা ছিল হাতে গোনা। এ বারে লোকসভা ভোটের পরে এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তেতে উঠেছে কোচবিহার।

গত এক সপ্তাহের মধ্যে চান্দামারি, দেউরহাট, পানিশালা, দেওয়ানহাটে দুই পক্ষের মধ্যে একাধিক সংঘর্ষ হয়েছে। দেদারে বোমাও পড়েছে। চান্দামারিতে বোমাবাজির সময় আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়ে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র। সে এখনও মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দেওয়ানহাটে বিজেপি নেতা শুভাশিস চৌধুরীর বাড়ির সামনে থেকে একটি বোমা উদ্ধার হয়। বোমা উদ্ধার হয়েছে কলাকাটা এবং জিরাণপুরেও। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়েও এমনই বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। গোষ্ঠী সংঘর্ষের সময়ে বোমার আঘাতে তৃণমূলের দুই কর্মীর হাত উড়ে যাওয়ার ঘটনাও সামনে আসে।

পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, এই বোমা তৈরি হচ্ছে জেলাতেই। সুতলি, লোহার কিছু মালমশলা দিয়ে ওই বোমা তৈরি করা হচ্ছে। স্থানীয় কিছু দুষ্কৃতী ওই বোমা তৈরি করে রাজনৈতিক দলের কর্মীদের কাছে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ। ওই বোমা খুব বেশি শক্তিশালী না হলেও খুব কাছাকাছি পড়লে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। জখম তো বটেই, এমনকি মৃত্যুরও আশঙ্কা রয়েছে। ওই বোমার দামও খুব বেশি নয়। পাঁচশো থেকে হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে এগুলি, যা স্থানীয় ভাবে ‘হাতবোমা’ নামে পরিচিত। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বোমা তৈরির পিছনে কারা রয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।

বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “বোমা বা আগ্নেয়াস্ত্র তৃণমূলের হাতেই আছে। তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের পুলিশের গ্রেফতার করা উচিত।” পাল্টা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিজেপি’র দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করছে। মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে। আমাদের কর্মীদের ঘরছাড়া করেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Violence Bomb Police TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE